ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের বনগজ- কৃষ্ণনগর গ্রামের জনদুর্ভোগ লাগবে খালের উপর সংযোগ সড়ক বিহীন অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। এরই মধ্যে সড়ক ছাড়া সেতুটি প্রায় ২২ বছর দাঁড়িয়ে আছে।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) নয়টার দিকে ইটবোঝাই একটি নৌকার ধাক্কায় স্থানীয় নয়াখালের ওপরে থাকা সেতুটির অর্ধেক ভেঙে পড়ে। এ সময় সেতুটি ভেঙে নৌকার ওপর পড়লে ইটসহ নৌকাটিও ডুবে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালে একটি নৌকা জেলার শাহবাজপুর ডিজিটাল ব্রীকফিল্ড থেকে ৭ হাজার ইট বোঝাই করে আখাউড়া উপজেলার ঘোলখার যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেন। এসময় নৌকাটি ওই সেতুর কাছে আসলে খালে প্রবল স্রোত থাকায় মাঝি নৌকাটির নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি । এতে করে নৌকাটি সেতুর পিলারের সাথে ধাক্কা লাগলে সেতুটি ভেঙে নৌকার উপরে পড়ে যায়। এতে নৌকায় থাকা শাহবাজপুর ইউনিয়নের রাজবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল খালেক (৪৫) ও হবি (৪২) এই দুই শ্রমিক আহত হয়। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রতক্ষ্যদর্শী বনগজ পূবপাড়ার বাসিন্দা মো. আরমান খান জানান আমি দূরে দাড়িয়ে ছিলাম হটাৎ দেখি নৌকাটি সেতুর পিলারে ধাক্কা মারে এতে সেতুটি ভেঙে পড়ে যায়। আমি দৌড়ে কাছে এসে দেখি নৌকায় থাকা লোকজন নৌকা থেকে বেড়হয়ে আসছে।
নৌকার মাঝি মো. রফিক জানায় আমরা শাহবাজপুর থেকে ইট নিয়ে ঘোলখার যাওয়ার পথে এই সেতুর নিচে আসার পর এখানে প্রবল স্রোতে পানি চাপ দিলে নৌকার মাথাটা সেতুর পিলারে ধাক্কা লাগার সাথে সাথে সেতুটি ভেঙে পড়ে।
স্থানীয় বনগজ গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান লালু জানান, সকালে প্রায় সাত হাজার ইট বোঝাই একটি নৌকার সামনের অংশ সেতুর মাঝখানের পিলারে ধাক্কা দিলে সেতুটির আংশিক ভেঙে যায়। এসময় ভাঙা অংশ নৌকার ওপর পড়লে নৌকাটি খালের পানিতে ডুবে যায়। তবে মাঝিসহ সহযোগীদের থাকার কক্ষটি নৌকার পেছন দিকে থাকায় তারা অক্ষত আছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, ১৯৯৯ সালে এলজিইডির অধিনে উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিলের অর্থে ১২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও আট ফুট প্রস্থের সেতুটি বনগজ ও কৃষ্ণনগর গ্রামের মধ্যবর্তী জায়গায় একটি খালের ওপর এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
বনগজ- কৃষ্ণনগর এবং একই উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ভবানীপুর ও পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটিয়ারা ও বরিশল গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধার কথা চিন্তা করেই সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। নির্মাণের দুই দশক পেরিয়ে গেলেও আজো কোনো সংযোগ সড়ক হয়নি। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন ওই দুই গ্রামসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এলজিইডি’র আখাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, “ইউএনও’র মাধ্যমে সেতুটি ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলামকে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকৌশলী সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।