আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ রাজনৈতিক দল করতে চাইলে তাকে উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাত দফা বাস্তবায়ন নাগরিক কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, অপশাসন ও গণহত্যার কারণে এই দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই। গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দল কখনোই রাজনীতিতে ফিরতে পারে না, আওয়ামী লীগেরও সেই সুযোগ নেই।
আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশ পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এই আহ্বান জানানো হয়।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাত দফা বাস্তবায়ন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম কলিমের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তৃতা করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি চেয়ারম্যান এস এম শাহাদাৎ, বিএনপির নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজী প্রমুখ।
সভায় বিএনপি নেতা প্রফেসর আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ড. ইউনূসের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তার উচিত হবে, দেশের এই ক্রান্তিকালে বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ এনে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা।
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার একটি নিরপেক্ষ সরকার।
তারা তাদের নিরপেক্ষতা যত দিন বজায় রাখতে পারবেন, তত দিন মানুষ তাদের মাথার ওপর রাখবে। কোনো কারণে নিরপেক্ষতা হারালে তাদের পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হবে না। সরকারের ওপর মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হবে। সরকারের মধ্য থেকে নতুন করে দল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের যে কেউ নতুন দল গঠন করতে পারেন।
কিন্তু তার জন্য অবশ্যই তাকে সরকার থেকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ নতুন দল গঠন করলে তাদের দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব না।
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকারের কাজ হলো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও কতগুলো বিষয়ে সংস্কার নিশ্চিত করা। সরকারকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে ৫ আগস্টের মানুষের মনোজগৎ আর ৫ আগস্টের পরের মানুষের মনোজগৎ সমান নয়।
উভয়ের কথা মাথায় রেখেই সংস্কারকাজ করতে হবে।
বিএনপির আরেক নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘দেশে নির্বাচনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা এবং আর্থিক খাতগুলো সব ধ্বংস হয়ে গেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এ জন্য দায়ী। তাই দেশের আদালতে তাদের বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। যারা তাদের এ দেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, তারা জাতীয় বেইমান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে।
উভয়ের কথা মাথায় রেখেই সংস্কারকাজ করতে হবে।’
বিএনপির আরেক নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘দেশে নির্বাচনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা এবং আর্থিক খাতগুলো সব ধ্বংস হয়ে গেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এ জন্য দায়ী। তাই দেশের আদালতে তাদের বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। যারা তাদের এ দেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, তারা জাতীয় বেইমান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে।
দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ পাঠনো ঠিক হয়নি মন্তব্য করে নেতারা বলেন, ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যে ভারত বাংলাদেশের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ বাস্তবায়ন করেছে, সেই ভারতে ইলিশ পাঠানো হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না দাবি করে তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়কের নামে ছাত্রলীগ বা শিবিরের নেতাকর্মী থাকাটা ক্ষতির কিছু না। তবে কেউ অন্যায় করলে বিচারের আওতায় আনতে হবে। পিটিয়ে হত্যা কেউ সমর্থন করে না। এটা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।