বিশেষজ্ঞদের মতে, স্নায়ুগুচ্ছে কোনো কারণে চাপ পড়লে সংকুচিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে শরীরের সেই অংশে অনুভূতি কাজ করে না তখন অবশ লাগে। অফিসে এক পায়ের ওপর আরেক পা উঠিয়ে কাজ করছেন, অনেকক্ষণ পর মনে হচ্ছে উপরের পাটি অবশ অবশ লাগছে। অথবা একটানা দীর্ঘক্ষণ হাত, পা বা শরীরের কোনো অংশের ওপর চাপ পড়লে ওই অংশ সাময়িকভাবে অবশ হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক দুর্বলতা, কোনো সংক্রমণের প্রভাবেও অবশ হতে পারে। কখনো কখনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও এমনটা হতে পারে।
আসুন জেনে নেই :
* হাতের ওপর ভর দিয়ে শোয়া বা পায়ের ওপর পা তুলে রাখার ফলে অবশ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এমনটা বারবার হতে থাকলে এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও এরকম হলে সতর্ক হওয়া জরুরি। এই সমস্যায় স্নায়ুতন্ত্রের মায়োলিন সিথ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
* ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের অনেকের মধ্যেই পেরিফেরাল স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রকোপ বেশি থাকে। পেরিফেরাল স্নায়ুর সমস্যায় পায়ের পাতা ঘন ঘন অবশ হয়ে যেতে পারে। পরবর্তীকালে এই অবশভাব শরীরের ওপরের অংশেও ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো অবহেলা করবেন না,
* প্রাথমিকভাবে সিস্টেমিক ডিজিজে হাত, পাসহ শরীরের একাধিক অংশ অবশ হয়ে যেতে পারে। এই রোগে কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে। সিস্টেমিক ডিজিজে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। এর জন্য ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টিউমার বা স্নায়ুর নানা সমস্যা হতে পারে।
* স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অবশের সঙ্গে সঙ্গে হাত, পা ও শরীরের অন্যান্য অংশে তীব্র ব্যথা এবং জ্বালা হতে পারে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউরালজিয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। শরীরের যে কোনো অংশেই এই সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে কোনো সংক্রমণের কারণে বা বয়সের কারণে হতে পারে এই রোগ।
* মস্তিষ্কে যদি রক্ত সরবরাহ পর্যাপ্ত না হয় সে ক্ষেত্রে স্ট্রোক হয়। বিশেষ করে রক্তনালী কোনো কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলে এমন হয়। স্ট্রোকের প্রথম লক্ষণ হলো বাঁ হাত অবশ হয়ে যাওয়া এবং তা ক্রমশ হাতের তালু পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়।
* ‘লাইম ডিজিজে’র কারণে শরীরের কোনো কোনো অংশ অবশ হয়ে যেতে পারে। এটি একটি পতঙ্গবাহিত রোগ যা দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে। এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে জ্বর, ক্লান্তি, ঘাড়, পেশী ও জয়েন্টের ব্যথা ইত্যাদি। সময় মতো এর চিকিৎসা করা না হলে স্নায়ুর আরও নানা জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে।