শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে যাওয়ার সেরা ৫ জায়গা

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী হিসাবে সুপরিচিত ।শ্রীমঙ্গলে রয়েছে অসংখ ঘুরে দেখার মতন জায়গা। আজকে আমরা শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে যাওয়ার সেরা ৫ জায়গা সম্পর্কে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ।

চা বাগান

বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্নত মানের চা শ্রীমঙ্গলেই উৎপন্ন হয়ে। শ্রীমঙ্গলের প্রবেশ পথে ‘চা-কন্যা’ ভাস্কর্য দৃষ্টি কেড়ে নেবে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের তৈরি এ ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে সাতগাঁও চা-বাগানের সহায়তায়। ‘চা-কন্যা’ ভাস্কর্যের সামনে থেকেই বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে সাতগাঁও চা-বাগান। ইংরেজদের শাসনকালের স্মৃতি বহনকারী সিলেটের চা বাগানগুলোতে সেই সময়ের মতো কাঠের তৈরি সাদা রঙের ভবনে ম্যানেজারেরা বাস করেন। আর তাই চা বাগানের জীবন যাত্রাতেও ইংরেজ আমলের অনেক ছাপ লক্ষ করা যায়।

সাধারণত মে মাসে চাপাতা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত চলে। এ সময়ে কর্মচঞ্চল চা বাগান সবুজে পরিপূর্ণ থাকে। চা-শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা দেখতে চাইলে মে থেকে অক্টোবরে ঘুরে আসতে পারেন শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন চা বাগান থেকে। এছাড়া বছরের যে কোনো সময় ঘুরতে যেতে পারেন চা বাগানগুলোতে।

 

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত

ঠিক শ্রীমঙ্গলে নয়, তবে একই জেলার বড়লেখা নামক আরেকটি উপজেলায় রয়েছে এক মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত। সিলেট শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থানে বাস, ট্রেন বা ব্যক্তিগত পরিবহনের মাধ্যমে যাওয়া যাবে। বড় বড় পাথর, ক্ষীণ জলস্রোত আর প্রশান্তিদায়ক সবুজে ঘেরা মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে প্রায় সারা বছরই থাকে পর্যটকদের আনাগোনা। তবে জলধারা উপভোগের পাশাপাশি এর পিচ্ছিল ঢালগুলোতে সাবধানে থাকতে হবে। প্রায় ২০০ ফুট উপর থেকে আছড়ে পড়া জলের স্রোত যে কাউকে আহত করতে সক্ষম।

 

আরও পড়ুন ঃগ্যাসের চুলায় পুডিং বানানোর রেসিপি

 

বাইক্কা বিল

একাধারে পাখি, মাছ ও গাছগাছালির অভয়ারণ্য বাইক্কা বিল মূলত হাইল হাওরের অন্তর্ভুক্ত একটি অংশ। অগভীর এই হ্রদটিতে বিভিন্ন গাছপালার দেখা মেলে। সেইসঙ্গে রয়েছে স্থানীয় জলাভূমিও। এর অবস্থান শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারের মাঝপথে। বিলের ঘেরাটোপে প্রবেশ করতেই পাখিদের মন মাতানো কলকাকলিতে মন ভরে উঠবে। যেহেতু বাইক্কা বিলে মাছ ধরা নিষেধ, বিলে থাকা মাছের ঝাঁক প্রতি বছরই পাখিদের আকর্ষণ করে। শীতকালে এখানে পরিযায়ী পাখিরা ভিড় করে। তাই প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য অন্যতম পছন্দের জায়গা এই বিল। পাখি দেখতে আসেন অনেকে, বিজ্ঞানীদেরও দেখা যায় দুরবিন নিয়ে বসে পড়তে। ব্যক্তিগত গাড়িতে করে গেলে ঢাকা থেকে বাইক্কা বিল পৌঁছাতে ৩ ঘণ্টার কিছু বেশি সময় লাগবে। বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময় এখানে নৌভ্রমণের অনুমতি দেওয়া থাকে।

 লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

বছরের পর বছর যায়, তবু এ স্থানের জনপ্রিয়তা বাড়ে বৈ কমে না। সেই কবে ‍‍`অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেইস‍‍` এর ফিলিয়াস ফগ এসে পৌঁছেছিলেন লাউয়াছড়ার অভ্যন্তরের রেলপথে, আজও লোকে সেখানে বেড়াতে যায়। প্রায় সারা বছরই এখানে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। বিরল প্রজাতির পাখি, বাঁদর, হরিণ প্রভৃতি প্রাণীদের বাসস্থান এই উদ্যান। এদেরকে এক নজর দেখার পাশাপাশি হাইকিং ও ট্রেকিংয়ের জন্যও এ বন বেশ উপযোগী। তবে সেসময় স্থানীয় একজন গাইড সঙ্গে রাখলে ভালো হয়।

শীতকালে শিশিরের অন্য এক জাদু ছড়িয়ে পড়ে এই রেইনফরেস্টে। হালকা কাদামাখা পথ দিয়ে একা একা হেঁটে যেতেও মন ছুঁয়ে যাবে প্রশান্তি। নাগরিক কোলাহল এড়িয়ে কিছুক্ষণের এই নির্জনতা সঙ্গী হবে হয়তো কাছেই ডেকে ওঠা একটা পাখির। প্রকৃতি ধরা দেবে চোখের সীমানায়। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান মৌলভীবাজার শহর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং বাস বা ট্রেনের মাধ্যমে এখানে যাওয়া সম্ভব।

আরও পড়ুন ঃফেসবুক পাসওয়ার্ড হ্যাক হতে পারে যে অ্যাপ ব্যবহারে !

মাধবপুর লেক

কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত এই লেকটি। জলপদ্মসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদে পরিপূর্ণ এই স্থানটিতে বহু ধরনের পাখিদেরও আনাগোনা রয়েছে। একেক ঋতুতে মাধবপুর লেকের যেন একেক রূপ। কারও চোখে হয়তোবা তা ধরা দিতে পারে জল-উপকথার বিচিত্র প্রাণীর আকৃতিতে।

শীতকালে মাধবপুর লেকের মোহনীয় চেহারা ধরা দেয় পর্যটকদের কাছে। এ সময়ে সাদা পেটের বগলা পাখিও দেখা যায়। শ্রীমঙ্গল থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই স্বপ্নালু এই হ্রদের দেখা মিলবে।

Leave a Reply

Translate »