নখের ফাঙ্গাস দূর করার ঘরোয়া উপায়

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ নখ শরীরের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের হাত ও পায়ের সৌন্দর্য আসে সুন্দর নখ থেকে। হাতে সুন্দর নখ আপনার ব্যক্তিত্ব বাড়িয়ে দেয়। তাই নখের যত্ন নেয়া খুব দরকার। কারণ ধুলাবালি, কাদা ঢুকে নখে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে সহজেই। আর এই ব্যাকটেরিয়ায় নখে ফাঙ্গাস হয়ে যায়। এর ফলে নখে হলদে ভাব হয়, নখ ভেঙে যায়। আবার গরমে পায়ে ঘাম জমে অনেক সময়ে নখে ফাঙ্গাস ইনফেকশন হয়। ফলে পা থেকে সহজেই দুর্গন্ধ বেরোনোর প্রবণতা থাকে।

আবার ফাঙ্গাসের প্রভাবে নখের কোণায় তৈরি হয় পুঁজ, ফুলে ওঠে, সেইসঙ্গে যন্ত্রণা। নখের রং হলদেটে হয়ে বিশ্রী দেখতে লাগে।

ডাক্তারের পরামর্শ নিলে ও ওষুধ খেলে ফাঙ্গাস দূর হয়। কিন্তু কম সংক্রমত হলে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে ঘরোয়া কিছু উপাদান দিয়ে সহজে এই ফাঙ্গাস থেকে বাঁচা যায়।

হলুদ

এটি অ্যান্টিসেপটিক উপাদান হিসেবে পরিচিত। এটি রোগের প্রতিকারে এবং রোগটি আবার হওয়া প্রতিরোধে কাজ করে। পানির মধ্যে এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া নিন। এটি আক্রান্ত স্থানে দিন। তিন থেকে চার ঘণ্টা এভাবে রাখুন। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

রসুন

এটি অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান হিসেবে পরিচিত। এটি পায়ের নখের ফাঙ্গাস প্রতিকারে উপকারী। রসুনের কিছু টুকরো থেঁতলে নিন। হালকা গরম পানির মধ্যে এটি দিন। আক্রান্ত স্থানকে এর মধ্যে ভেজান। যত দিন পর্যন্ত সমস্যা শেষ না হচ্ছে তত দিন পর্যন্ত এই পদ্ধতি ব্যবহার করুন।

পেঁয়াজ

পেঁয়াজের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদানের কারণে এটি ফাঙ্গাসের সংক্রমণকে ধ্বংস করে। পেঁয়াজের টুকরোকে সামান্য স্লাইস করে নিন। একে পাঁচ মিনিট আক্রান্ত নখের মধ্যে ঘষুন। একে ২০ মিনিট রাখুন এবং ধুয়ে ফেলুন।

চিনি ও লেবুর রসের স্ক্রাব

পায়ের নখ কালচে দাগ দূর করতে স্ক্রাবিং খুবই জরুরি। এটি মরা কোষ দূর করে পা নরম ও মসৃণ করে। হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ পা ভিজিয়ে রাখুন। এবার লেবু কেটে এর ওপর চিনি ছড়িয়ে পাঁচ মিনিট পায়ে ঘষুন। পানি দিয়ে পা ধুয়ে ফেলুন। এর পর ভালো করে পা শুকিয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডার প্রকৃতি হলো অ্যালকেলাইন। এটি ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি কমাতে চমৎকার ঘরোয়া উপাদান। বেকিং সোডা ও পানির পেস্ট তৈরি করুন। ২০ মিনিট এটি পায়ে দিয়ে রাখুন।

অ্যাপল সিডার ভিনেগার

অ্যাপল সিডার ভিনেগারের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এটি ফাঙ্গাসের কারণে হওয়া সংক্রমণকে কমাতে কাজ করে। অ্যাপল সিডার ভিনেগার ও পানির মিশ্রণে আক্রান্ত নখটি প্রতিদিন আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন।

ভিক্স

সর্দি, মাথাব্যথায় ভীষণ ব্যবহৃত এই মলমটি সহজে ফাঙ্গাস তাড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায়। দিনে ২ বার আক্রান্ত নখে ভিক্স লাগান। এরপর সেই নখে গজ দিয়ে একটি ব্যান্ডেজ করে রাখতে পারেন।

টি ট্রি অয়েল

টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করতে পারেন নখে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে। এর মধ্যে অ্যান্টি ফাংগাল ও অ্যান্টি সেপটিক উপাদান থাকে। সরাসরি একটি তুলো টি-ট্রি অয়েলে ভিজিয়ে নখে লাগিয়ে নিন।

অরিগ্যানো অয়েল

অরিগ্যানো অয়েলের মধ্যে থাইমল থাকে যার মধ্যে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান থাকে। একই পদ্ধতিতে তুলো ব্যবহার করে নখে লাহান এই তেল। তবে এর থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। তাই ব্যবহার করার আগে দেখে নিন।

মাউথ ওয়াশ

মাউথ ওয়াশে মেন্থল, থাইমল ও ইউক্যালিপ্টাসের মতো উপাদান থাকে যাতে আছে ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গাস-রোধী উপাদান। একটা বাটিতে মাউথ ওয়াশ নিয়ে তাতে আক্রান্ত আঙ্গুল ডুবিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পরে পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন।

অলিভ পাতার নির্যাস

এই পাতা অ্যান্টিফাংগাল উপাদানে সমৃদ্ধ। এছাড়া এই পাতার মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে পারে। এই পাতার নির্যাস ফাংগাল ইনফেকশন হওয়া নখে লাগালে উপকার পাবেন।

নখের ফাঙ্গাস থেকে বাঁচার জন্য সবসময় হাত ও পায়ের নখ পরিষ্কার করতে হবে। বাইরে থেকে আসা মাত্রই হাত-পা ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত নখ কাটতে হবে।

Leave a Reply

Translate »