স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ প্রতিবেশি দুই দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তার মা রোকেয়া খাতুন। 

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও তাদের প্রতিনিধিদের হাতে পদক তুলে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।এ নিয়ে আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরের দিকে পোস্ট করা স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

ফাইয়াজ লেখেন, আবরার ফাহাদকে স্বাধীনতা পদকের জন্য যারা নির্বাচিত করার কাজে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। ভারত বা অন্যান্য চাপ উপেক্ষা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া কোনোভাবেই সহজ ছিল বলে আমরা মনে করি না।

তিনি আরও লেখেন,  ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসতে হলে যদি দিল্লীর সাথে আপস করা না লাগে তাহলেই আবরার ফাহাদের আত্মত্যাগের প্রকৃত স্বীকৃতি দেওয়া হবে। না হলে এই পদকও আসলে মূল্যহীন। আই উইশ (I wish) কোনো মাকে তার সন্তানের পক্ষে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক গ্রহণ না করা লাগতো।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করেন সংগঠনটির ক্যাডাররা। পরে রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামা। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট।

আবরার ফাহাদ ১৯৯৮ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. বরকত উল্লাহ এবং মায়ের নাম রোকেয়া খাতুন। আবরার কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। পড়াশোনা চালাকালীন তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বর্তমান বুয়েটে মেকানিক্যাল বিভাগে অধ্যায়নরত।

Leave a Reply

Translate »