আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ দেশে আরও কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ কমে এবার ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। যা আগে ছিল ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা পরিশোধের পর রিজার্ভের চিত্র পাওয়া যায়। বিদ্যমান রিজার্ভ দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় সাড়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
যদিও গত পাঁচ মাস ধরে রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন (১০০ কোটিতে এক বিলিয়ন) ডলারের ঘরে অবস্থান করছিল।
এটা গত ছয় বছরের মধ্যে মোট রিজার্ভের সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫০৩ কোটি ডলার। পরে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা বেড়ে ৩ হাজার ১৭ কোটি ডলার হয়েছিল।
ব্যাংক সূত্রে জানা য়ায়, গত জুলাই-আগস্টের আকুর দেনা বাবদ ১৩১ কোটি ডলার গত বৃহস্পতিবার পরিশোধ করার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরো পড়ুনঃভারত-পাকিস্তানের রিজার্ভ ডে সমীকরণ
ইতোমধ্যে ওই দেনা বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে সমন্বয় করা হয়েছে। ফলে রিজার্ভ কমে গেছে। আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজার খোলা হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ সমন্বয় করবে।
এদিকে গত ৩১ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৩০৭ কোটি ডলার। যা গত বৃহস্পতিবার নিট রিজার্ভ ২ হাজার ২৮১ কোটি ডলারে নেমে আসে। ওই সপ্তাহে রিজার্ভ কমে যায় ২৬ কোটি ডলার।
এলসি দায় ও ঋণ পরিশোধে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করায় রিজার্ভ কমেছে বলে দাবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের।
এবার আকুর দেনা বাবদ ১৩১ কোটি ডলার পরিশোধের পর নিট রিজার্ভ ২ হাজার ১৪৮ কোটি ডলারে নেমে গেল। গত বৃহস্পতিবার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৮৯০ কোটি ডলার। এখন তা ২ হাজার ৭৬১ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
এদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত পাঁচ মাস ধরে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ছিল। গত মার্চে রিজার্ভ ছিল ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। এপ্রিলে তা ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসে।
গত মে-জুন মাসে আকুর দেনা পরিশোধের আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনে রিজার্ভ কিছুটা বাড়িয়ে ২৪ বিলিয়ন ডলারের ওপরে নিয়ে এসেছিল।
কিন্তু জুলাইয়ে আকুর দেনা ১০৯ কোটি ডলার শোধের পর রিজার্ভ আবার জুলাই মাসে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসে।
গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ছিল রিজার্ভ। গত বৃহস্পতিবার তা আরও ২৬ কোটি ডলার কমে ২২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসে। এবার আকুর দেনা পরিশোধের পর আবার নেমে গেল ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
এর আগে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট রিজার্ভ বেড়ে ২ হাজার ৫০৩ কোটি ডলারে উঠেছিল। পরের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা আরও বেড়ে ৩ হাজার ১৭ কোটি ডলারে উঠেছিল।
২০২১ সালের আগস্টে গ্রস রিজার্ভ বেড়ে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠেছিল। এর পর থেকে তা কমতে শুরু করে।
বিশেষ করে আমদানির দায় ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের কারণে রিজার্ভ কমছে। এখন তা গত নয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আকুর সদস্য দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান দুই মাসের বাকিতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্পন্ন করে।
বাংলাদেশ আকুর সদস্য দেশগুলো থেকে পণ্য রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি করে বলে প্রতি কিস্তিতেই দেনা শোধ করতে হয়।
আগে শ্রীলংকাও এর সদস্য ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক মন্দায় দেনা শোধ করতে না পারায় তারা আকুর সদস্য পদটি স্থগিত রেখেছে।