প্রথমত কেউ যদি আল্লাহ রাসূল (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখেন তাহলে নিশ্চিত ভাবে বুঝে নেবেন আল্লাহ সুবহানাল্লাহ ওয়ালা ওয়ালা আপনাকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসেন । কারণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আল্লাহর রাব্বুল আলামিনের সবচেয়ে প্রিয় নবী এবং রাসূল ছিলেন । আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সূরা আল ইমরান ৩১ নং আয়াতে এর বলেছেন, যদি তোমরা আল্লাহ তালাকে ভালোবাসো তবে আমার নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম কে ভালোবাসো ।আর তাহলেই আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন । সূরা আল ইমরান আয়াত আয়াত নং 31
দেখো বন্ধুরা আল্লাহ তাআলা বলেছেন যদি আল্লাহকে কেউ ভালোবাসে তাহলে যেন নবী করীম (সাঃ) কে অনুসরণ করে । আর নবী করীম (সাঃ) কিন্তু যে সে লোকের স্বপ্নে এসে যান না । যারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা এবং নবী হুকুম-আহকাম পদে-পদে মেনে চলেন শুধুমাত্র তারাই এই সৌভাগ্যের অধিকারী হন । এ বিষয়ে রাসুল (সাঃ) বলেন যে ব্যাক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখল সে নিশ্চিত ভাবে আমাকে দেখলো । কেননা বিতাড়িত শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না । সে ক্ষমতা তাকে দেওয়া হয়নি, আর যে ব্যক্তি আমার ওপর মিথ্যাচারণ করল সে তার অবস্থান দোজকে সুনিশ্চিত করল । অন্য আরেকটি হাদীসে ইরশাদ করেছেন যে আমাকে স্বপ্নে দেখল শীঘ্রই সে আমাকে জাগরণে দেখবে।
অথবা সে যেন আমাকে জাগরনে দেখলো, আর শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না ।সহিহ মুসলিম হাদীস নং, 2266 । এখানে মনে রাখতে হবে যে যাকে ভালবাসে তার সঙ্গলাভে নিজেকে ধন্য মনে করে। তার চাল-চলন ভাব ভঙ্গি এবং কথাবার্তার ধরণ অনুসরণ করে। শুধুমাত্র সেসব ব্যক্তির নবীকে স্বপ্নে দেখে। সব সময় তারা সাক্ষাতের অধিক প্রতীক্ষায় থাকে। আর এভাবেই যুগে যুগে হাজারো নবীপ্রেমিক নবীকে স্বপ্নে দেখেছেন। যে কয়জন নবী করীম (সাঃ) স্বপ্নযোগে দেখেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ,ইমাম আবু হানিফা রহিম আল্লাহ ,আব্দুররাহমান জামি, জামাল উদ্দিন রুমি ,শেখ সাহাদি , সাদ উদ্দিন তাফতাজানি, হযরত শাহ অলিউল্লাহ, আব্দুল আজিজ ,সায়খ জাকারিয়া সহ অসংখ্য নবীপ্রেমী । বর্ণিত আসে ইমাম মালেক (রাঃ),অধিকাংশ রাতে নবী করিম (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখতেন। সুবাহানা আল্লাহ , সত্যিই আল্লাহ পাক তাকে কত সুভাগ্য করেছেন তা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। আর দ্বিতীয়তঃ আপনি যদি স্বপ্নে দেখেন কেউ আপনার সাথে অন্যায় করেছে আর আপনি নির্দ্বিধায় তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ক্ষমা করে দিয়েছেন নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন। এন্ড তদ্রুপ বাস্তবেও যদি আপনি কার ভুল ক্ষমা করে দেন. তাহলে বুঝবেন আল্লাহ পাক আপনাকে অনেক অনেক ভালোবাসেন। আর তার থেকে বেশি শুভ ভাগ্যবান যে আল্লাহ প্রেমিক হয়েছে।আর প্রতি উম্মতে আল্লাহ তাকে ভালোবেসেছেন। সুবহান আল্লাহ। কেননা আল্লাহ তাআলা সূরা আল নুর আয়াত 22 .আল্লাহর ক্ষমাকে ভালোবাসা বিশ্বাসিদের কাজ, সূরা নূর আয়াত নাম্বার 22 .
