লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অপমান ও ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে বেতন ভাতা বন্ধ রাখার প্রতিবাদে মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার না দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অমূল্য কুমার রায়।
এ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন জানালেও এখনও কোন সুরহা করেনি প্রশাসন।
গার্ড অব অনার না দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউঞ্চিল, লালমনিরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার, হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হাতীবান্ধা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বরাবরে উক্ত আবেদন করেন।
ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা অমূল্য কুমার রায় উপজেলার মধ্য গড্ডিমারী এলাকার মৃত খগেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে। জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা অমূল্য কুমার রায়ের ছেলে বিপুল চন্দ্র গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম পুলিশে কর্মরত আছেন।
প্রায় ২২ মাস আগে ওই এলাকার মৃত দেলোয়ারের ছেলে রবিউল ইসলামসহ আরও কয়েকজন ছিনতাইয়ের অভিযোগে বিপুল চন্দ্রকে গড্ডিমারী হাট থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। এ সময় খবর পেয়ে বিপুলের বাবা অমূল্য কুমার সেখানে গেলে তাকেও হেনস্তা করেন এবং রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে ছিনতাই মামলা দিয়ে বিপুলকে থানায় দেন।
এদিকে ওই অভিযোগের ঘটনায় কোন প্রমাণ না মিললেও ২২ মাস থেকে তার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা অমূল্য কুমার রায় বলেন, ‘আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার ছেলে গ্রাম পুলিশে কর্মরত। তার বেতন আর আমার ভাতা দিয়ে কোন রকম সংসার চলতো। কিন্ত কোন কারণ ছাড়াই আমার ছেলের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ দেয়।’
‘এমনকি তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। আমি সেখানে গিয়ে জানতে চাইলে আমাকেও হেনস্তা করে। সেই থেকে আমার ছেলের বেতন বন্ধ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে দিনপার করছে। কিন্ত এভাবে আর কত দিন। আমি বেঁচে থাকতে যদি সম্মান না পাই, তাহলে মরে গিয়ে সম্মান পেয়ে কি করবো? আমি আমার মৃত্যুর পরে গার্ড অব অনার চাই না।’
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বিপুল চন্দ্র বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা দেয়। আমি ২২ মাস থেকে বেতন পাইনা। কষ্টটা আমি বুঝি। সেই অভিযোগটা মিথ্যা প্রমাণ হওয়ার পরেও কেন আমার বেতন বন্ধ? আমিতো থানায় গিয়ে হাজিরা খাতায় নাম স্বাক্ষর করে আসতেছি। এছাড়া আমার যে বেতন ভাতা বন্ধ সে রকম কোন নোটিশও আমি পাইনি। তাহলে কেন বেতন বন্ধ?’