আইকনিক ফোকাস ডেস্কঃ গত কয়েকবছর ধরে বোর্ডের নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র হলো বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্ট এলেই স্কোয়াড ঘোষণা নিয়ে রীতিমতো ‘নাটক’ শুরু করা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) হতে কখনো মধ্যরাতে চুপিসারে দল ঘোষণা করা হয়, কখনো লোকচক্ষুর আড়ালে ‘গোপন’ সভা করে দল চূড়ান্ত করে টিম ম্যানেজমেন্ট।
তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন এশিয়া কাপের স্কোয়াড ঘোষণা নিয়েও ক্রিকেটপাড়ায় চলছে ‘নাটক’। এশিয়া কাপের বাকি আর মাত্র একমাস। কিন্তু এখনও কারা থাকবেন এশিয়াক কাপের প্রাথমিক স্কোয়াডে, সেটি চূড়ান্ত করতে পারেনি বোর্ড ও টিম ম্যানেজমেন্ট।
ইতোমধ্যেই কয়েক দফায় দল ঘোষণার দিনক্ষণ চূড়ান্ত করলেও তাতে অটল থাকতে পারেনি বোর্ড। শুরুতে ২২ জুলাই, এরপর ২৯; সবশেষ এশিয়া কাপের স্কোয়াড ঘোষণার দিন হিসেবে পাঁচ আগস্টকে চূড়ান্ত করেছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বোর্ডের এমন কার্যকলাপ দেখে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগতে পারে বারবার স্কোয়াড ঘোষণার দিন কেন পিছিয়ে দিচ্ছে বোর্ড? উত্তরটা জানা গেল বোর্ডের এক পরিচালকের কাছ থেকে।
বোর্ডের সেই পরিচালক বলেন, ‘আসলে দুটো জিনিস নিয়ে দোটানায় রয়েছি আমরা। এক তামিম, দুই রিয়াদ। তামিমের জন্য আমরা শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবো বলেই এতো দেরি হচ্ছে। আর রিয়াদের বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া এখনও বাকি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা শেষের দিকে। শুধু তামিমের ফাইনাল রিপোর্টটা পর্যালোচনা করি আগে আমরা। ইনজেকশন নিয়েছে ও সেটার কি ইম্প্যাক্ট পরে সেটা তো দেখা লাগবে আমাদের। পুরো ক্যারিয়ারের প্রশ্ন ওর।’
আরো পড়ুনঃটি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু ৪ জুন,খেলবে ২০টি দল
রিয়াদের এশিয়া কাপে থাকা না থাকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখুন ক্রিকেটটা আমাদের আবেগের বিষয় ঠিকই, কিন্তু দিনশেষে কিন্তু আবেগকে প্রশ্রয় দিয়ে দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। অনুশীলন করছে, রিয়াদকে টিম ম্যানেজমেন্ট দেখছে, কোচরা দেখছে। এখন দেখা যাক কি হয় শেষ পর্যন্ত।’
এদিকে বোর্ডের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে তামিমের নেতৃত্বেই এশিয়া কাপে যাবে টিম টাইগার্স। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও সম্ভাবনা রয়েছে স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার। একই সঙ্গে সৌম্য সরকার, রনি তালুকদার, নাঈম শেখও রয়েছেন এশিয়া কাপে ডাক পাওয়ার দৌড়ে।
এদিকে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ৩১ জুলাই থেকে ফিটনেস ক্যাম্প শুরু করতে যাচ্ছে বিসিবি। জাতীয় দলের ৩০ খেলোয়াড়ের সেই ক্যাম্পে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর ৫ আগস্ট স্কোয়াড ঘোষণার পর কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু করবে বোর্ড।
জানা গেছে ইনজুরি আতঙ্কে এবার এশিয়া কাপে অতিরিক্ত ক্রিকেটার নিয়ে যাবে টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রতিবার ১৫ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করা হলেও আসন্ন এশিয়ার সেরা হওয়ার লড়াইয়ে ২০ জনের স্কোয়াড ঘোষণার পরিকল্পনা করছে বোর্ড।
এশিয়া কাপ শুরু হবে কবে?
৩০ আগস্ট পর্দা উঠবে এশিয়া কাপের চলতি বছরের আসরের। টুর্নামেন্ট শুরুর দ্বিতীয় দিনে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ৩১ অগাস্ট ‘বি’ গ্রুপের এই ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। সেখানে প্রথম ম্যাচ খেলে দ্বিতীয় ম্যাচের জন্য পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে উড়াল দিতে হবে লাল-সবুজদের। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের লাহোরে আফগানিস্তানকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ।
সুপার ফোর নিশ্চিত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তারা ‘বি২’ হিসেবে বিবেচিত হবে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামতে হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। এই ম্যাচে বাংলাদেশ তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে পেতে পারে পাকিস্তানকে। যদি স্বাগতিকরা কোয়ালিফাই না করে তবে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ হবে নেপাল।
সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ মাঠে নামবে ৯ সেপ্টেম্বর। এই ম্যাচে সাকিব-মুশফিকদেরে প্রতিপক্ষ হতে পারে শ্রীলঙ্কা। যদি সুপার ফোরে খেলার যোগ্যতা লঙ্কানরা অর্জন করতে না পারে তবে সেক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের সুপার ফোরের শেষ ম্যাচটি হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। কোয়ালিফাই করা সাপেক্ষে এই ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ ভারত। কোনো কারণে ভারতের সুপার ফোর নিশ্চিত না হলে তখন প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে নামবে নেপাল। এই দুই ম্যাচের ভেন্যুই কলম্বো।