আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স (ভাতা) যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধার দাবিতে ডাকা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। মঙ্গলবার মধ্যরাতে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণার পর বুধবার ভোর থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে ট্রেন চলাচল। এ খবরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও স্টেশনে গিয়ে শিডিউল বিপর্যয়ের ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৬টায় রাজশাহী অভিমুখী আন্তঃনগর ধূমকেতু এক্সপ্রেস শিডিউল অনুযায়ী কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেলেও নির্ধারিত সময়মতো ছাড়তে পারেনি অন্য ট্রেনগুলো।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিলম্বে ছেড়েছে কক্সবাজারগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেন। নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘণ্টা পর কমলাপুর ছেড়েছে ট্রেনটি। সকাল সাতটায় সময় দেওয়া হলেও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে কমলাপুর থেকে যাত্রা করেছে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস।
ট্রেনের এ শিডিউল বিপর্যয়ের জন্য কারিগরি ত্রুটিকে দায়ী করছেন কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার শাহদাত হোসেন।
তিনি বলেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। পাশাপাশি সময়ের সঙ্গে যাত্রী উপস্থিতিও বাড়ছে। তবে, কারিগরি কারণে এক ঘণ্টা করে বিলম্বে ছাড়ছে ট্রেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দু-এক দিন সময় লাগতে পারে।
কমলাপুর রেলস্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, ইঞ্জিনজনিত কারণে দু-একটি ছাড়া সব ট্রেনই ছেড়ে যাচ্ছে। কোথাও কোনো গোলযোগের খবর নেই। তবে, শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে ট্রেনগুলো ছেড়ে যেতে একটু দেরি হচ্ছে।
শিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীদের ভোগান্তির চিত্র দেখা গেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনেও। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ভোর ৬ টার ঢাকাগামী চট্টলা এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটি বিলম্বে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে, সুবর্ণ এক্সপ্রেস সাড়ে ৭টার পরিবর্তে এক ঘণ্টা বিলম্বে সাড়ে ৮টায়, সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা বিলম্বে ৮টা ৫০মিনিটে, চাঁদপুরগামী সাগরিকা এক্সপ্রেস সকাল ৮টায় ছাড়ার কথা থাকলেও প্রায় এক ঘণ্টা ৩৫ মিনিট বিলম্বে ৯টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে গেছে।
চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, চট্টগ্রাম থেকে সবগুলো ট্রেনই ছেড়ে গেছে। তবে, কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। মধ্যরাতে রানিং স্টাফদের অবরোধ প্রত্যাহার হওয়ার পর ভোর থেকে আনুষঙ্গিক কাজ শুরু করতে হয়েছে। এতে ট্রেনগুলো ছাড়তে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
এদিকে মধ্যরাতে কর্মসূচি প্রত্যাহারের খবর অনেক যাত্রী জানেন না। সে কারণে সকালের দিকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে অনেক আসন ফাঁকা থাকতে দেখা গেছে। একইসঙ্গে শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তি থাকলেও কর্মবিরতি প্রত্যাহারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
প্রসঙ্গত, বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধার দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির কারণে গত সোমবার মধ্যরাতের পর থেকেই রাজধানীর কমলাপুরসহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবারও বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। এতে দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার মানুষ।
পরে বুধবারের মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের বাসায় বৈঠক শেষে মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।