আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ ছয় সপ্তাহ ধরে চলমান যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটিয়ে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাজুড়ে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এসব হামলায় অন্তত ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। এই হামলায় আরও ৮৭ জন আহত হয়েছেন। গাজার কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ এই হামলাকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে। রোববার (২৩ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার উত্তর গাজা সিটির একটি গাড়িতে প্রথম হামলাটি হয়। এরপর মধ্য অঞ্চলের দেইর আল-বালাহ ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরেও হামলা হয়। গাজা সিটির রিমাল এলাকায় ড্রোন হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আল-শিফা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রামি মোহান্না।
অন্যদিকে দেইর আল-বালাহতে ইসরায়েলি হামলায় একটি বাড়িতে অন্তত তিনজন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন। সেখানে থাকা খলিল আবু হাতাব ঘটনার ভয়াবহতা বর্ণনা করে বলেন, বাইরে তাকাতেই দেখি পুরো এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে। যুদ্ধবিরতি খুবই ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। এভাবে বাঁচা যায় না। কোথাও নিরাপদ নয়।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ৪৯৭ বার তা লঙ্ঘন করেছে। এসব হামলায় ৩৪২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু, নারী ও বয়স্ক। বিবৃতিতে তারা ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর এই ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট বিরোধী বলে উল্লেখ করে।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামাসের এক যোদ্ধা সেনাদের ওপর হামলা করলে এর প্রতিক্রিয়ায় তারা অভিযান চালিয়েছে। বিবৃতিতে তারা দাবি করে, ইসরায়েল পাঁচজন সিনিয়র হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। হামাস অবশ্য এখনও এই নিহতদের বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল মনগড়া অজুহাতে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করছে। তারা দ্রুত হস্তক্ষেপের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারকে আহ্বান জানিয়ে বলেছে, আমরা মধ্যস্থতাকারীদের জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাই। যুক্তরাষ্ট্রকে তার আশ্বাস বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে এবং যুদ্ধবিরতি মানতে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে হবে।