আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ আসছেন আর গেছেন। মাঝখান দিয়ে চার-ছক্কা মেরে রানের গতি সচল রেখেছেন। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাটিং পেয়ে এভাবেই খেলছে জিম্বাবুয়ে। ফলে এক ওভার বাকি থাকতেই অলআউট হয়ে গেছে দলটি। তবুও ধুমধাড়াক্কা ইনিংস খেলে ১৫২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছে তারা।
জয় পেতে ৮ রানরেটে ১৫৩ করতে হবে বাংলাদেশকে। শুরুতে নিজের প্রথম ওভার ও দলীয় দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য এনে দেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজের দ্বিতীয় বলেই বিশাল এক ছক্কা মেরেছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তাদিওয়ানাশে মারুমানি। চালিয়ে দিয়েছিলেন পরের দুই বলেও, কিন্তু ব্যাটে খেলতে পারেননি।
অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল টেনে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারলেন, কিন্তু টাইমিং হয়নি মোটেও। ডিপ মিডউইকেট সীমানা থেকে অনেকটা দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে চমৎকার এক ক্যাচ লুফে নেন সৌম্য সরকার।
৭ বলে ৭ রান করে ফিরলেন মারুমানি। কিন্তু এরপর উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান যেন টর্নেডো তুললেন মাঠে। ৬ ওভারে ৫০ রান জমা করেন স্কোরবোর্ডে। ওয়েসলি মাধেভেরেকে সঙ্গী করে মাত্র ৩৮ বলে ৬৪ রানের জুটিও গড়েন।
এক কথায় পাওয়ারপ্লে-তে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ছাড়া বাকি তিন জনই ছিলেন খরুচে। যদিও মাধেভেরেকে থামিয়ে দিয়ে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাওয়া জুটিকে থামিয়েছেন সাকিব। তবুও চাকাভার কাছে অসহায়ই ছিলেন তিনি। এছাড়া তুলোধোনা হয়েছেন স্পিনার মিরাজও।
অষ্টম ওভারে পঞ্চম বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা মেহেদি হাসানের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঝড়। তার ওভারে এক চারের পর টানা ছক্কা মেরেছেন চাকাভা। ওভার থেকে এসেছে ১৮ রান। অবশেষে রেজিস চাকাভা থামলেন। বোলাররা পারেননি। তাকে রানআউট করেছেন নুরুল হাসান সোহান।
শরিফুল ইসলামের বলে স্কুপ করার চেষ্টায় পুরোপুরি সফল হননি চাকাভা। এগিয়ে এসে ক্যাচ গ্লোভসে নিতে পারেননি সোহান। কিন্তু তার বুদ্ধিদীপ্ত থ্রোয়ে রানআউট হয়েছেন চাকাভা। এক কথায় বিধ্বংসী চাকাভাকে আউট করার পুরো কৃতিত্ব উইকেটকিপার সোহানেরই। ২২ বলে ৫ বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় চাকাভার ৪৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।
তবে চাকাভার পরে কোনো রানই যোগ করতে পারেননি অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। ২ উইকেটে ৯১ রান নিয়ে একাদশ ওভার শুরু করা জিম্বাবুয়ে ১ রান তুলতে হারাল দুই উইকেট। রেজিস চাকাভা রান আউট হওয়ার পর শূন্য রানে কট বিহাইন্ড হলেন সিকান্দার রাজা।
শরিফুল ইসলামের অফ স্টাম্পের বাইরের বল থার্ড ম্যানে পাঠাতে চেয়েছিলেন রাজা। ঠিক মতো পারেননি তিনি। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে।
এরপর ১২তম ওভারেই দলীয় ১০০ রান ছাড়িয়ে যায় জিম্বাবুয়ের। সৌম্য সরকারের দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয় বলটি ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মুসাকান্দা। ব্যাটে খেলতে পারেননি, এবার আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার।
এক চারে ৬ বলে ৬ রান করেন মুসাকান্দা। ১৪ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১১৫। এরপর ক্রিজে ডিওন মায়ার্সের সঙ্গী হন রায়ার্ন বার্ল। মায়ার্সকে আর বেশিক্ষণ ব্যাট চালাতে দেননি পেসার শরিফুল।
বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পে থাকা ফুল লেংথ বল ক্রস ব্যাটে খেলতে চেয়েছিলেন ডিওন মায়ার্স। বলের লাইনে যেতে পারেন, উড়ে যায় স্টাম্প। টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ইনিংসে ২২ বলে দুই চারে ৩৫ রান করেন মায়ার্স। রায়ার্ন বার্লের সঙ্গী হয়ে নামেন লুক জঙ্গুয়ে। এরপর সাইফউদ্দিনের জোড়া শিকারে পরিণত হন রায়ার্ন বার্ল ও লুক জঙ্গুয়ে দুজনেই।
নিজের শেষ ওভারে পেলেন জোড়া উইকেট সাইফ।অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল স্কুপ করতে চেয়েছিলেন লুক জঙ্গুয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে বল আঘাত হানে লেগ স্টাম্পে। দুই চারে ১৬ বলে ১৮ রান করে ফিরেন জঙ্গুয়ে।
বদলি ফিল্ডার শামীম হোসেনের দুর্দান্ত এক ক্যাচে সেই ওভারেই ফিরেন রায়ান বার্ল। নিজের শেষ ওভারে ফিরে দুটি উইকেট পেলেন মোস্তাফিজ। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দিলেন রিচার্ড এনগারাভাকে।
পরের দুই বলে জিম্বাবুয়ের ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান মুজারাবানি দুটি বাউন্ডারি হাঁকান। ওভারের শেষ বলে তাকে বোল্ড করে দেন মুস্তাফিজ। এক ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের পক্ষে ৩ উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। সাইফউদ্দিন ও শরিফুল পেয়েছেন দুটি করে। একটি পেয়েছেন সাকিব।