আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট একযোগে খুলে দেওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হলেও এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। নদ-নদীর পানি কিছুটা বাড়লেও তা বন্যার রূপ নেয়নি বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান এই তথ্য জানান।
এই কর্মকর্তা বলেন, গঙ্গা নদীর বাংলাদেশ অংশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখা পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। কিন্তু এই বৃদ্ধিতে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। গঙ্গার উজানের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি স্থিতিশীল পর্যায়ে আছে। গঙ্গা নদীর একদম উজান থেকে আমাদের দেশে পানি আসতে মোটামুটি তিন দিন হলেও সময় লাগে। এক্ষেত্রে পানির বৃদ্ধি বা হ্রাস, যেটাই হোক, সেটি খুব উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হওয়ার সম্ভাবনা কম।
এদিকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হচ্ছে এবং স্বাভাবিক পর্যায়ের দিকে যাত্রা করছে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান মঙ্গলবার বলেন, পূর্বাঞ্চলের ১৩টি পয়েন্টে গত তিন দিন ধরে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কিন্তু গোমতী নদীর কুমিল্লা পয়েন্ট বাদে বাকি ১২টিতেই পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে।
এর আগে সোমবার (২৬ আগস্ট) ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেয় ভারত। এতে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ব্যাপারে ব্যাপক লেখালেখি হয়।বাংলাদেশের এই উদ্বেগের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল জানান, এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা, যা বর্ষা মৌসুমে করা হয়ে থাকে।
ফারাক্কা বাঁধ সম্পর্কে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা গণমাধ্যমে প্রতিবেদন দেখেছি যে, ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলা হলে গঙ্গা-পদ্মা নদীর ভাটিতে প্রাকৃতিক গতিপথে ১১ লাখ কিউসেকেরও বেশি পানি প্রবাহিত হবে। এটি একটি স্বাভাবিক মৌসুমী ক্রমবৃদ্ধি যা উজানে গঙ্গা নদীর অববাহিকায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে ঘটে থাকে।
জয়সওয়াল বলেন, এটা বুঝতে হবে যে, ফারাক্কা কেবল একটি ব্যারেজ, এটি কোনো ড্যাম নয়। যখনই, পানির স্তর পুকুরের স্তরে পৌঁছায়, যে প্রবাহ আসে তা প্রবাহিত হয়ে যায়। এটি শুধু একটি কাঠামো যা মূল গঙ্গা-পদ্মা নদীর ওপর একটি গেট সিস্টেমকে সাবধানতার সাথে ব্যবহার করে ফারাক্কা ক্যানালে ৪০ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত করা হয় এবং সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পানি মূল নদীতে বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত হয়।
মুখপাত্র বলেন, প্রোটোকল অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত নিয়মিত ও সময়মতো বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তাদের জানানো হয়। এবারও সেটাই করা হয়েছে। আমরা ভুল-বোঝাবুঝি সৃষ্টি করার জন্য ভুয়া ভিডিও, গুজব ও ভয়ভীতির প্রদর্শন দেখেছি। এটা দৃঢ়ভাবে প্রকৃত তথ্য দিয়ে প্রতিহত করা উচিত।
সূত্র: বিবিসি