আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ ঘুমাতে গিয়ে যেমন ঘুম আসেনা, তেমনি ঘুম থেকে উঠতে গিয়েও শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। বিশেষত শীতের সকালে গরম কম্বলের নিচ থেকে বের হওয়া যেন এক মানসিক যুদ্ধ।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, শুধু আবহাওয়ার তাপমাতা পরিবর্তনের কারণেই যে এমনটা হয় তা নয়। আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হল ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে শরীরের ‘মেলাটনিন’ উৎপাদনের মাত্রাতেও পরিবর্তন আসে, যে কারণে বিছানা ছাড়তে আলসেমি বাড়ে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল বিস্তারিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘুম বিশেষজ্ঞ ওয়েইন রস বলেন, “মেলাটনিন’ হল একটি হরমোন যা নিঃসৃত হয় মূলত ‘পিনিয়াল’ গ্রন্থি থেকে। এর কাজ হল ‘সার্কাডিয়ান রিদম’ অর্থাৎ শরীরের দিন-রাতের চক্র এবং ঘুমানো ও জেগে থাকার চক্র নিয়ন্ত্রণ করা।”
সনদপ্রাপ্ত ‘স্লিপ সাইন্স কোচ’ এবং ‘স্লিপিং ওশন’য়ের প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্স স্যাভি জানান, “শরীরে কতটুকু ‘মেলাটনিন’ প্রস্তুত হবে তা নির্ভর করে শরীর কতটুকু আলো সংস্পর্শে থাকছে তার ওপর। যতবেশি অন্ধকারে থাকবেন, তত বেশি ‘মেলাটনিন’ নিঃসৃত হবে।”
রস বলেন, “আমরা রাতে ঘুমাই তার কারণই হল দিনের বেলার তুলনায় রাতের বেলায় ‘মেলাটনিন’ নিঃসরণের মাত্রা ১০ গুন বেশি। আর একই কারণে শীতকালে যখন দিন ছোট হয়, রাত বড় হয়, অন্ধকারের মাত্রা বাড়ে, তা স্বভাবতই ওই ঋতুতে শরীরে ‘মেলাটনিন’য়ের নিঃসরণ বাড়ায়। এজন্যই শীতকালে আমাদের ঘুমাতে ইচ্ছা হয় বেশি, ঘুম হয়ও বেশি। পাশাপাশি ওই ঋতুতে শরীরে বাড়তি আলসেমি দেখা দেওয়ার সঙ্গেও সরাসরি জড়িত এই হরমোন।”
স্যাভি বলেন, “ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরও বিছানা থেকে উঠতে আলসেমি হওয়ার পেছনেও দায়ি হরমোন। ডাক্তারি ভাষায় এতে ‘সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজওর্ডার (এসএডি)’ বলা হয়।”
উচ্চমাত্রায় ‘মেলাটনিন’ আর অপর্যাপ্ত ‘সেরোটনিন’- এই দুই হরমোনের প্রভাব ‘এসএডি’ দেখা দেয়। আর দুই হরমোনই আলো বিশেষত, সূর্যের আলোর ওপর নির্ভরশীল।