বিপদের মুখে আফগান ক্রিকেট দল

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ তালেবানের হাতে আফগানিস্তান চলে যাচ্ছে-এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল বেশ কয়েক দিন ধরেই। একের পর এক প্রদেশ দখল করে রাজধানী কাবুলের দিকে এগিয়ে আসছিল চরমপন্থী তালেবান যোদ্ধারা। কাল রাজধানী কাবুলের চারদিক ঘিরে ফেলে তারা। তাদের হাতে কাবুলের প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের নিয়ন্ত্রণও চলে গেছে বলে দাবি করা হয়। প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিও কাবুল ছেড়ে তাজিকিস্তানে চলে গেছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলো।

তালেবান দখলদারত্বে আফগানিস্তানজুড়েই যখন নৈরাজ্য, দলে দলে লোকজন যখন দেশ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে পালাচ্ছে, ঠিক তখন দেশটির খেলাধুলার ভবিষ্যৎ, নির্দিষ্ট করে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠে গেছে প্রশ্ন। খবরে প্রকাশ, এরই মধ্যে নাকি আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি ক্রিকেট মাঠ দখল করে নিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা।

সপ্তাহজুড়ে আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ দখলে নিচ্ছে তালেবান। কান্দাহার, কুন্দুজ ও খোস্তের তিনটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পুরো নিয়ন্ত্রণ তালেবান নিয়ে নিয়েছে। মাজার-ই-শরিফ ও কাবুলের দুটি স্টেডিয়ামও পতনের মুখে। জালালাবাদে আফগান সরকারের তৈরি গাজি আমানুল্লাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম যেকোনো সময়ই দখল করে নেবে তালেবান যোদ্ধারা।

এমন অবস্থায় আফগান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্রিকেট দুনিয়ার উদীয়মান শক্তি আফগানিস্তান এখন টেস্ট পরিবারের অন্যতম সদস্য। আগামী অক্টোবরে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও আফগানিস্তানকে ‘ডার্ক হর্স’ বলছেন অনেকেই। দেশের অভ্যন্তরে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি, নিয়মতান্ত্রিক সরকারের পতন, উগ্রবাদীদের উত্থানে শঙ্কা জেগেছে দেশটির খেলাধুলার অবস্থা নিয়ে।

এ মুহূর্তে আফগানিস্তান ক্রিকেটের দুই তারকা রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবী আছেন ইংল্যান্ডে। সেখানে দ্য হান্ড্রেড ক্রিকেটে খেলছেন তাঁরা। এ দুই তারকাই আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের খেলোয়াড়। একই দলে খেলছেন আরেক আফগান ক্রিকেটার মুজিব-উর-রহমান।

রশিদ আর নবী এরই মধ্যে টুইটারে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। কয়েক দিন আগে রশিদ টুইটারে লেখেন, ‘আমার দেশে নৈরাজ্য চলছে। প্রতিদিন নারী, শিশুসহ হাজারো নিরীহ মানুষ শহীদ হচ্ছে। ঘরবাড়ি ধ্বংস হচ্ছে। হাজারো পরিবার ঘরছাড়া হচ্ছে। আমাদের এমন অবস্থায় ছেড়ে যাবেন না। আফগান হত্যা বন্ধ করুন। আফগান পতাকা ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করুন। আমরা শান্তি চাই।

এদিকে পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমকে এক শীর্ষ তালেবান নেতা বলেছেন ক্রিকেটের সঙ্গে তালেবানের কোনো বিরোধ নেই, ‘আমরা ক্রিকেটের বিরোধী নই, আমরা বরং ক্রিকেটের আরও উন্নতি করব। ভুলে গেলে চলবে না, আফগানিস্তানে ক্রিকেট আমরাই এনেছিলাম।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে প্রথম তালেবান শাসনামলেই ক্রিকেট দেশটিতে জনপ্রিয়তা পায়। সে সময় চরমপন্থী তালেবান শাসকেরা অন্য খেলাধুলার প্রতি খড়্গহস্ত হলেও ক্রিকেট নিয়ে নীরব ছিলেন।

Leave a Reply

Translate »