আইকনিক ফোকাস ডেস্কঃবিগত ধরে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়ে চললেও সেদিকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যার ধরুন এ বছর ডেঙ্গুর প্রভাব প্রকট হয়ে উঠেছে ।আগের বছর গুলর তুলনায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করেছে ।
জনস্বাস্থ্য ডা. বে-নজির আহমেদ জানান, ‘বর্তমানে ডেঙ্গুর যে পরিস্থিতি তাতে আমরা শিগগিরই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব বা ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমানো যাবে, বিষয়টা তেমন নয়। বর্তমান পরিস্থিতি ২০১৯ সালের চেয়েও ভয়াবহ দিকেই যাচ্ছে।’
বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডেঙ্গু রোগীর ব্যবস্থাপনায় বেশি জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়ে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমাদের ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এ ছাড়া ডেঙ্গু রোগীর ব্যবস্থাপনায় ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।’
আরও পড়ুন ঃ ভারতে ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশকে দোষারোপ
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সারা বছরই প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম জারি রাখার কথা বলা হচ্ছে।
ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি রোগীর মৃত্যু হয় ২০২২ সালে। সে বছর ৬১ হাজার রোগীর মধ্যে মারা যান ২৮১ জন। তার আগের বছরেও ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক ছিল। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছিল ২০১৯ সালে। আর এ বছর মৌসুমের আগেই ২০২২ সালের পরিসংখ্যানের কাছাকাছি চলে এসেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘আসলে গত বছরের সঙ্গে এ বছরের মধ্যে ডেঙ্গু রোগী আসার ক্ষেত্রে কোনো বিরতি ছিল না। শীতকালেও আমরা রোগী পেয়েছি। এবার মৌসুম শুরু হওয়ার এক-দেড় মাস আগে থেকেই আমরা অনেক বেশি রোগী পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আক্রান্তদের মধ্যে ডেঙ্গুর চারটি ধরন বা সেরোটাইপ পাওয়া যাচ্ছে। যারা আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের মধ্যে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাই বেশি। ২০০০ সালের আগে আমরা দেখেছি, মানুষজন ডেঙ্গুর একটা ধরনে আক্রান্ত হতো। ফলে তাদের মধ্যে একটা প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে উঠত। কিন্তু যখন মানুষ চারটি ধরনেই আক্রান্ত হতে শুরু করে, তখন প্রতিরোধক্ষমতা তেমন কাজ করে না। তখন সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি তিন গুণ বেড়ে যায়।’
ডা. বে-নজির বলেন, ‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় যে ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তা অনেকটা গতানুগতিক। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এটা হয়তো সাময়িক একটা রোগ, কিছুদিন পরই চলে যাবে। ফলে কার্যকর বা দীর্ঘমেয়াদি কোনো ব্যবস্থা কোথাও নেয়া হচ্ছে না। ফলে ডেঙ্গু একেবারে জেঁকে বসেছে। যে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়া দরকার, তা হচ্ছে না। এটা যে একটা মহামারি, তেমন করে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।’
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্য বছরের তুলনায় এই বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেক আগেই এসেছে। এটা এখন সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এটা মহামারির দিকে যাচ্ছে। এখন দেশে একটা জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটা মোকাবিলায় গতানুগতিক পদক্ষেপ বাদ দিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া দরকার। না হলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না।