সূরা আল ইমরান এ আল্লাহপাক বলেন, রবের ক্ষমা লাভের জন্য প্রতিযোগিতা করো। আর প্রতিযোগিতা করে সেই জান্নাত এর জন্য। যার বিশালতায় অসমান জমিনের বিশালতার সমান । যার প্রস্তুতি করে রাখা হয়েছে মুক্তাকীদের জন্য । জান্নাতের উত্তরাধিকারী ভাগ্যবান তারাই। যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল সর্ব অবস্থায় নিজেকে সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে। আর যারা নিজেদের গ্রোথ সংবরণ করে এবং মানুষের অপরাধ ক্ষমা করে দেয়। এটা সৎ মানুষের গুণ. আর সৎ মানুষদেরকে আল্লাহ সব সময় ভালোবাসেন। সূরা আল ইমরান আয়াত 33 থেকে 34 .একবার নিজের সাথে আমরা মিলিয়ে দেখি এর কয়টি গুণ আমরা অর্জন করতে পেরেছি। যদি সত্যিই আমরা আল্লাহর প্রেমিক হতে চাই আর যদি সত্যিই চাই মহান জগতের সৃষ্টিকর্তা ,পালনকর্তা ,রিজিকদাতা ,আল্লাহ আমাকে ভালোবাসেন। তাহলে তো আল্লাহ তালায় ঠিক যেভাবে যেই রিকোয়ারমেন্ট গুলো দিয়েছেন তাঁর প্রত্যেকটি আমার মধ্যে বাস্তবায়িত করতে হবে। অর্থাৎ স্বপ্ন যদি আপনি দেখেন আপনি কাউকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
আপনি অসহায় কে দান করেছেন নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন ইত্যাদি। স্বপ্ন দেখার পর আপনি যদি উক্ত কাজগুলো করে যেতে পারেন তাহলে বুঝবেন আপনি আল্লাহ খুব ভালোবাসা একজন মানুষ। নবীজির (সাঃ) ,বলেন যে ব্যক্তি নিজের চরিত্র তার কারণ চরিতার্থ করার ক্ষমতা থাকা সত্যেও অর্থাৎ নিজের রাগকে বাস্তবায়ন করার অধিকার এবং ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা সম্বোধন করে। আল্লাহ তাকে কেয়ামতের দিন সমগ্র সৃষ্টি সামনে ডেকে আনবেন এবং জান্নাতের যেকোনো দরজা নিজের ইচ্ছেমতো বেছে নেওয়ার অধিকার দান করবেন সুবহানা আল্লাহ !
রাসুল পাক (সাঃ), আরো বলেন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বান্দর গ্রোদ সুম্বরণে যে মহান প্রতিদান রয়েছে তার অন্য কোনো কিছুতেই নেই ।ইবনে মাজাহ 4189 নং হাদিস। অবশ্য একই বিষয়ের ওপর আবু হুরাইরা (রাঃ), থেকে আরেকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন আল্লাহর রাস্তায় দান করলে সম্পদ কমে না।আর ক্ষমার দ্বারা আল্লাহর বান্দা মর্যাদা বৃদ্ধি হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ। অথচ আমরা অনেকেই ভাবি সে আমার সাথে এমন কাজ করলো আর আমি চুপ থাকলাম।লোকে কি বলবে আমি কাপুরুষ ,না ভাই বরং আপনি যদি দাঁত কামড়ে পড়ে থাকতে পারেন। আর সে মহান প্রভু আল্লাহতালা উদ্দেশ্যে তার সন্তুষ্টির জন্য সে ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন দিয়ে তার সাথে মিষ্টি মুখে কথা বলতে পারেন।
তবে ধরে নিন আপনি আল্লাহপাকের ভালোবাসা একজন বান্দা হয়ে গিয়েছেন। কেননা সহিমুসলিম আছে যে আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিরহ অবলম্বন করে আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেন।আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন ক্ষমা আর উদারতার একটি শ্রেষ্ঠ অবদান । সাহাবা ইকরাম (রাঃ),আল্লাহ রাসুলের কাছ থেকে ক্ষমার মহৎ গুঁটি যথাযথ যথার্থই আয়ত্ত করতে পেরেছিলেন । হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক (রাঃ),উম্মতে মোহাম্মদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে তার জীবনে ক্ষমতার কোনটি অধিক উজ্জ্বলতা প্রতিবাদ হয়েছে। এ বিষয়ে একটি বিশেষ ঘটনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পেয়েছে। একবার উম্মুল মমিনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিক (রাঃ), এর বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে ব্যবিচারের অপবাদ দেয়া হয়েছিল। আর এই অপবাদ ঘটনায় যারা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল। তাদের মধ্যে একজন ছিল হযরত আবু বক্কর (রাঃ), এর একেবারেই নিকট আত্মীয় মেস্তাহ (রাঃ), আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন.উল্লেখ্য অযোধ্যার রাজা ছিলেন খুবই দরিদ্র দৈনন্দিন জীবনযাপনের সংস্থা ও তার ছিল না। হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক (রাঃ) প্রতি মাসে এর জন্য নির্দিষ্ট হারে অনুদান দিতেন।
