আইকনিক ফোকাস ডেস্কঃ ক্রিকেটের সেরা বাহাতি ওপেনার তামিম ইকবালকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এক ধুম্রজাল। পিঠের হাড় ক্ষয়ের কারণে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে খেলবেন কিনা তা নিয়ে আছে অনিশ্চয়তা। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের মাঝপথেই হুট করেই ঘোষণা দিলেন অবসরের। আবার ২৮ ঘণ্টা পর সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরেও আসেন তিনি। এরপর চলে যান দেড় মাসের ছুটিতে। লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আসেন। আসন্ন এশিয়া কাপ দিয়ে ফেরার কথা ছিল তার।
লন্ডনে গিয়ে ধরা পড়ে মেরুদণ্ডের হাড়ে ক্ষয় হয়েছে। আপাতত ইনজেকশন নিয়ে হাড় ক্ষয়ের চিকিৎসা শুরু করেছেন তিনি। ইনজেকশন নেওয়ার পর যদি উন্নতি হয় ইনজুরির, তবেই তামিম ২২ গজে ফেরার সবুজ সংকেত পাবেন। না হলে তাকে যেতে হবে অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে। যার ফলে তিনি নিশ্চিতভাবেই ছিটকে যাবেন এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ থেকে।
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটপাড়ায় আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু তামিমের প্রত্যাবর্তন। ইনজেকশনে কি শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি সেরে উঠবেন দেশসেরা এই ওপেনার? ফিরলেও থাকবেন কি অধিনায়ক পদে? প্রশ্ন অনেক কিন্তু এখন পর্যন্ত নেই সেগুলোর কোনো উত্তর।
চিকিৎসা শেষে গত সোমবার (৩১ জুলাই) দেশে ফিরেছেন তামিম। দেশে ফিরে দুইদিন বিশ্রামের পর ক্রিকেট অপেরেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা তার। সেখানেই নিজের পরিকল্পনা চূড়ান্তভাবে জানানোর কথা তামিমের।
মূল সন্দেহের জায়গাটি হলো, তামিম নিজেও নিশ্চিত না যে তার পিঠের ব্যথা ফিরে আসবে না। এমনকি এটা নিশ্চিত নয় বোর্ডের মেডিক্যাল ইউনিটও। মেডিক্যাল ইউনিটের না জানাটাই স্বাভাবিক। কেননা প্রথম দিকে তামিমের এই হাড়ক্ষয়ের বিষয়টি তারা ধরতেই পারেনি। সাধারণ ব্যথা বলেই চালিয়ে দিয়েছেন লম্বা সময়। যে কারণে দিনে দিনে বেড়েছে সেই ক্ষত। গিয়েছে বাজে অবস্থায়।
এশিয়া কাপ দিয়ে যদি ফেরেনও বাঁহাতি এই ব্যাটার, খেলা কত দিন চালিয়ে যেতে পারবেন—সেই বিষয়েও রয়েছে সন্দেহ। আর এই বিষয়টিই সৃষ্টি করেছে ধুম্রজালের।
আরো পড়ুনঃ অ্যাশেজ সিরিজে আবার বল বিতর্ক, তদন্তের দাবি রিকি পন্টিংয়ের
এদিকে বোর্ডের পরিচালক ও স্টেকহোল্ডারদের একটি বড় অংশের দাবি অধিনায়কত্বের চাপ সামলাতে না পেরেই নাকি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তামিম। এমনকি কয়েকমাস আগে ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনূসের কাছেও নাকি অধিনায়কত্ব করবেন না বলে জানিয়েছিলেন তিনি। সে সময় জালালের অনুরোধেই নাকি অধিনায়ক হিসেবেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু বিসিবির কর্তাদের মন তো ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো আকাশের মতো। যে কারণে প্রথমে অনুরোধ করলেও সাম্প্রতিকসময়ে এসে পুরো ভিন্নরূপে প্রতীয়মান তারা। বোর্ড কর্তারা এখন অধিনায়কত্বে পরিবর্তন চান। খেলায় মনোযোগ দিতে গিয়ে স্বেচ্ছায়ও যদি তামিম সরে যান তাতেও কোনো সমস্যা নেই। বরং সেটিকেই বুদ্ধিমানের সিদ্ধান্ত হিসেবে মনে করছেন বোর্ড পরিচালকরা।
ভেতরকার খবর, ইতোমধ্যেই অধিনায়কত্ব ইস্যুতে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বোর্ড। তবে শুধুমাত্র এশিয়া কাপের জন্য অধিনায়কত্ব করতে রাজি নন সাকিব। অধিনায়কত্ব তাকে দেওয়া হলে যেন লম্বা সময়ের জন্য দেওয়া হয়, সেটি তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বোর্ডকে। শুধু এশিয়া কাপ বা শুধু বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিতে নারাজ তিনি।
তবে ক্রিকেটবোদ্ধাদের অভিমত, অধিনায়কত্বের বিষয়টি অতিসত্ত্বর পরিষ্কার হওয়া উচিত। যদি তামিম অধিনায়কত্ব নাই করেন—তবে বোর্ডের নতুন কাউকে খুঁজে নিতে হবে। দিতে হবে নতুন অধিনায়ককে পর্যাপ্ত সময়।
এখন শুধুই অপেক্ষা, কবে তামিমের থেকে আসবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। অধিনায়ক হিসেবে থাকছেন নাকি থাকছেন না।