আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ পাপুয়া নিউ গিনির একটি বিতর্কিত সোনার খনিকে কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বী উপজাতিদের মধ্যে ধারাবাহিক গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রটির পুলিশ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।
পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীকে লড়াই থামানোর জন্য জরুরি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ‘প্রাণঘাতী শক্তি’ ব্যবহারের অনুমতিও রয়েছে। পাশাপাশি সেখানে মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং রাতভর কারফিউ জারি করা হয়েছে।
আগস্ট মাসে সাকার উপজাতির সদস্যরা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পিয়ান্ডে উপজাতির মালিকানাধীন জমিতে বসতি স্থাপন করার পর থেকে দেশটির মধ্যভাগের পাহাড়ি এলাকায় পোরগেরা সোনার খনির কাছে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর রবিবার এক দিনেই উপজাতিরা ৩০০ রাউন্ডেরও বেশি গুলি ছুড়েছে। এ ছাড়া পাপুয়া নিউ গিনি পোস্ট-কুরিয়ার জানিয়েছে, তাদের ভবন পোড়ানো হয়েছে, বন্ধ করা হয়েছে অঞ্চলটির স্কুল, হাসপাতাল ও সরকারি অফিস।স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লড়াই তীব্র হওয়ার কারণে কানাডার মালিকানাধীন খনিটি অল্প সময়ের জন্য উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিল।
এটি পাপুয়া নিউ গিনির দ্বিতীয় বৃহত্তম খনি।
পুলিশ কমিশনার ডেভিড ম্যানিং বলেন, ‘এই অবনতিশীল পরিস্থিতি অবৈধ খনি শ্রমিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের কারণে সৃষ্টি হয়েছে, যারা সহিংসতার মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়কে আতঙ্কিত করছে এবং ঐতিহ্যবাহী ভূমির মালিকদের শিকার করছে। সরলভাবে বলতে গেলে, যদি কেউ প্রকাশ্য স্থানে অস্ত্র তুলে ধরে বা অন্য কাউকে হুমকি দেয়, তাকে গুলি করা হবে।পাপুয়া নিউ গিনির পাহাড়ি এলাকায় উপজাতিদের মধ্যে সংঘর্ষ একটি সাধারণ ঘটনা।
কিন্তু স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ব্যবহার সাম্প্রতিক সহিংসতাকে আরো তীব্র করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই বছরের শুরুর দিকে দেশটির পূর্ব সেপিক প্রদেশের তিনটি গ্রামে হামলায় ২৬ জন নিহত হয়, যার মধ্যে ১৬ জন শিশু। এর আগে ২০২২ সালে খনির কাছে বসবাসকারী প্রতিদ্বন্দ্বী উপজাতিদের মধ্যে গোলাগুলিতে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছিল।
একসময় পাপুয়া নিউ গিনির বার্ষিক রপ্তানি আয়ের প্রায় ১০ শতাংশ আসত পোরগেরা সোনার খনি থেকে। কিন্তু উপজাতিদের সহিংসতা ও সরকারের ধীর গতির দখল প্রক্রিয়ার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে উৎপাদন স্থবির হয়েছে।