আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ বাংলাদেশের অভিনেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ। ওপার বাংলায় কাজের পাশাপাশি অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনের সঙ্গে বেশ ভালো সখ্য রয়েছে তার। তাদের বন্ধুত্বের কথা কমবেশি সবারই জানা। দুজনের বাড়িতেই যাতায়াত রয়েছে তাদের। কলকাতায় গেলে ঋতুপর্ণার বাড়িতে ফেরদৌস, আবার ঢাকায় এলে এই নায়কের বাড়িতে অতিথি হন ঋতুপর্ণা।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করার পর থেকে কোথাও দেখা যায়নি ফেরদৌসকে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরব নন তিনি। এদিকে হঠাৎ গত দুই দিন ধরে নেটদুনিয়ায় চর্চিত হচ্ছে, বন্ধু ঋতুপর্ণার কলকাতার বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছেন ফেরদৌস।
তবে গত ১৭ আগস্ট দেশের একটি গণমাধ্যমে খবরটি সম্পূর্ণ ভুয়া বলে জানিয়েছেন ঋতুপর্ণা। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন তিনি। সেখান থেকেই অভিনেত্রীর কলকাতার বাড়িতে যে ফেরদৌস নেই, সেই খবরটি নিশ্চিত করেন ঋতুপর্ণা।
তিনি বলেন, ফেরদৌস আমার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন, এই খবরটা আমার কানেও এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাদের দুজনের এমন একটা ছবি দিয়ে খবরটা প্রচার করা হচ্ছে। ওই ছবিটা কিছুদিন আগে একটা শোতে তোলা। ফেরদৌস তো আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু, এটা তো সবাই জানেন।
শেষবারও যখন ঢাকায় গেলাম, ওর বাসায় গিয়েছি। সে–ও কলকাতায় এলে আমার বাসায় আসে। আমাদের নিয়মিত যাতায়াত আছে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে এই ঘটনার পর তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, ঋতুপর্ণা বললেন, হঠাৎ শুনি, ফেরদৌস আমার ভারতের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে, এটা কেমন প্রোপাগান্ডা! এসব প্রোপাগান্ডা যারা ছড়াচ্ছে, তাদের মুখ তো আর বন্ধ করা যাবে না। আমি বলতে চাই, বাংলাদেশের সঙ্গে আমার খুব ভালো একটা সম্পর্ক। ফেরদৌস আমার একজন ভালো বন্ধু, কিন্তু এ কথাটা তো একদমই এমন নয় যে, সে দেশ ছেড়ে বেরিয়ে আমার বাড়িতে গেছে!
অভিনেত্রী বলেন, আমার মনেও হয় না, সে দেশ থেকে বেরিয়েছে, বের হলে আমরা তো জানতে পারতাম। বিষয়টা তো এমন নয় ফেরদৌস অপরিচিত মুখ। তার মতো মানুষ, দেশ থেকে বের হলে এমনিতে সবাই জানতে পারবে যে দেশ থেকে বেরোচ্ছে। আমার পরিষ্কার কথা, সে যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক, বাংলাদেশেরও সবাই ভালো থাকুক।
ঋতুপর্ণা বলেন, আমি জানিও না ফেরদৌস এখন কোথায়, কী অবস্থায় আছে। শুধু এটুকুই চাই, ও যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, সাবধানে যেন থাকে। কারণ, মানুষ হিসেবে ফেরদৌস খুব ভালো। নির্বাচনের সময়ও আমাকে বলেছিল, আমি ভালো কাজ করতে চাই। মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে চাই। সে জন্যই নির্বাচন করতে এসেছিল। যাই হোক, ওর দেশে এখন অন্য রকম একটা পরিস্থিতি হয়েছে। আমি ভাবতে চাই, ফেরদৌস যেখানেই থাকুক নিরাপদে এবং ভালোভাবে আছে। তবে বাংলাদেশে শান্তি ফিরে আসুক, সেই কামনাই করি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে কলকাতায় ‘হঠাৎ বৃষ্টি’সিনেমায় অভিনয় করে আলোচনায় আসেন ফেরদৌস। এই সিনেমার জন্য ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা’হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান তিনি। এর পর থেকে কলকাতার সিনেমায়ও নিয়মিত অভিনয় করেন তিনি। ২০০১ সালে ‘ওস্তাদ’সিনেমায় প্রথমবারের মতো জুটি বাঁধেন ঋতুপর্ণা-ফেরদৌস। কাজের সূত্রেই দুজনের মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।