মদিনার দুর্ঘটনায় নিহত হাজিদের ১৮ জন একই পরিবারের

আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ সৌদি আরবের মদিনার কাছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ শিশুসহ ৪২ ভারতীয় নিহত হয়েছেন। তারা দেশটিতে ওমরাহ পালন করতে গিয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের তিন প্রজন্মের ১৮ জনই রয়েছেন। এদের মধ্যে ৯ শিশু। এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। তিন প্রজন্মের সবাইকে হারিয়ে পুরো পরিবারটি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। ভারতের তেলেঙ্গানার এ পরিবারটি আগামী শনিবার ফিরে আসার কথা ছিল।

মোহাম্মদ আসিফ নামে তাদের এক আত্মীয় এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, আমার ভাবি, দুলাভাই, তাদের ছেলে, তিন মেয়ে এবং তাদের সন্তানরা ওমরাহ করতে গিয়েছিলেন। আট দিন আগে রওনা হয়েছিলেন। ওমরাহ সম্পন্ন হয়েছিল এবং মক্কা থেকে তারা মদিনায় ফেরত আসছিলেন। রাত প্রায় ১টা ৩০ মিনিটে দুর্ঘটনাটি ঘটে, আর বাসটি আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। আগামী শনিবার দেশে ফেরার কথা ছিল তাদের।

আসিফ আরও বলেন, দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন। একটি একান্নবর্তী পরিবারের ১৮ জনই (৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৯ শিশু) নির্মমভাবে প্রাণ হারায়। এটি আমাদের জন্য ভয়ংকর এক বিপর্যয়। এখানকার মানুষ শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন।

আসিফ জানান, মৃত আত্মীয়দের মধ্যে ছিলেন নাসিরুদ্দিন (৭০), তার স্ত্রী আখতার বেগম (৬২), ছেলে সালাউদ্দিন (৪২), তিন মেয়ে আমিনা (৪৪), রিজওয়ানা (৩৮) ও শাবানা (৪০) এবং তাদের সন্তানরা।

রোববার স্থানীয় সময় রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে মক্কা-মদিনা রুটের মুহরাস বা মুফরিহাত এলাকায় ঘটেছে এ দুর্ঘটনা। ডিজেলবাহী একটি ট্যাংকারের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষে এতে দ্রুত আগুন ধরে যায়। মুহরাস থেকে মদিনার দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। তেলেঙ্গানার এই ওমরাহযাত্রীরা মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। দুর্ঘটনার সময় বাসের অধিকাংশ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে।

তেলেঙ্গানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রেভান্থ রেড্ডি এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মক্কা-মদিনায় সড়ক দুর্ঘটনার জেরে তেলেঙ্গানার ৪২ নাগরিকের নিহতের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী গভীরভাবে শোকাহত। বাসের যাত্রীদের সবার ব্যাপার নাম-ঠিকানা সংগ্রহ ও খোঁজ-খবর নিতে রাজ্যপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে সৌদিতে যে কোনো সহায়তা পাঠাতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার।

Leave a Reply

Translate »