আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ গ্রীষ্মের শুরু থেকেই তাপপ্রবাহ চলছে দেশে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টির দেখা মিললেও গরম যেন কমছেই না। ভারতের দক্ষিণাঞ্চল জ্বলছে তাপপ্রবাহে। অথচ সে দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় নেই গরম। চাইলে আপনিও গরমের হাত থেকে বাঁচতে কিছু দিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন দার্জিলিংয়ে। দার্জিলিংয়ে গিয়ে কখনো টয় ট্রেনে চড়েননি, এমন লোকের সংখ্যা কমই আছে। ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমাও পেয়েছে টয় ট্রেন।
টয় ট্রেনের রুট : দার্জিলিং টয় ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শুরু হয়। তারপর শিলিগুড়ি, কার্সিয়াং এবং ঘুম হয়ে দার্জিলিংয়ে পৌঁছায়। প্রায় ৮৮ কিলোমিটার এই রুটে হিল কার্ট রোড, বাতাসিয়া লুপসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের ওপর দিয়ে যায় টয় ট্রেনটি।
গীতখোলা : কালিম্পংয়ের কোলে অবস্থিত গীতখোলা। পাইনে ঘেরা ছোট্ট জনপদ। ‘খোলা’ মানেই নদী। তবে এই গীতখোলা তিনটি ঝরনার মিলনক্ষেত্র। গীতখোলা থ্রি সিস্টার ওয়াটারফলস নামে পরিচিত।সেখানে আছে ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশদের তৈরি লোহার ব্রিজ। গীতখোলা ভিউ পয়েন্টের খুব কাছেই আছে নকডারা হ্রদ। গীতখোলা বেড়াতে গেলে রাত কাটাতে হবে লুনসেল কিংবা নকডারাতে।
ঋষিখোলা : পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের সীমান্ত দিয়ে বয়ে চলা ঋষি নদীর তীরে গড়ে উঠেছে ছোট্ট পর্যটন কেন্দ্র। কালিম্পং থেকে মাত্র ৩৬ কিলমিটার দূরত্বে অবস্থিত ঋষিখোলা। নদীর পাশেই আছে থাকার জায়গা। পেডং, আরিতার, সিলারিগাঁও, ইচ্ছেগাঁওয়ের মতো বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র আছে ঋষিখোলার খুব কাছেই। আছে নদীর ধারে ক্যাম্পিং করার সুযোগও।
সিংমারি : দার্জিলিংয়ের ম্যাল থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরত্বে এই অফবিট জনপদ। সিংমারির কোলে দাঁড়িয়ে দেখা যায় পুরো শৈলশহরকে। চা বাগানে ঘেরা পুরো গ্রাম। কাঞ্চনজঙ্ঘা রেঞ্জও দেখা যায় সেখান থেকে। আছে ছোট্ট মনাস্ট্রি। এই গ্রাম থেকে দার্জিলিংয়ের রোপওয়ে, হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং মিউজিয়াম, সিংটমের চা বাগান সবই ঘুরে নিতে পারবেন।
খারকাগাঁও : কালিম্পংয়ের আরেকটি অফবিট ডেস্টিনেশন হলো খারকাগাঁও। ডেলো থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটারের রাস্তা। সেখানে আছে ১৯৭৬ সালের প্রতিষ্ঠিত জাং ধক পালরি মনাস্ট্রি। খারকাগাঁওয়ের অন্যতম আকর্ষণ হলো পঞ্চমী জলপ্রপাত। এ ছাড়া খারকাগাঁও থেকে ঘুরে দেখতে পারেন ফিক্কালেগাঁও, রামধুরা, ইচ্ছেগাঁও, ডেলো পার্ক, লাভা, লোলেগাঁওয়ের মতো বিভিন্ন জায়গা।
আরও পড়ুনঃ কলকাতা ভ্রমণে দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ!!
কাফেরগাঁও : কালিম্পংয়ের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র কাফেরগাঁও। লাভা ও লোলেগাঁওয়ের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত কাফেরগাঁও। লোলেগাঁও থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটারের পথ। কাফের নামের একটি ফুল পাওয়া যায় এই গ্রাম। সেখান থেকেই গ্রামের নাম কাফেরগাঁও। এই পাহাড়ি গ্রাম থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। লাভা, লোলেগাঁওয়ের পাশাপাশি এখান থেকে চারখোল, ঝান্ডিদাঁড়া ইত্যাদি জায়গা ঘুরে দেখতে পারেন।
কীভাবে যাবেন দার্জিলিং : দার্জিলিং যেতে চাইলে বাস-ট্রেন দুটোই আছে। বাসে সহজে যাওয়ার দুটি রাস্তা আছে। একটি বেনাপোল-যশোর দিয়ে আর আরেকটি পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা বর্ডার দিয়ে। যদি বেনাপোল হয়ে যান তা হলে আপনাকে কলকাতা থেকে ৫৫৮ কিলোমিটার দূরে আবার শিলিগুড়ি যেতে হবে আর যদি আপনি বাংলাবান্ধা বর্ডার দিয়ে যান তা হলে ভারতে ঢোকার পরই আপনি শিলিগুড়ি পৌঁছে যাবেন। শ্যামলী পরিবহন সরাসরি শিলিগুড়ি পর্যন্ত সেবা দিয়ে থাকে। ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার ভাড়া হবে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। বর্ডার পার হওয়ার সময় ভ্রমণকর হিসেবে দিতে হবে অতিরিক্ত ৫০০-৬০০ টাকা। আর রেলপথে যেতে হলে ঢাকা থেকে টিকেট করতে হবে।