গরু হত‌্যার অভিযোগে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গত ২১ জুন প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী দ্বন্দের জেরে জীবিত একটি গরুর তিনটি পা ও মাথা কেটে হত‌্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সাত জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন গরুর মালিক মো. শাহজাহান মিয়া।

সোমবার (২৬ জুলাই) হত্যার শিকার গরুটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রাণি সম্পদ অফিসে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এর আগে গত রোববার (২৫ জুলাই) বরগুনা সদর উপজেলার ১০ নম্বর নলটোনা ইউনিয়নের গোড়াপদ্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মামলার আসামিদের মধ‌্যে ছয় জন হলেন— নলটোনা ইউনিয়নের কুমিরমারা এলাকার শুক্কুর আলী, আমীর আলী, ইয়াকুব, রাসেল, ফয়সাল ও খোকন মিয়া। মামলার স্বার্থে অপর একজনের নাম উল্লেখ করেনি পুলিশ।

গরুর মালিক শাহজাহান মিয়া রাইজিংবিডিকে জানান, রোববার (২৫ জুলাই) সকালে গরুগুলো গোয়ালঘরে বেঁধে পাথরঘাটা উপজেলায় ছেলের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সোমবার (২৬ জুলাই) বিকালে স্থানীয়রা নদীর পাড়ে গরুটির তিনটি পা ও মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে খবর দেন।

শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘২১ জুনের ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রার্থী শহীদুল ইসলামের সমর্থন না করায় তিনি ক্ষিপ্ত হন। নির্বাচনে বিপুল ভোটে হেরে গিয়ে শহীদের নেতৃত্বে শুক্কুর আলী, আমীর আলী, ইয়াকুব, রাসেল, ফয়সাল, খোকন মিয়া ও আরও একজন মিলে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। গরুটি যখন তারা আমার গোয়াল ঘর থেকে নিয়ে যাচ্ছিলো, তখন প্রতিবেশীরা বাঁধা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের আটকাতে পারেনি।

শাহজাহানের স্ত্রী লাইলী বেগম বলেন, ‘কোরবানীতে এই গরুটির দাম উঠেছিল এক লাখ ২০ হাজার টাকা। আমরা দুই লাখ দাম চেয়েছিলাম। দাম আরও বেশি হতো। করোনার কারণে দাম ওঠেনি। একটু লাভের আশায় গরুটি রেখে দিয়েছিলাম। আমাদের শর্বনাশ হয়ে গেলো।’

ওই এলাকার ইউপি সদস্য তালুকদার মোহাম্মাদ মাসউদ মুঠোফোনে বলেন, ‘নির্বাচনে শাহজাহান মিয়া আমার সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম পরাজিত হওয়ার পর আমার কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করছে। গত ২৩ জুন আমার ওপর হামলা করে কুপিয়ে জখম করেছিল প্রতিপক্ষ ইউপি সদস্য প্রার্থী শহীদ। এরই ধারাবাহিকতায় আমার কর্মীর গরু চুরি করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে শহীদের লোকজন। এসবই শহীদের নেতৃত্বে হয়েছে।’

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে শহীদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গরুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রাণি সম্পদ অফিসে পাঠানো হয়েছে। গরুর মালিক শাহজাহান মিয়া সাত জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’

Leave a Reply

Translate »