আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ কালবৈশাখী শেষে আবারও শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে হিট এলার্টও জারি করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও ঢাকার জন্য এই হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে। তবে আগামী শুক্রবার ও শনিবার ঢাকায় গরম বেশি পড়বে। আর সোমবার থেকে সারা দেশে শুরু হবে কালবৈশাখীর প্রভাবে বৃষ্টি।
মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল সৈয়দপুরে, একইদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল ঈশ্বরদীতে। বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে দিনাজপুরে। বৃহস্পতিবারও একই এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে। শুক্র ও শনিবারে ঢাকাতেও তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম।
তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, ‘এবার তাপপ্রবাহ প্রবেশ করছে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ দিয়ে। আর তা প্রবেশের পর ঢাকা পর্যন্ত আসার পর তাপমাত্রার পারদ কমে যায়। তবে আগামী শুক্র ও শনিবার ঢাকায় তাপমাত্রা বেশি থাকতে পারে।’
এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রংপুর ও দিনাজপুর দিয়ে প্রবাহিত অতিরিক্ত তাপের প্রবাহটি মধ্যাঞ্চলের ওপর যখন চলে আসবে তখন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। তবে সোমবার থেকে সারা দেশেই তাপমাত্রা কমতে থাকবে।
এবার আর তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের দুর্ভোগে পড়তে হবে না। মাঝারি তাপ প্রবাহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে আগামী ১৯ মে (রবিবার) পর্যন্ত চলমান এই তাপপ্রবাহ। ২০ থেকে শুরু হতে যাওয়া কালবৈশাখীতে নেমে আসবে তাপমাত্রার পারদ।
আরও পড়ুনঃ আবার তাপমাত্রা কেন বাড়ল, জানালেন আবহাওয়া অফিস
এবারের তাপপ্রবাহ দেশের পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবেশ করছে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘বছরের এসময়ে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্য প্রদেশ থেকে আসা তাপপ্রবাহ রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করে। এর আগে দক্ষিণ-পশ্চিমের যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও খুলনা এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশি রেকর্ড হয়েছিল।’
সমরেন্দ্র কর্মকারের উপাত্তের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে আগামী কয়েকদিন রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ এলাকায় তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। গতকালও (বুধবার) এসব এলাকার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে।
দেশে পুরো এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ২ মে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টির পর ৬ মে থেকে শুরু হয় সারা দেশে কালবৈশাখীর প্রভাব। এর আগে ৩০ এপ্রিল যশোরে রেকর্ড হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া এপ্রিলর শেষার্ধে টানা তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। সাধারণত কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি হলে মাঝারি ও ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। আর ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হয়ে থাকে।