দেশের প্রথম বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট খুলছে ডিসেম্বরে

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত চলছে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের কাজ। দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে কাজ চলাকালীন সড়কে যাতাযাতকারীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। দফায় দফায বেড়েছে প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ডিসেম্বরে খুলছে দেশের প্রথম বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি শেষ হলে মাত্র ৪০ মিনিটেই গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে দেশের প্রথম বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট, বিআরটি প্রকল্পের পুরোটুকু খুলে দেয়া হবে।

বিআরটি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর সঙ্গে গাজীপুরের যোগাযোগে মানুষের ভোগান্তি দূর করতে ২০১২ সালে হাতে নেওয়া হয় বিআরটি প্রকল্প। প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সময় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যয়ও বেড়েছে। সবশেষ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। শুরুতে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত। কিন্তু পরে সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হলেও প্রকল্প সংকুচিত করে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে দূরত্ব কমিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত করা হয়।

প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, প্রকল্পের ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে সওজের কাজ ১৬ কিলোমিটার, যার মধ্যে সাতটি ফ্লাইওভার রয়েছে। এর মধ্যে ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৫ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতায় ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণের অগ্রগতি ৮৫ শতাংশ। অন্যদিকে এলজিইডির আওতাধীন দুটি প্যাকেজের অগ্রগতি শতভাগ। প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮০ শতাংশ।

সরজমিনে দেখা গেছে,প্রকল্পের ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার এলাকায় ৯টি ফ্লাইওভারের মধ্যে যান চলাচলে খুলে দেয়া হয়েছে ৭ টি। আর বাকি দুটির কাজও চলছে জোরেশোরে। পুরো প্রকল্প এলাকা জুরে চলছে মহা কর্মযোগ।

টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী আমিনুল ইসলাম বলেন, টঙ্গী গাজীপুরের মানুষের জন্য চরম ভোগান্তির উন্নয়ন প্রকল্প ছিলো এই বিআরটি প্রকল্প। কিন্তু প্রকল্পটি দৃশ্যমান হওয়ায় এখন অনেকটাই কমছে ভোগান্তি। স্টেশন রোড থেকে উরাল সেতুতে উঠলে খুব অল্প সময়ই এয়ারপোর্টে পৌঁছানো যায়। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বদলে যাবে গাজীপুর বাসির জীবনমান।

ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা এনা পরিবহনে চালক সুমন মিয়া বলেন, কিছু দিন আগেও গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী আসতে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যায় হতো। এখন বেশ কিছু জায়গায় উরাল সেতু খুলে দেওয়া খুব অল্প সময়ই টঙ্গী পার হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করা যায়।কয়েকটি জায়গায় মাঝে মাঝে যানবাহনে চাপ থাকে আসাকরি কাজ শেষ হলে এসমস্যাও থাকবে না।

বাস র‍্যাপিট ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের পরিচালক মহিদুল ইসলাম বলছেন,এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতি ৯৪ শতাংশ। চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ পুরো প্রকল্প খুলে দেয়ার পরিকল্পনার আছে আমাদের। আশাকরি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ হবে এই প্রকল্পের কাজ

এই পথে ২৫টি স্টেশনের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ১১টি স্টেশনে ৫০টি বাস দিয়ে চালু হবে এই প্রকল্প। তবে পুরোপুরি সুবিধা পেতে আরপ সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Translate »