নবী পত্নী এবং নিজের ওরসজাত ভালোবাসার কন্যা হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ), এর বিরুদ্ধে অপবাদ রটনার তার ভূমিকার কথা জানতে পেরে হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক (রাঃ) মেস্তাহ কে ভবিষ্যতে অনুদান না দেয়ার শপথ করেন। এবং তা বন্ধ করে দেন। তখন আল্লাহ তাআলার পবিত্র কোরআনের আয়াত নাযিল করেন।তোমাদের মধ্যে যারা দিনে মর্যাদাও প্রার্থী প্রচারজের অধিকারী তারা যেন এই মর্মে শপথ না করে যে যে তারা তাদের গরীব আত্মীয়-স্বজন অভাবগ্রস্ত এবং যারা আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করেছে তাদেরকে কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করবে না। বরং তাদের উচিত তারা যেন তাদের ক্ষমা করে দেয়। এবং তাদের দোষ ত্রুটি অপেক্ষা করে।তোমরা কি চাও না যে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। আল্লাহ তো ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। সূরা আন নূর আয়াত 22 তৃতীয়তঃ কেউ যদি স্বপ্নে দেখেন যে সে পিতা মাতার খেদমত করেছেন পিতা-মাতার সাথে হাসিমুখে কথা বলেছেন এবং পিতা-মাতা আপনার উপর সন্তুষ্ট।
আর এরূপ স্বপ্ন দেখার পর আপনি বাস্তবেও যদি পিতামাতার সাথে ভালো ব্যবহার করেন। আর তাদের মনে আঘাত লাগে এমন কোন কথা না বলেন। তাহলে আপনি বুঝে নেবেন আল্লাহ আপনার উপর সন্তুষ্ট। আর আল্লাহ কারো উপর সন্তুষ্ট থাকার মানেই হলো আল্লাহ তাকে পছন্দ করেন। আল্লাহ তাকে ভালবাসেন।যেমন আল্লাহ সুবহান যেমন আল্লাহ সূরা বনী ইসরাইলের 23 নং আয়াতে বলেন। তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে তোমরা তিনি ছাড়া অন্য কারও এবাদত করবে না। এবং পিতা-মাতার প্রতি সৎ ব্যবহার করবে। তাদের একজন বা উভয় তোমার জীবন দশায় পার্থক্যের উপনীত হলেও তোমাদের বিরক্তিসূচক কিছু বলো না।এবং তাদেরকে ভৎসনা করোনা তাদের সাথে কথা বলো। সমস্ত সূচকও নম্র ভাবে সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত নং 23 …এ প্রসঙ্গে রাসুল পাক সাল্লাম বলেন পিতা-মাতা সন্তুষ্টির উপর আল্লাহ সন্তুষ্টি।আর পিতা-মাতার সন্তুষ্টির উপর আল্লাহর সন্তুষ্টি নির্ভর করেছে। আল্লাহর তাআলার কৃতজ্ঞতা আদায় করা যেমন অতীব জরুরী। অনুরূপভাবে পিতা-মাতার কৃতজ্ঞতা আদায় করা ও সন্তানের জন্য অতীব জরুরী। তাফসীরে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আজকাল দেখা যায় অনেকেই পিতা-মাতার চেয়েও পীর বাবার সেবা নিয়ে বেশী ব্যস্ত থাকে। অথচ শরীয়তে সবচেয়ে বড় হচ্ছে পিতা-মাতা। এর প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে রয়েছে একজন ব্যক্তি রাসূল (সাঃ,) কে প্রশ্ন করেছেন আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় কাজ কোনটি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেন সময় মত নামাজ পড়া।তিনি আবার এ প্রশ্ন করলে তারপর কোন কাজটি সর্বাধিক প্রিয়। রাসুল (সাঃ,) বলেছেন পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা তিনি আবারো প্রশ্ন করলেন এরপর কোন কাজটি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। রাসূল (সাঃ,) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। -সহি বুখারি।আর এ হাদিস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রতি প্রতীয়মান হয় যে দিনের অন্যতম ইস্তম্ভ নামাজ পড়ার পরেই আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় কাজ হলো পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা।
হযরত আবু ওমরের (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে এক ব্যক্তি রাসূলের (সাঃ,) জিজ্ঞেস করলেন সন্তানের উপর পিতা মাতার দায়িত্ব কি রাসুল (সাঃ,) বলেন তারা উভয়ে তোমার জান্নাত অথবা জাহান্নামই।এমন কি যদি কারো পিতা-মাতা ও মুসলিম হয় তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার জন্য ইসলাম জোর নির্দেশনা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইমাম বুখারী শরীফের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস বর্ণিত রয়েছে।হযরত আসমা বিনতে আবু বক্কর রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমার মা মুসিক অবস্থায় আমার নিকট আসেন আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ,) কে জিজ্ঞেস করলাম ইয়ারাসুলাল্লা আমার মা আমার নিকট দেখা করতে আসেন আমি কি তার সাথে সৎ আচরণ করতে পারবো।রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বললেন অবশ্যই তার সাথে সদ্ব্যবহার করো। তাহলে বুঝতেই তো পারছেন পিতা-মাতাকে কোন অবস্থায় কষ্ট দেয়া যাবে না। তাহলে আল্লাহ ভালোবাসা আর নবী থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন।
তো বন্ধুরা এটি লেখার শেষ করার আগে ছোট্ট একটি প্রশ্ন করব তো প্রশ্নটির উত্তর জানা থাকলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন। বলুনতো কোন ব্যক্তির রূপ শয়তান ধারণ করতে পারে না।উত্তরটি জানা থাকলে এখনই আমাদেরকে কমেন্ট করুন এবং এই ভিডিও টি শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেদের দেখার সুজুক করে দিন আমিন !!!!