বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখ্যযোগ্যভাবে কমেছে ভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার।
সোমবার (২৩ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য জানা যায়।
তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ হাজার ২৬৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু কমেছে প্রায় ৪০০। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৪ জনে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ইরানে। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুতে বরাবরের মতো শীর্ষে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২১ কোটি ২৫ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৪ লাখ ৪৪ হাজার।
এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৫১ হাজার ৫১০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ২৫ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৭ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ইরানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৪১৯ জন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৮৪ জন। করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৬ লাখ ৭৭ হাজার ১১৪ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ১ লাখ ২ হাজার ৩৮ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৩০ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৪০৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৯ লাখ ৭৯ হাজার ৪৫৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭২ জনের।
এদিকে টানা কয়েকদিন ধরে দৈনিক সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৮১০ জন এবং মারা গেছেন ১৯৮ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৪৫ হাজার ১৪৪ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৩১ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৪০৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার ৮৯১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৫৭৪ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৮৫ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪২০ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ২৪ লাখ ৪৮ হাজার ৯৬৯ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭৮৪ জন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ৬৬ লাখ ১৯ হাজার ৬১১ জন, রাশিয়ায় ৬৭ লাখ ৪৭ হাজার ৮৭ জন, যুক্তরাজ্যে ৬৪ লাখ ৯২ হাজার ৯০৬ জন, ইতালিতে ৪৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৩ জন, তুরস্কে ৬২ লাখ ১৫ হাজার ৬৬৩ জন, স্পেনে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৩ জন, জার্মানিতে ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার ২৪ জন এবং মেক্সিকোতে ৩২ লাখ ১৭ হাজার ৪১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১৩ হাজার ৩১১ জন, রাশিয়ায় এক লাখ ৭৫ হাজার ৪৪ জন, যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩১ হাজার ৬৪০ জন, ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ৭৫১ জন, তুরস্কে ৫৪ হাজার ৫৩৩ জন, স্পেনে ৮৩ হাজার ১৩৬ জন, জার্মানিতে ৯২ হাজার ৪৭৮ জন এবং মেক্সিকোতে ২ লাখ ৫২ হাজার ৯২৭ জন মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।