একজন আদর্শ সন্তান গড়বার  উপায়ে

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ সন্তানকে শুদ্ধাচারী আলোকিত মানুষ করতে হলে আপনাকে জানতে হবে ভালো-মন্দ সম্পর্কে, ন্যায়-অন্যায় সম্পর্কে, করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে। নৈতিকতার কষ্টিপাথরে যাচাই করে নিতে হবে প্রতিটি কথা ও কাজকে।

 

সন্তানকে পরিবারের অংশ করে তুলতে তাই বাবা-মায়েরা কিছু ছোট ছোট করণীয় অনুসরণ করতে পারেন সে গুলো হলঃ

ছোটবেলা থেকেই সন্তাকে পরিবারের কাজের অংশীদার হতে শেখান। সংসারের যে কাজগুলো বাবা-মা হিসেবে আপনাদের করতে হয়, সময়-সুযোগমতো সেসব কাজে তাকেও শরিক করে তুলুন। কষ্ট হবে, পারবে কি না, ইত্যাদি ভেবে এসব থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রাখবেন না। নিজের কাজগুলো তাকে নিজেকেই করতে দিন। দেখবেন এক সময় ঠিকি করতে পারবে।

 

ছোট থেকেই একা একটা ঘরে থাকার অভ্যাস করতে দেবেন না। অন্য ভাইবোনদের সাথে শেয়ার করতে দিন। বা পরিবারের অন্য কোনো সদস্যকেও সে রুমে রাখুন। বড় হবার পর একা থাকতে হলেও সারাক্ষণ দরজা বন্ধ করে ভেতরে থাকার অভ্যাস যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

 

সারাক্ষণই মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার অর্থাৎ এ জাতীয় ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে তাকে থাকতে দেবেন না। বরং আপনারা তাকে সময় দিন। তার পছন্দ, শখ এসব নিয়ে গল্প করুন।

 

বাড়িতে আত্মীয় বন্ধুরা এলে তাদের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিন। কারো বাড়িতে গেলে বা কোনো নিমন্ত্রণে গেলে তাদেরকেও সাথে নিয়ে যান।

 

সারাক্ষণ শুধু পড়া পড়া বা কোচিং, ট্রেনিং ইত্যাদিতে তাকে ব্যস্ত রাখবেন না। কথা বলার সময়ও সারাক্ষণ শুধু এসব নিয়েই কথা বলবেন না। তার সাথে নানান বিষয় নিয়ে গল্প করুন।

 

নিজ নিজ ধর্মবিশ্বাস অনুসারে সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দান করুন। সঠিক ধর্ম জ্ঞানের অভাব সন্তানকে ধর্মান্ধ করতে পারে। ধর্মগ্রন্থের মর্মবাণী অনুধাবনে, অনুশীলনে তাকে উদ্বুদ্ধ করুন।

 

ছোটবেলা থেকেই সন্তানকে ভালো কাজে, ভালো বা সৎসঙ্গের সাথে সম্পৃক্ত করুন। নৈতিক, মানসিক, আত্মিক ও সৃজনশীল গুণাবলি বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করুন। খেলাধূলা, বইপড়া, মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, গাছ লাগানো ও তার পরিচর্যা, সঙ্গীত চর্চা, ছবি আঁকা, সামাজিক সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ এবং অন্যকে সহযোগিতা, অন্যের প্রতি মমতায় তাকে উদ্বুদ্ধ করুন।

 

সন্তানকে নেতিবাচক কথা বলে তিরস্কার করবেন না। ধমকে কথা বা রাগের মাথায় অভিশাপ দেবেন না। অন্যদের সামনে তাকে বকা বা তার ভুল ধরিয়ে দেয়া থেকেও বিরত থাকুন। পরে শুধরে দিন। সন্তানের কোনো ভুলকে অপরাধ বা পাপ হিসেবে তুলে ধরবেন না।

 

সন্তান কোনো কিছু চাওয়ার সাথে সাথেই তাকে তা দেয়ার অভ্যাস পরিহার করুন। তার অন্যায় আব্দার পূরণ করবেন না। পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য ও বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে সন্তানকে যথাযথ ধারণা দিন।

সন্তানের মধ্যে কোনো বদভ্যাস তৈরি হতে দেবেন না। বদভ্যাসকে প্রথমেই শনাক্ত করুন ও তা দূর করুন। বিনোদনের নামে সন্তান অপসংস্কৃতি ও ড্রাগ এডিকশনের শিকার হচ্ছে কি না লক্ষ্য রাখুন।

তাহলেই আপনার সন্তান একদিন হয়ে উঠবে আদর্শ মায়ের আদর্শ  সন্তান।

Leave a Reply

Translate »