আইকোনিক ফোকাস ডেস্ক: সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে শুরুতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এগিয়ে যাওয়ার ব্যবধান ধরে রাখে শেষ পর্যন্ত। কিন্তু শেষ দিকে ঘটে যায় অঘটন। লাল কার্ড দেখে বসেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। এর কিছুক্ষণ পর এক পেনাল্টিতেই বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। রেফারির পেনাল্টির সিদ্ধান্তটি ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু কিছুই করার ছিল না বাংলাদেশের। পেনাল্টির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ড্র করে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে নেপাল।
মালদ্বীপের রাজধানী মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে নেপালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে জালের দেখা পান সুমন রেজা। আর পেনাল্টি থেকে নেপালকে ম্যাচে ফেরান অঞ্জন বিস্তা।
বাংলাদেশের প্রথম ও সবশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পর কেটে গেছে দেড় যুগ। মাঝের সাত আসরে সাফল্যের পাল্লায় তেমন কিছু নেই। তাই এবারের মৌসুম নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে বাংলাদেশ। সেই স্বপ্নের খুব কাছাকাছিও চলে যায় লাল-সবুজের দল। কিন্তু আজ ম্যাচের শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালে উঠেছে নেপাল।
ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে আধিপত্য রেখেছে নেপাল। আক্রমণেও এগিয়ে ছিল নেপাল। তবে শুরুতে গোল করে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল বাংলাদেশ।
অবশ্য ম্যাচের শুরুতেই গোল খেয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের একজনকে ফাউল করলে ফ্রি-কিক পেয়ে যায় নেপাল। তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিলে সেই যাত্রায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
এরপর সাত মিনিট না যেতে সেই ফ্রি-কিকের সুবিধা কাজে লাগিয়ে গোলের দেখা পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচের নবম মিনিটে বাংলাদেশি তারকাকে ফাউল করলে ফ্রি-কিক পেয়ে যায় লাল-সবুজের দল। ফ্রি-কিকে নেপাল ব্যর্থ হলেও বাংলাদেশ ঠিকই গোল আদায় করে নেন। জামাল ভূঁইয়ার ফ্রিকিকে দারুণ হেড দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন দলে ফেরা সুমন রেজা।
এরপর নিজেদের রক্ষণে নজর দিয়েছে বাংলাদেশ। বেশ কয়েকবার আক্রমণ করে নেপাল। তবে দুদফায় বাংলাদেশকে রক্ষা করেন তপু বর্মণ। এর মধ্যে ২৩তম মিনিটে ফের ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। তবে নেপালের অঞ্জন বিস্তার ফ্রি-কিক অনেকটা লাফিয়ে বাংলাদেশকে রক্ষা করেন আনিসুর রহমান জিকো। দুই মিনিট পর বক্সের ডান দিক দিয়ে অরক্ষিত ফরোয়ার্ড সাদউদ্দিন তাড়াহুড়ো করে শট নেন। বল বেরিয়ে যায় দূরের পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে যায়। প্রথমার্ধের বাকি সময় আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি নেপাল।
এক গোলে পিছিয়ে থাকা নেপাল বিরতির পর আক্রমণে ধার বাড়ায় নেপাল। সুযোগ তৈরি ফেলে ৫২ মিনিটেই। তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট শটের কারণে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। দুই মিনিট বাদে বাংলাদেশও সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু নেপালের গোলরক্ষক বাংলাদেশকে গোল পেতে দেয়নি।
এরপর বাংলাদেশকে কয়েক দফায় রক্ষা করেন গোলরক্ষক জিকো। নেপালের বেশ কয়েকটি আক্রমণ ঠেকিয়ে দেন তিনি। কিন্তু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারেননি তিনি। ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে লাল কার্ড দেখে বসেন তিনি। মূলত উইঙ্গার রাকিব হোসেনের ভুলের খেসারত দিতে হয় জিকোকে। রাকিবের মিস পাস কভার করতে গিয়ে ডি বক্সের বাইরে দুর্ভাগ্যবশত বল তাঁর হাতে লেগে যায়। ফলে লাল কার্ড দেখতে হয় তাঁকে।
জিকো ফেরার কিছুক্ষণ পর ফের ভুল করে বসে বাংলাদেশ। বিপজ্জনক জায়গায় নেপালের এক ফুটবলারকে ফাউল করে বসেন ডিফেন্ডার সাদউদ্দিন। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ওই পেনাল্টিটি প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। কিন্তু কিছুই করার ছিল না বাংলাদেশের। আর ওই এক পেনাল্টিতে সাফের ফাইনালের স্বপ্ন শেষ বাংলাদেশের। পেনাল্টির সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে ফেরে নেপাল। বাকি সময়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে ড্রয়ের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে জামাল ভূঁইয়াদের।
আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে সাফের ফাইনাল। সেদিন নেপালের মুখোমুখি হবে মালদ্বীপ ও ভারতের মধ্যকার জয়ী দল।