ইমরানের জীবনের সংগ্রাম

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ অতি ছোট্ট একটি চরিত্র দিয়ে অভিনয়জীবনের শুরু, ‘পাওনাদার’ নামের সেই নাটকে প্রোডাকশন বয় হিসেবে ট্রিট করা হয়। আর চলচ্চিত্রে তাঁর প্রথম কাজ ‘গেরিলা’। সেই চলচ্চিত্রে তাঁর উপস্থিতি মাত্র ৬ সেকেন্ড। ১৪ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে ‘মহানগর’ সিরিজের পুলিশ কর্মকর্তা মলয় চরিত্রটি এখন পর্যন্ত তাঁর সবচেয়ে বড় সাফল্য। তাঁর আসল নাম মোস্তাফিজুর নূর ইমরান।

 

তরুণ মোস্তাফিজুর নূর ইমরান ২০০০ সালে বাগেরহাট থিয়েটারে যোগ দেন। পড়াশোনা ও অভিনয়ের টানে ঢাকায় আসেন। ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে পড়ার কারণে আলাদা করে থিয়েটার করতে হয়নি। পড়ার ফাঁকে চলতে থাকে অভিনয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠার চেষ্টা।

 

মোস্তাফিজুর নূর ইমরান বললেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ২০০৭ সালে প্রথম অভিনয় করি। খুব ছোট চরিত্র। বড় ভাইদের প্রোডাকশন ছিল, সেখানে আমাকে প্রোডাকশন বয় হিসেবে ট্রিট করা হয়েছে।’ ২০০৯ সালে নাম লেখান এনটিভির রিয়েলিটি শো ‘সুপারহিরো সুপারহিরোইন’–এ। বড় সাফল্য না পেলেও অভিনয়ে প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে গেছেন। ইমরানের ভাষায়, এখনো চলছে সেই সংগ্রাম।

 

২০১০ সালে ‘গেরিলা’ চলচ্চিত্রে ৬ সেকেন্ডের উপস্থিতির পরের বছর সুযোগ পান নতুন আরেকটি চলচ্চিত্রে। ‘সীমান্তের চড়ুইভাতি’ শিরোনামের সেই চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রের অভিনেতা তিনি। চার বছর ধরে সেই সিনেমার শুটিং করেন; কিন্তু আজও ছবিটি আলোর মুখ দেখেনি। তবে তিনি থেমে থাকেননি। কাজ করে গেছেন। স্বল্পদৈর্ঘ্য ও পূর্ণদৈর্ঘ্য মিলে তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ২৮।

 

আশরাফ শিশিরের বানানো এই ওয়েব সিরিজ করতে গিয়ে ইমরান বুঝেছিলেন, ওয়েবেই ভবিষ্যৎ। বললেন, ‘সিনেমা হল যেভাবে বন্ধ হচ্ছে, আলটিমেটলি সিনেমাও মুক্তি পাবে ওটিটিতে। নেটফ্লিক্স তখন বাজার তৈরি করে ফেলেছে। আমি তাই ওটিটি নিয়ে ভাবতে থাকি।

 

ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ‘ইতি তোমারই ঢাকা’ প্রকল্পে নুহাশ হুমায়ূনের বানানো ‘ব্যাকগ্রাউন্ড আর্টিস্ট’-এ কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ। ইমরানের মতে, এই চলচ্চিত্র প্রচারের পর সবাই তাঁকে আলাদা করে দেখা শুরু করল। তিনিও দর্শকের কাছাকাছি আসা শুরু করেন।

১৪ বছরে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। এই সংগ্রামের কারণে অনেক কিছু শিখেছেন, যা পরে পর্দায়ও ব্যবহার করতে পেরেছেন বা চেষ্টা করেছেন বলে জানালেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান। তবে এই সময়টাতে আর্থিক ও সামাজিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইমরান বললেন, ‘মানি হানি’, ‘একাত্তর’, ‘আকাশভরা তারা’ এবং সবশেষে ‘মহানগর’ আমাকে বড় একটা জায়গা তৈরি করে দিয়েছে। ১৪ বছর পর যখন মানুষের কাছে পৌঁছার ব্যাপারটা আসে, তখন এক্সাইটমেন্ট খুব একটা কাজ করে না। এখনো মনে হয় যে কাজ ভালো হয়েছে, লোকে ভালো বলছে; তখনই বুঝব যখনই আরেকটা ভালো কাজ করতে পারব।

 

মোস্তাফিজুর নূর ইমরান ভালো কাজ করে যেতে চান। প্রতিটি চরিত্রে দর্শক যেন তাঁকে আলাদা করতে পারেন, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দর্শকের কাছে আলাদা হয়ে উঠতে চান, মানুষ যেন চরিত্রগুলো মনে রাখে। মৃত্যুর আগপর্যন্ত অভিনয় করে যেতে চান। বাবা-মা এবং বোনদের সাপোর্ট ছিল। সেই সাপোর্ট নিয়ে আরও লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন তাঁর।

Leave a Reply

Translate »