উঠে এসেছেন অজপাড়া গাঁ থেকে। নিজেকে বিকশিত করেছেন আপন আলোয়। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নানার হাত ধরে বাবা-মা হারানো স্মৃতিমণি আজ প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন ঢালিউডের ডাকসাইটে সুন্দরী নায়িকা পরীমনি হিসেবে।
সিনেমার সংখ্যা সব মিলিয়ে ৩০টির মতো। অর্থনৈতিক সাফল্যের মুখ না দেখলেও পরীর ক্যারিয়ারে আছে প্রশংসা পাওয়া কিছু সিনেমা। যার মধ্যে ‘স্বপ্নজাল’, ‘রক্ত’, ‘স্ফুলিঙ্গ’-দের এগিয়ে রাখা যায়।
সম্প্রতি তিনি কিছু সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন, যা তাকে আরও প্রশংসিত করতে পারে। সেগুলো হলো ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’, ‘প্রীতিলতা’। তার মধ্যে প্রথমটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয়টি শিগগিরই শুটিংয়ে যাবে।
পরীমনির সৌন্দর্য আছে, গ্ল্যামার আছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় লাখ লাখ ভক্ত অনুরাগী আছে। এশিয়ার সেরা প্রভাবশালী তারকা হয়ে দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেয়ার গর্বও আছে পরীমনির। এই পরীর কিছু ত্রুটিও আছে।
সেই ত্রুটির দায় নিয়ে তিনি সম্প্রতি কারাভোগ করেছেন। ৪ আগস্ট মাদকসহ বনানীর নিজ বাড়ি থেকে আটক হন। ৫ আগস্ট গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে। নানা ঘটনার পরিক্রমায় তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বাসায় ফিরলেন আজ (১ সেপ্টেম্বর) ২৮ দিন পর।
তাকে একনজর দেখতে হাজির হয়েছিলেন অনেক ভক্ত অনুরাগী। কাশিমপুর কারাগারের সামনে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। তাকে বরণ করতে গিয়েছিলেন তার কাছের কিছু মানুষও। পরীমনি কারাগার থেকে বেরিয়ে এলেন। অনেকেই হয়তো ভাবছিলেন হতাশ, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত পরীমনির মলিন মুখ দেখবেন।
কিন্তু পরীমনি ধরা দিলেন সবাইকে অবাক করে মুখ ভরা হাসি নিয়ে। হুড খোলা একটি গাড়িতে কাশিমপুর থেকে ঢাকায় ফিরলেন। তার কারা ফটকের সামনে ভক্তদের অনেকের সঙ্গেই হাত মেলান, তাদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান এ অভিনেত্রী। মাথায় সাদা ওড়না বেঁধেছেন পাগড়ির মতো করে। চোখে সানগ্লাস।
তবে এসব ছাপিয়ে দৃষ্টি কেড়ে নিলো পরীমনির হাতে মেহেদিতে লেখা একটি ইংরেজি বাক্য। ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’; ‘আমাকে ভালোবেসো না….’।
একদিকে লোকের ভালোবাসা গ্রহণ করে হাত নাড়ছেন হাসিমুখে। অন্যদিকে হাতে মেহেদির রঙে লেখা গালি দেয়া বার্তায় জানাচ্ছেন তাকে কেউ যেন ভালো না বাসে! কিন্তু কেন? অভিমানে?
রহস্যময় সেই উত্তর জানা যায়নি। পরীমনি হয়তো জানাবেন শিগগিরই। কিংবা মুখে বলবেন না কোনো দিনই কার উদ্দেশ্যে বা কাদের উদ্দেশ্যে ভালো না বাসার এ বার্তা নায়িকার।
বিষয়টি তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকে দাবি করছেন, কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত, সহকর্মী ও সিনেমা সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিই হয়তো এ বার্তা পরীমনির। যারা তার আটক হওয়ার পর আর খোঁজ রাখেননি, পরীমনির জন্য কথা বলেননি। বরং দাবি করেছেন পরীমনির শাস্তি হওয়াটাই স্বাভাবিক।
ভক্তদেরও অনেকে পরীকে উপহাস করেছেন আটক হওয়ার পর। ৯০ লাখ ফ্যান ফলোয়ারের মালিক পরীমনি তার ভক্তদের প্রতিক্রিয়া নিয়েও হয়তো খুশি নন। হয়তো তাদেরও একটা বার্তা দিয়ে রাখলেন।
এ বার্তার সঠিক উত্তর কেবল পরীমনিই জানেন! অপেক্ষা করা যাক, সেই জবাব তিনি প্রকাশ করেন কি না। কারাভোগ করে জামিনে ফিরে আসা পরীমনির সবকিছু নিয়েই এখন সবার আগ্রহ। এ আগ্রহ কিছুটা ভালোবাসার, কিছুটা সমবেদনার, কিছুটা স্বভাবজাত রহস্যময় মানুষ পরীমনির জন্য।