প্রত্যেক মা-বাবা শিশুকে সুন্দরভাবে গড়তে বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন

প্রত্যেক মা-বাবা সন্তানের ভালোর দিক ভেবে ব্যাকুল থাকেন। প্রত্যেক বাবা-মা চায় তাদের সন্তান বেড়ে উঠুক খুব সুন্দরভাবে। তবে একটু অসচেতনাতার ফলে অনেক সময় সন্তানকে ঠিকভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয় না।

তারা চান তাদের সন্তান বেড়ে উঠুক খুব সুন্দরভাবে। শিশুর মনস্তত্ত্ব কাদামাটির মতো। তাকে শৈশব থেকে যেভাবে গড়বেন, সেভাবেই বেড়ে উঠবে সে। এই বয়সে তাকে যা শেখাবেন তা সে মনে রাখবে আজীবন। পড়াশোনার অভ্যাসটিও গড়ে তুলুন এখনোই। শিশুর মনস্তত্ত্ব কাদামাটির মতো। তাকে শৈশব থেকে যেভাবে গড়বেন, সেভাবেই বেড়ে উঠবে সে। এই বয়সে তাকে যা শেখাবেন তা সে মনে রাখবে আজীবন। পড়াশোনার অভ্যাসটিও গড়ে তুলুন এখনোই। জেনে নিন তার ৬টি সহজ উপায়। আপনার শিশুটি প্রতিনিয়ত কত শব্দ শুনছে। নতুন নতুন শব্দ গ্রহণ করছে তার মস্তিষ্ক।
আপনি এই শব্দের জগতকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারেন। বিভিন্ন গল্পের বই, ছড়া রিডিং পড়ুন। গবেষণায় দেখা গেছে, বাচ্চাদের (এমনকি যখন তারা কথা বলতে শেখেনি) কানের কাছে গল্প কবিতা আবৃত্তি করতে থাকা একই সঙ্গে শিশুদের জানার আগ্রহ বাড়ায় এবং তাদের শব্দভান্ডারও সমৃদ্ধ করে। শেখার এই অভ্যাস পরবর্তী সময়ে কাজ দেবে স্কুলে। শিক্ষকদের কথা শুনতে, বুঝতে সুবিধা হবে তার। তাই পড়াশোনা করতেও খারাপ লাগবে না, বরং আগ্রহ বাড়বে।
বাসায় পড়াশোনার পরিবেশ থাকা খুবই জরুরি। শিশু যখন ছোটবেলা থেকেই দেখবে বাসায় নিয়মিত পড়াশোনা হয়, বই আছে, বড়রা পড়ে তখন তারও অভ্যাসে পরিণত হবে এটি। সে নিজে নিজেই আগ্রহের সঙ্গে দেখবে কোনটি কি বই, ভেতরে কী আছে, ছবি দেখে বোঝার চেষ্টা করবে, জানার চেষ্টা করবে। এই চেষ্টাই তাকে জ্ঞান পিপাসু করে তুলবে।
শিশুকে তার পরিবেশ সম্পর্কে জানান। তাকে সন্তুষ্ট হতে শেখান। পথ চলতে চলতে তাকে দেখিয়ে দিন, কত মানুষ রাস্তার পাশে বসবাস করে। মানুষ কত অসহায়! আমাদের চারপাশে চাহিদা তৈরির উপাদান অনেক। একটি শিশু যখন শপিং মলে যায়, নানান ধরনের খেলনা আসে তার সামনে। আমরাও ভালোবেসে তাকে কতকিছু কিনে দেই। এতে তার চাহিদা বাড়তে থাকে। কোনো কিছু পছন্দ না হলে সে ভাবতে শুরু করে, ‘এটা আমি কেন পাব না? বাবা-মা চাইলেই তো কিনে দিতে পারে।’ এটা খুবই ক্ষতিকর। এমনকি এর প্রভাব পড়বে তার পড়াশোনায়ও।
প্রকৃতির দিকে মনোযোগী করে তুলুন। গাছ, ফুল, পাখির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিন তাকে। সরাসরি দেখে সে যেটা শিখবে তার চেয়ে স্মরণীয় হবে না আর কোনো কিছুই। শুধু প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানোতেই একটি শিশু অনেক সৃষ্টিশীল বোধ করতে পারে। এমনকি যে সব শিশুরা সপ্তাহে অন্তত ১০ ঘণ্টা প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকে তারা পৃথিবীর সঙ্গে অনেক বেশী আত্মিক সংযোগ বোধ করে এবং এর সুরক্ষার প্রতি দায়িত্ববোধ অনুভব করে।
সে ভিডিও গেমস বা এ জাতীয় বিষয়ে বেশি আগ্রহী হয়ে পড়বে। সারাক্ষণই খুঁজতে থাকবে আর কি কেনা যায়! সন্তানের এ ধরনের মানসিকতায় বাবা-মায়েরা প্রায়ই কষ্ট পান। কোনোভাবেই শিশুর জেদকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। যেটা তার চাই, সেটা চাই-ই। শিশুর এই আচরণের জন্য দায়ী কিন্তু আপনি নিজেই। তাকে কৃতজ্ঞতা শেখান। এতে সে মনোযোগের বিক্ষিপ্ততা থেকে মুক্তি পাবে এবং এবং স্থির চিত্ত গড়ে তুলতে পারবে।
শিশুর সঙ্গে খেলাঙ্গুলা করুন। লিগো খেলা তাকে শেখাবে কিভাবে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতে হয়, তার চিন্তার গভীরতা বাড়াবে। শব্দ খেলাগুলো তার শব্দজ্ঞান বাড়াবে। দাবা খেলা তাকে শেখাবে হারজিৎ থাকবেই জীবনে। প্রতিটি খেলা থেকে সে নেবে জীবনের শিক্ষা, গড়ে উঠবে বাস্তবতার সঙ্গে পরিচিত একজন মানুষ হিসেবে। মস্তিষ্কের উন্নয়নবিষয়ক মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন জার্নালে উলেস্নখ করা হয়েছে মানব মস্তিষ্কে শিক্ষণীয় খেলার সুফল সম্পর্কে। বস্নক, পাজল এসব খেলাও মস্তিষ্কের বিকাশ সাধন করে।
শিশুর সামনে সৃষ্টিশীল বিষয়ে আলোচনা করুন। সে হয়তো বোকার মতো অনেক কথা বলবে, অনেক কিছু করতে চাইবে যা আপনার মনে হবে অবাস্তব। কিন্তু তার সৃষ্টিশীলতার ওপর ভরসা রাখুন। তাকে নিজের মন মতো করে তৈরি করতে দিন। অনুৎসাহিত তো করবেনই না। বরং নিজেও সহযোগিতা করুন।

Leave a Reply

Translate »