ইসলাম শিক্ষকের মর্যাদা যেভাবে নিশ্চিত করে

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ শিক্ষা লাভ করা এবং শিক্ষা দান করা যেমন প্রয়োজনীয়, তেমনি শিক্ষক, শিক্ষাঙ্গন ও সহপাঠীদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করা আবশ্যক। এতে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং জ্ঞানার্জনের আগ্রহ বাড়ে। সর্বোপরি সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা যায়। কেননা ইসলাম সবার জন্য শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে বলেছে, ‘জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২৪)

 

শিক্ষকের মর্যাদা সবার ওপরেঃ ইসলামী সমাজে শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। সুতরাং ইসলাম শিক্ষকের প্রতি যথাযথ সম্মান ও বিনয় প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা নবীর কণ্ঠস্বরের ওপর নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু কোরো না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চ স্বরে কথা বলো, তাঁর সঙ্গে সেভাবে উচ্চ স্বরে কথা বোলো না। কেননা এতে তোমাদের আমল নিষ্ফল হয়ে যাবে তোমাদের অজ্ঞাতসারে।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ২)

 

শিক্ষকের অবদান অসীমঃ যারা জ্ঞান বিতরণে আত্মনিয়োগ করেছে সমাজের প্রতি তাদের অনুগ্রহ সবচেয়ে বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সবচেয়ে বড় দানশীল আল্লাহ। তারপর আদম সন্তানের মধ্যে আমি হলাম সবচেয়ে দানশীল। এরপর বেশি দানশীল ওই ব্যক্তি, যে জ্ঞানার্জনের পর তা প্রচারে আত্মনিয়োগ করে। এরূপ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন একাই একজন আমিরের মতো বা এক উম্মত হিসেবে মর্যাদাসহ উপস্থিত হবে।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ২৫৯)

 

শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের জন্য দোয়া করবেঃ শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকের অবদান অসীম। তাই শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের জন্য দোয়া করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেউ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করলে তোমরা তাকে এর বিনিময় প্রদান করবে। যদি বিনিময় দেওয়ার মতো কিছু না পাও, তবে তার জন্য তোমাদের মনে এ ধারণা হওয়া পর্যন্ত দোয়া করতে থাকবে যে তোমরা তার সমপরিমাণ বিনিময় প্রদান করতে সক্ষম হয়েছ।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৬৭২)

 

শিক্ষার্থীর করণীয়ঃ আল্লামা আশরাফ থানবি (রহ.) বলেন, ছাত্র যত বড় হোক, শিক্ষকের সঙ্গে তার মর্যাদার কোনো তুলনা হয় না। শিক্ষকের প্রতি আদব রক্ষা করা তাকওয়ার অন্তর্ভুক্ত। বেয়াদব কখনো মুত্তাকি হতে পারে না। কথাবার্তা, চালচলন, আচার-আচরণ ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে শিক্ষকের প্রতি শিষ্টাচার রক্ষা করে চলাই ইসলামের শিক্ষা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা দ্বিনি ইলম শিক্ষা কোরো এবং ইলমের জন্য স্থিরতা ও গাম্ভীর্য অবলম্বন কোরো।’ (হুকুকুল উস্তাদ, পৃষ্ঠা ৩২)

Leave a Reply

Translate »