আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবি হলে (চরিত্র রক্ষার জন্য যদি বিয়ে করে তবে) আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী’। (সূরা: নুর, আয়াত: ৩২)।
নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক হাদিসে বলেন, ‘হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে নেয়, কেননা তা চক্ষুকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান রক্ষা কর ‘। (বুখারি, হাদিস: ৫০৬৬; মুসলিম, হাদিস : ১৪০০)
আরেক হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আলী (রা.)-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘হে আলী! তিনটি জিনিসের ক্ষেত্রে বিলম্ব করবে না। ১. নামাজের যখন সময় আসবে তখন নামাজ আদায় করা থেকে দেরি করবে না। ২. মৃত ব্যক্তির জানাজা যখন উপস্থিত হবে তখন কাফন-দাফন সম্পন্ন করতে দেরি করবে না। ৩. কোনো অবিবাহিতা মেয়ের জন্য যখন কোনো উপযুক্ত পাত্র পাবে তখন তাকে পাত্রস্থ করা থেকে বিলম্ব করবে না’। -(তিরমিজি ১/২০৬)
আরো পড়ুন:ইবাদত থেকে মনোযোগ উঠে যায় যেসব কারণে
বিয়ের আগে বর-কনের দুই পরিবার আনুষাঙ্গিক ভালো-মন্দ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। বর-কনে একে অপরকে পছন্দ করার উদ্দেশে দেখে থাকেন। বিয়ের নিয়তে বিয়ের আগে বর-কনের সাক্ষাৎ ইসলাম অনুমোদন করে। বিয়ের আগে পাত্রী দেখে নেওয়া সুন্নত।
বর্তমান তথ্য প্রযু্ক্তির যুগে অনেক সময় সরাসারি বর-কনে একে অপরকে না দেখে বিভিন্ন ভিডিও চ্যাট মাধ্যমে কথা বলেন। প্রবাসীরা অনেক সময় দেশে আসতে না পারায় ভিডিও কলে কনের সঙ্গে কথা বলেন এবং ভিডিও কলেই বর-কনে একে অপরকে দেখে থাকেন পছন্দ করার নিয়তে।
প্রবাসে থাকার কারণে অথবা অন্য কোনো কারণে সরাসরি দেখা করতে না পারলে ভিডিও কলে বর-কনের সাক্ষাতের সুযোগ রয়েছে।
তবে সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন অন্য কোনো পুরুষ তার চেহারা না দেখে এবং মেয়ের কোনো গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ না হয়।
নিরাপত্তার খাতিরে উত্তম হলো- কোনো দ্বীনদার মাহরাম নারীকে সামনে রেখে পাত্রীকে দেখা, যাতে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্ত থাকা সহজ হয়।
হাদিস শরিফে এসেছে, ‘মুগীরাহ ইবনু শুবাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে এক নারীকে বিয়ে করার ব্যাপারে আলাপ করলাম। তিনি বলেন, তুমি যাও এবং তাকে দেখে নাও। হয়তো এতে তোমাদের দুজনের মধ্যে ভালোবাসার সৃষ্টি হবে।
এরপর আমি এক আনসার নারীর মা-বাবার কাছে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলাম এবং সঙ্গে সঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসও তাদের অবহিত করলাম। কিন্তু মনে হলো তার মা-বাবা এটা অপছন্দ করলেন।
রাবী বলেন, মেয়েটি পর্দার আড়াল থেকে এই হাদিস শুনে বললো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনাকে পাত্রী দেখার আদেশ দিয়ে থাকলে আপনি দেখে নিন। অন্যথায় আমি আপনাকে শপথ দিচ্ছি (যেন না দেখেন)। কনে যেন ব্যাপারটিকে অভিনব মনে করল। রাবী বলেন, আমি তাকে দেখে নিলাম এবং তাকে বিবাহ করলাম। পরে মুগীরাহ (রা.) তাদের উভয়ের মাঝে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে’। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস: ৩২৩৫)