আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃবিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও কোমলহৃদয়ের। নিজের পরিবার-পরিজন, অধীনস্থ সেবক-কর্মচারী ও সাহাবিদের প্রতি তিনি ছিলেন অত্যন্ত সদয়। সবার কষ্টে তিনি কষ্ট পেতেন।
এমন কী রাসূলুল্লাহ (সা.) এর শত্রুরা মৃত্যুর পর জাহান্নামে গিয়ে পড়বে এ চিন্তায়ও তিনি ব্যাকুল হয়ে পড়তেন। কোরআনে নবীজি (সা.) এর এ গুণের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন- لَقَدۡ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ عَزِیۡزٌ عَلَیۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیۡصٌ عَلَیۡکُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ
অর্থ: ‘তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়’। (সূরা: তওবা, আয়াত: ১২৮)
হজরত আনাস (রা.) ছিলেন রাসূল (সা.) এর কর্মচারী বা সেবক। তিনি বলেন, ‘আমি ১০ বছর রাসূল (সা.) এর খেদমত করেছি; কিন্তু এ সময়ের মধ্যে তিনি কখনো আমার কোনো কাজে অসন্তুষ্ট হয়ে ‘উহ’ শব্দটি পর্যন্ত করেননি। আমি করেছি এমন কোনো কাজের ব্যাপারে তিনি কখনো জিজ্ঞেস করেননি যে, কেন করেছি? আর না করার ব্যাপারেও তিনি কখনো জিজ্ঞেস করেননি যে, কেন করোনি? চরিত্র মাধুর্যে তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। কোনো রেশমী কাপড় বা কোনো বিশুদ্ধ রেশম বা অন্য কোনো এমন নরম জিনিস স্পর্শ করিনি, যা রাসূল (সা.) এর হাতের তালুর চেয়ে নরম। আমি এমন কোনো মিশক বা আতরের সুবাস পাইনি, যা রাসূল (সা.) এর ঘামের ঘ্রাণ থেকে অধিক সুগন্ধিময়’। (শামায়েলে তিরমিজি)
আরও পড়ুন ঃতাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও উপকারিতা
নবীজির (সা.) সহধর্মিণী আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসূল (সা.) তার কোনো স্ত্রী বা কর্মচারির ওপর কখনও হাত ওঠাননি। আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া তিনি কারো ওপরই হাত ওঠাননি। যে তার ক্ষতি করেছে, তার থেকেও প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি’। (সহিহ মুসলিম)
আয়েশা (রা.) আরো বলেন, ‘রাসূল (সা.) কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কোনো রকম অশোভনীয় কথা বলতেন না। বাজারেও তিনি উচ্চৈস্বরে কথা বলতেন না। মন্দ আচরণের বদলায় তিনি মন্দ আচরণ করতেন না; বরং ক্ষমা করে দিতেন। তারপর কখনো তা উল্লেখও করতেন করতেন না’। (শামায়েলে তিরমিজি)
সাহাবি ও উত্তম ব্যক্তিদের সঙ্গে তো বটেই, নবীজি (সা.) তার শত্রু, খারাপ ও দুরাচারী লোকদের সঙ্গেও তিনি বিনয়ী ও নম্র আচরণ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, একদিন এক ব্যক্তি রাসূলের (সা.) সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাইল। আমি সে সময় তার কাছে বসে ছিলাম। তিনি বললেন, এ অত্যন্ত নিকৃষ্ট প্রকৃতির লোক! তারপর তাকে যখন আসার অনুমতি দেওয়া হলো, তিনি তার সঙ্গে খুব নম্রভাবে কথা বললেন। লোকটি বের হয়ে গেলে আমি বললাম, লোকটি সম্পর্কে এরকম বললেন, আবার তার সঙ্গে নম্র ব্যবহার করলেন। রাসূল (সা.) বললেন, আয়েশা! যে লোকের খারাপ ব্যবহারের জন্য লোকজন তাকে পরিহার করে এবং তার থেকে দূরে থাকে, সে সবচেয়ে খারাপ লোক। (শামায়েলে তিরমিজি)