আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ গাছ মানুষের একমাত্র বেঁচে থাকার মাধ্যম। কারন এই গাছ থেকেই মানবজাতি অক্সিজেন সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে। এছারাও গাছ আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। যেকোনো গাছই উপকারী অক্সিজেন এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় উপকারী। তাই অনেকেই খোলা জায়গায় বাগান করতে না পারলেও আজকাল অনেকেই ব্যালকনি কিংবা ছাদে বাগান করার দিকে ঝুঁকছেন। বর্ষার পানি গাছের জন্য উপকারী হলেও এর দাপট গাছের জন্য ক্ষতিকর। তাই এমন ভাবে বাগান সাজাতে হবে, যাতে শুধু বৃষ্টির পানিটা গাছ পায়।
বর্ষায় বাগান পরিষ্কার রাখতে করণীয়-
- টবে পানি জমতে দেবেন না। এতে এডিশ মশা বিস্তার লাভ করতে পারে।
- গাছের পচা বা হলুদ পাতা একটা পাত্রে জড়ো করুন। সেখান থেকে জৈব সার তৈরি করুন।
- অনেক সময় টবের উপরের স্তর সবুজ শ্যাওলায় ঢেকে যায়। এই শ্যাওলা অক্সিজেন গাছের গোড়ায় পৌঁছতে দেয় না। গাছের বৃদ্ধি রোধ করে। তাই শ্যাওলার অংশটুকু খুঁচিয়ে তুলে ফেলে দিতে হবে।
- বাড়ির সামনে বা ছাদে বাগান হলে এই অংশটুকু আলাদা করে ইট বা পাথর দিয়ে বাগানের সীমানা নির্দিষ্ট রাখুন। তা হলে বাকি অংশে সেই মাটি বা কাদা ছড়িয়ে নোংরা হবে না।
- বৃষ্টির দাপটে অনেক সময়ে গাছ ভেঙে যায়। তাই দুর্বল গাছের চারপাশে কাঠি পুঁতে দড়ি দিয়ে বেঁধে ওদের সাপোর্ট দিতে পারেন। লতানো গাছ মাচায় তুলে দিন।
- ব্যালকনি, ছাদ, লন যেখানেই গাছ লাগান না কেন বাগানের মাটি থেকে শুরু করে গাছ- সবকিছুই পরিষ্কার রাখতে হবে।
বর্ষায় ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাগানকে রক্ষা করতে করনীয়-
মাটির ক্ষয় রোধ: অনেক সময় বর্ষার পানিতে গাছের মাটির উপরের স্তর ধুয়ে যায়। এর সঙ্গে কিন্তু মাটির সার, উর্বর অংশটুকুও ধুয়ে সাফ হয়ে যায়। এতে গাছ পানি পেলেও পুষ্টি পায় না। তাই গাছের কাণ্ড থেকে প্লাস্টিক বেঁধে টবের মাটি ঢেকে রাখতে পারেন। এতে বৃষ্টির পানি চুঁইয়ে মাটিকে পুষ্ট করবে। এঁটেল মাটি বেশি ব্যবহার করতে পারেন। এরা খুব তাড়াতাড়ি পানি টেনে নেয়।
আরও পড়ুন ঃদ্বিতীয় ওয়ানডে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ
পানি নিস্কাশন : গাছের গোড়ায় যেন বৃষ্টির পানি না জমে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এজন্য টবের নীচে অন্তত দুটো গর্ত করে রাখবেন। মাটিতে একটা গর্তের মুখ বন্ধ হয়ে গেলেও অন্য গর্ত জমা পানি বের করতে সাহায্য করবে। দু’তিন পর পর গর্তের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে কিনা সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে। খোলা জায়গায় বাগান থাকলে যাতে সেখানে পানি না জমে সেদিকে নজর দিতে হবে।
কীটনাশক: বর্ষার আর্দ্র পরিবেশে পোকামাকড়ের আক্রমণ বাড়ে। নতুন পাতার রস খেতেও এরা গাছে জড়ো হয়। তাই বর্ষার শুরু থেকেই কীটনাশকের ব্যবহার শুরু করতে হবে। প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে নিমের তেল, গোলমরিচ গুঁড়ো, শুকনো মরিচের গুঁড়া দিতে পারেন গাছের গোড়ায়। এতেও কাজ না হলে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
ছায়ায় রাখুন চারা: প্রথমেই চারাগুলোকে কোনও শেডের তলায় নিয়ে গিয়ে রাখতে হবে। অথবা ছাদের একটা পাশে নিয়ে গিয়ে তার উপরে টিন বা এ জাতীয় কিছু দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। শেডের সুবিধে না থাকলে চারাগুলিকে বারান্দার কোণে বা ঘরের জানালার কাছেও রাখতে পারেন।
আরও পড়ুন ঃমাথাব্যথার কারণ ও প্রতিকার
প্রুনিং: বর্ষায় অনেক গাছই খুব ঝাঁকড়া হয়ে যায়। ফলে একনাগাড়ে অনেক দিন বৃষ্টির পর মাঝেমধ্যে রোদ উঠলেও গাছের সব জায়গায় সেই রোদ পৌঁছায় না। এতে গাছের গোড়া পচে যেতে পারে। তাই গাছের ডাল ছেঁটে দিতে হবে। ফুলের গাছে যে ডালে ফুল শুকিয়ে যাবে, তা কেটে দিতে পারেন। তা হলে সেখান থেকে আবার নতুন কুঁড়ি জন্মাবে।
সারের ব্যবহার : যেহেতু বর্ষার পানি উপরের স্তরের মাটি অনেকটাই ধুয়ে যায় তাই গাছে সার দিতে হবে নিয়মিত। তবে এ সময়ে গলা-পচা সারের তুলনায় শুকনো সারের উপরে ভরসা রাখাই ভাল। চায়ের পাতা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে, ডিমের খোলা শুকিয়ে গুঁড়ো করে দিতে পারেন।