হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে করণীয়

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃছোট থেকে বড় সবাই যে রোগটির সমস্যায় ভুগছেন তা হলো হাড়ক্ষয় রোগ। হাড়ের এই রোগটি ‘নীরব ঘাতক’ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার তিন শতাংশই অস্টিওপোরেসিস বা হাড়ক্ষয় রোগে আক্রান্ত। আপনি কি জানেন এ রোগটি অবহেলার কারণে চোখের পলকেই আপনাকে মেনে নিতে হবে পঙ্গুত্ব?

চিকিৎসাশাস্ত্রে হাড়ক্ষয় রোগটি বলতে বোঝায় হাড়ের পুরুত্ব কমে গিয়ে হাড়ের ভেতর বড় ছিদ্র তৈরি হওয়াকে। অর্থাৎ, মাতৃগর্ভ থেকে আমরা যে হাড় নিয়ে জন্মগ্রহণ করি, তা নির্দিষ্ট সময় পর পাতলা, ছিদ্রযুক্ত বা দুর্বল হয়ে পড়লে সেই অবস্থাকে বলা হয় হাড়ক্ষয় রোগ বা অস্টিওপোরেসিস।
 
মানব শরীরে মেরুদণ্ডের হাড়ে বেশি ক্ষয়রোগ দেখা দেয়, যা থেকে কোমর আর পায়ের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। জয়েন্টে পেইন, কাঁধে পেইনও অস্টিওপোরেসিস রোগের লক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত।
 
পঙ্গু হাসপাতালের অধ্যাপক, নিট্রো, ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম সময় সংবাদকে জানান, তারুণ্য ধরে রাখতে আমাদের শরীরে কাজ করে ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন এবং টেস্টোস্টেরনের মতো প্রয়োজনীয় হরমোনগুলো।
 
এসব হরমোনই আবার সুরক্ষা সেতু তৈরি করে অস্টিওপোরেসিস রোগটির বিরুদ্ধে। কারণ, হাড়ের ঘনত্ব ঠিক রাখার পাশাপাশি এসব হরমোন ক্যালসিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এ রোগকে জয় করতে এসব হরমোন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ওপর জোর দিতে হবে।
 
এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে ডায়েট লিস্টে নিয়মিত কলা, সাধারণ আলু, মিষ্টি আলু, কুমড়াকে বেশি প্রাধান্য দিন। শীতকালে প্রাধান্য দিতে পারেন শিম, গাজর ও মটরশুঁটির মতো খাবারগুলো।
 
এ ছাড়া শস্যজাতীয় খাবার, মৌসুমি ফল, শাকসবজি, বিভিন্ন ধরনের ডাল, ড্রাগন বা কমলার মতো ফল ডায়েটে যোগ করুন। সুষম খাবারের পাশাপাশি প্রাধান্য দিতে পারেন নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাসকেও।
 
ভিটামিন, প্রেটিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার প্রাধান্য দেয়ার পাশাপাশি এড়িয়ে চলতে হবে কিছু খাবারকে। কফি, লবণ, বেশি পরিমাণে তেল মসলা সমৃদ্ধ খাবার ডায়েট লিস্ট থেকে পুরোপুরি বাদ দিন।
 
এ ডায়েট লিস্ট মেনে চলার পাশাপাশি প্রতিদিন সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ‘ডি’ পেতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সূর্যের আলোয় রোদ পোহানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত মাত্র ২০ মিনিট এই অভ্যাসটি লাইফস্টাইলের অংশ করে নিলে সহজেই এ রোগকে প্রতিহত করা যায়, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Translate »