অতিরিক্ত গরমে সমস্যা ও করণীয়

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃতীব্র তাপদাহে পুড়ছে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশ। এতে অসহনীয় হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। অসহ্য এই গরমে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।

অতিরিক্ত গরমে সমস্যা ও করণীয়:

ভয়াবহ এই গরমে মানুষের শরীর থেকে ঝরে পড়ছে প্রচুর ঘাম, যা কিনা স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই এ সময়ে সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে হবে। না হলে যেকোনো সময় অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

অতিরিক্ত গরমে ঘোরাফেরা করলে শরীরে অস্বস্তিবোধ, পানিশূন্যতা, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, অনিদ্রা, মাংস পেশিতে ব্যথা, খাবারে অরুচি, চামড়ায় ক্ষত, কিডনি ও ফুসফুসে সমস্যা এবং হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। লবণ বা ইলেকট্রোলাইটসের অভাবও এ শূন্যতার প্রধান কারণ। এ সময়ে শরীরের কোষ সজীব রাখতে প্রচুর পানি খেতে হবে। লবণের অভাব পূরণ করতে খাবার স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি ফলের রসও খাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন ঃ গরমে সুস্থ থাকতে যেসব খাবার খাবেন

অনেক সময় অতিরিক্ত গরমে অনেকের হিট স্ট্রোক হতে পারে। যদি কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব তাকে ঠাণ্ডা জায়গায় নিতে হবে। পরনের কাপড়-চোপড় ঢিলা করে দিতে হবে, যাতে শরীরে পর্যাপ্ত বাতাস লাগতে পারে। রোগীর মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে এবং গ্লুকোজ ও খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।

এ ছাড়া প্রখর রোদে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সময়ে খোলা আকাশের নিচে হাঁটাচলা বেশি হলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বক ভেদ করে কোষের ক্ষতি করতে পারে। ত্বকে ফোসকা পড়াসহ ত্বক বিবর্ণ হতে পারে। মেয়েদের ঠোঁটের রং পরিবর্তন হতে পারে। কারো কারো ঠোঁট ফেটে জ্বালা যন্ত্রণা করে। তাই এ সময়ে বাইরে বেরোলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ক্রিম ত্বকে মেখে বের হতে হবে। ক্রিমের গায়ে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা এসপিএফ লেখা নিশ্চিত হয়ে কিনতে হবে।

অপ্রয়োজনে রোদে ঘোরাঘুরি করা থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে বাধ্যতামূলকভাবে যারা বাইরে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকবেন, তাদের ফুলহাতা শার্ট ও ছাতা ব্যবহার করবেন।

রোদে বেশিক্ষণ থাকলে যে কোনো মানুষের শরীরে অস্বস্তিবোধ, পানিশূন্যতা, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, অনিদ্রা, মাংস পেশিতে ব্যথা, খাবারে অরুচি, চামড়ায় ক্ষত, কিডনি ও ফুসফুসে সমস্যা এবং হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। গরমে অনেক সময় শরীরে ঘাম জমে ছত্রাক সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। ঘাম শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে বিশেষ করে কুঁচকিতে, আঙুলের ফাঁকে ও যৌনাঙ্গে জমা হয়ে সেখানে ছত্রাক সংক্রমণের পথ বিস্তার করে দেয়। তাই এ সময়ে ছত্রাক সংক্রমণ এড়াতে হলে শরীরের ভাঁজগুলোতে ঘাম জমতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে ছত্রাকবিরোধী পাউডার ওইসব স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। প্রত্যেক দিন আন্ডারওয়্যার ও মোজা পরিষ্কার করতে হবে। পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে শরীর মুছে নেবেন।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় গরমে মানুষে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই এ সমস্যা রোধে সবাইকে প্রচুর পানি পান করতে হবে। আর যারা বেশি ঘামেন তারা স্যালাইন খেতে পারেন। সামর্থ্য থাকলে ডাবের পানি খাবেন। তবে রাস্তায় খোলা ঠাণ্ডা পানীয় (বিভিন্ন ধরনের সরবত) পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এসব পানীয় পান করলে অধিকাংশ সময় ডায়রিয়া, কলেরা ও টাইফয়েড হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যদি কেউ অতিরিক্ত গরমের কারণে শরীরে অস্বস্তিবোধ করেন তাহলে দ্রুত ছায়া বা ঠাণ্ডাযুক্ত স্থানে অবস্থান নেবেন। বেশি খারাপ লাগলে মাথায় পানি ঢালবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

Leave a Reply

Translate »