আজ আমি নিরুপায়, নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি : তনি

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ সোশ্যাল ইনফ্লুয়েনসার ও দেশের আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রুবিয়াত ফাতিমা তনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঠোঁটকাটা স্বভাবের নারী হিসেবে বেশ পরিচিতি আছে তার। ফেসবুকে তিনি অধিকাংশ সময় সরব থাকেন পোশাকের ব্যবসা নিয়ে। কিন্তু কিছুদিন ধরে সময়টা খারাপ যাচ্ছে এই উদ্যোক্তার। তা চক্ষুগোচর হয় তার সাম্প্রতিক কিছু পোস্ট দেখে।

তনির ফেসবুক পাতায় দেখা মেলে শুধু হাহাকার। জানান, জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন তিনি। কারণ, কয়েক দিন ধরে অসুস্থ রয়েছেন তার স্বামী। যার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বামীকে নিয়ে দেশের বাইরে আছে তিনি। তবে কী অসুখে ভুগছেন, তা কোথাও উল্লেখ করেননি তিনি।

এদিকে শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তনি। যেখানে তিনি লিখের, জীবনে কোনোদিন ভাবিনি আমি টাকার বিনিময়ে অন্য কোম্পানি বা ব্রান্ডের প্রমোশন করব, এ পর্যন্ত যতগুলো প্রোমোশন আমি করে দিয়েছি সম্পূর্ণ ফ্রি, কেউ কোনোদিন বলতে পারবে না আমি একটি টাকাও কোনোদিন কারও থেকে নিয়েছি। টাকার লোভ আমার কখনোই ছিল না, এখনও নেই। আমি একজন উদ্যোক্তা, সবসময় নিজের কোম্পানির কাজ করেছি। সময় সুযোগমতো পারলে নতুন বা ছোট উদ্যোক্তাদের ফ্রিতে প্রোমোশন করেছি। যখন থেকে আমি পপুলার অনেক বড় বড় ব্রান্ড আমাকে লাইভ বা প্রোমোশনের জন্য বড় অংকের টাকা অফার করেছে, আমি সবসময় ফিরিয়ে দিয়েছি। আল্লার রহমতে আমার যে পরিমাণ ভিউ, চাইলে নিজের বিজনেসের বাইরে প্রোমোশন করে মাসে এক্সট্রা অনেক টাকা ইনকাম করতে পারতাম। টাকা আমাকে কখনো টানেনি, নিজের ব্যবসা থেকে যা আসে আমি সবসময় সন্তুষ্ট, আলহামদুলিল্লাহ। আমি বা আমার হাসব্যান্ডও কখনো চায়নি আমি নিজের ব্রান্ডের বাইরে অন্য কোথাও কাজ করি। কষ্ট করে সৎপথে নিজে যতটুকুই ইনকাম করেছি, তা ইনভেস্ট করে নিজের প্রতিষ্ঠান বড় করার চেষ্টা করেছি।

তিনি আরও লিখেন, আপনারা জানেন গত রোজার ঈদের পর থেকে আমার ওপর দিয়ে কী কী যাচ্ছে। ভোক্তা অধিকারের সাথে ঝামেলা, আন্দোলন, আমার বগুড়া শোরুম লুটপাট, বন্যা, দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা- সবমিলিয়ে বিজনেসর অবস্থা বেহাল। আজ জীবন আমাকে এমন এক পরিস্থিতিতে দাঁড় করিয়েছে, আমি নিরুপায়। নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি ব্যাংককে ব্যয়বহুল ট্রিটমেন্ট চালিয়ে যাওয়ার। এটা ঠিক কতদিন লাগবে একমাত্র আল্লাহতা’য়ালা জানেন। আমার অবর্তমানে আমার স্টাফরা দিনরাত চেষ্টা করচে প্রতিষ্ঠান সচল রাখতে, তারপরও হিমসিম খেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় আমি ঠিক করেছি আমি জীবনের প্রথম শুধুমাত্র তিনটি কোম্পানির সঙ্গে ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তি বদ্ধ হব, তবে সেগুলো ডিফরেন্ট পণ্যের হবে।

জানি অনেকে জাজমেন্টাল হয়ে অনেক কথা বলবেন উল্লেখ করে তনি লিখেন, অনেকে গুজবও ছড়াবেন, তবে আপনাদের কথায় আমার কিছু করার নেই। হসপিটালের বড় অঙ্কের বিল আমাকেই পরিশোধ করতে হবে। আর একটা কথা, আমি কিন্তু কারও কাছে হাত পাতছি না বা সাহায্য চাচ্ছি না। আমি নিজের যোগ্যতায় পরিশ্রম করে কাজের বিনিময়ে টাকা নেব। আর আমি যেহেতু একজন উদ্যোক্তা, আমি জানি আমি কীভাবে প্রোমোশন করতে হয়, যে প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করব ইনশাল্লাহ তাকে লাভবান করিয়েই হালাল করে টাকা নেব, আল্লাহ ভরসা। প্লিজ দয়া করে উল্টোপাল্টা নিউজ করবেন না এমন যে টাকার জন্য চিকিৎসা হচ্ছে না সানভীস বাই তনির হাসব্যান্ডের।

আমি আত্মবিশ্বাসী, আমি পারব ইনশাল্লাহ, বাকিটা আল্লাহ জানেন। আর হ্যাঁ, অনেক হয়তো হিংসায় নিজের মনের জ্বলুনিতে বলবেন জামাই অসুস্থ এই সুযোগে টাকা কামানোর নতুন ধান্দা করছে তনি, যা খুশি বলেন, আমার কিছু আসবে যাবে না। আমি শুধু জানি এই পরিস্থিতি আমার একা সামাল দিতে হবে। আল্লাহ ভরসা।

প্রসঙ্গত, তনির স্বামী একজন সফল ব্যবসায়ী। যদিও দুজনের বয়সের ব্যবধান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটাক্ষের মুখে পড়েন এই নারী উদ্যোক্তা। এসবের জবাবও দিয়েছেন তিনি।শাহাদাৎ হোসাইন তনির দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তিনি। এরপর ভালোবেসে বিয়ে করেন শাহাদাৎকে। প্রথমে পরিবার মেনে না নিলেও পরবর্তীতে সব ঠিক করে নেন তনি।

Leave a Reply

Translate »