আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা ও মুসলমানদের বিশুদ্ধ পথে পরিচালনা করার জন্য যে আলেমরা নিজেদের সর্বস্ব কোরবান করেন তাদের প্রতি অবজ্ঞা বা ধৃষ্টতা প্রদর্শন করলে, তাদের নিয়ে উপহাস বা ঠাট্টা করলে বা বিশ্রী ভাষায় গালাগালি করলে এর পরিণতি হবে ভয়ংকর।
ইমাম ত্বহাবী রহ, তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল আকিদাতুত তহাবিয়্যা’য় লিখেছেন-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ওলামায়ে কেরাম যারা হাদিস, ফিকহ ও দ্বীনি দূরদর্শীতাসম্পন্ন, ন্যায়সঙ্গত কারণ ব্যতিত তাদের সমালোচনা করা জায়েজ নেই। যারা অন্যায়ভাবে তাদের সমালোচনা করবে তারা গোমরাহ হিসেবে গণ্য হবে। (আল আকিদাতুত ত্বহাবিয়্যাহ,,পৃষ্ঠা:১৪৫)
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত: আলেমদের রক্ত বিষাক্ত। যে তার ঘ্রাণ নিবে সে অসুস্থ হয়ে পড়বে। যে তা ভক্ষণ করবে সে মারা যাবে। আলেমদের সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করা আল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ করার নামান্তর। যে আলেমের সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করে সে যেন স্বয়ং আল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ লিপ্ত হল।
হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন- ‘যে আমার ওলির সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করল; পরিণামে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিলাম।’ (সহিহ বুখারি) আলেমের প্রতি বিদ্রুপ করলে অন্তর মরে যায়। হাফেজ ইবনে আসাকির (রহ.) বলেন-‘যে ব্যক্তি আলেমের প্রতি বিদ্রুপাত্মক শব্দ ব্যবহার করে মৃত্যুর আগে তার অন্তর মরে যাবে।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা মোরগকে গালি দিও না; কেননা সে প্রত্যুষে মানুষকে নামাজের জন্য জাগিয়ে তোলে।’ (আবু দাউদ : ৫১০১)।
নামাজের জন্য ডাকার কারণে একটি সাধারণ মোরগের ব্যাপারে যখন এমন বলা হল, আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী, নবীর উত্তরাধিকারী আলেমদের সম্মান ও মানহানি থেকে বিরত থাকা তো আরও অধিকতর গুরুত্বের দাবি রাখে।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-‘তার কথার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করে। নিজেও সৎকর্ম করে এবং এও বলে যে, নিশ্চয়ই আমি একজন মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা হা মীম সাজদা)
অতএব, ইসলামি বিধি-বিধানের প্রকৃত মূল্যবোধ বজায় ও জাগরিত রাখার জন্য আলেম-ওলামাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও আস্থাশীল হতে হবে। তাদের প্রতি মান্যতা থাকতে হবে। তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখা যাবে না। বিরুদ্ধাচারণ করা যাবে না। কারণ, আলেমদের বিরোধিতা করা ইসলাম বিরোধী হওয়ার নামান্তর।