৩৩ বছর আগে মারা যাওয়া প্রাণীকে বাঁচিয়ে তুললেন বিজ্ঞানীরা!

জন্ম হরে মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর কি নতুন করে ফিরে আসা যায়? আমেরিকার এক দল বিজ্ঞানী সেই অসাধ্যই সাধন করে দেখিয়েছেন। ৩৩ বছর আগে মারা যাওয়া এক প্রাণীকে জীবন্ত করে তুললেন তারা।

ব্ল্যাক ফুটেড ফেরেট। অনেকটা বেজির মতো দেখতে চারপেয়ে প্রাণী। পায়ের একেবারে নীচের অংশ কালো লোমে ঢাকা। সে কারণেই ব্ল্যাক ফুটেড অর্থাৎ কালো পা।

উত্তর-মধ্য আমেরিকা জুড়ে এই প্রাণীর বাস। বাড়তে থাকা জনবসতির কারণে এই প্রাণীর মূল খাদ্য পেইরি ডগ (কাঠবিড়ালী কিংবা বড় ইঁদুর জাতীয় প্রাণী) ক্রমে অপ্রতুল হয়ে পড়েছে। খাদ্য সঙ্কটের জেরে এই প্রাণীর সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে।

এই প্রজাতিটি ক্রমশ কমে আসছে। তাঁদের বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এ বার এক মৃত ফেরেটকে বাঁচিয়ে তুললেন তারা।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই প্রাণীটি ১৯৮৮ সালে মারা গিয়েছিল। তার পর থেকেই তার দেহ সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা।

ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিজ্ঞানীরা এই প্রাণীটিকে জীবিত অবস্থাতেই নিজেদের সংগ্রহে রেখে দিয়েছিলেন। সেটা ১৯৮০ সাল। তার আট বছর পর প্রাণীটির মৃত্যু হয়। আমেরিকার ফিস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি সেই মৃত প্রাণীটিকেই জীবিত করে তুলেছেন।

প্রকৃতপক্ষে প্রাণীটির ডিএনএ সংরক্ষিত ছিল বিজ্ঞানীদের কাছে। সেই ডিএনএ-র ক্লোন বানিয়েই হুবহু একই দেখতে প্রাণীর জন্ম দিয়েছেন তারা। প্রাণীটির নাম রেয়েছেন এলিজাবেথ অ্যান। এটি একটি স্ত্রী ফেরেট।

চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে পুনর্জন্ম জয় ফেরেটটির। প্রাণীটিকে আপাতত গবেষণাগারের উপযুক্ত পরিবেশে রাখা রয়েছে। কিছু দিন পর্যবেক্ষণের পর তাকে বন্য পরিবেশে ছাড়া হবে। বন্য পরিবেশে সেটি যদি বাঁচতে সক্ষম হয় তা হলে এই প্রজাতির ক্রমহ্রাসমান সংখ্যাও নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, বিশ্বাস বিজ্ঞানীদের।

১৯৮২ সালে প্রথম এই প্রজাতি ‘বিপদগ্রস্ত’ হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়। ১৯৯৬ সাল নাগাদ এর সংখ্যা আরও কমে গিয়ে লুপ্তপ্রায় পর্যায়ে পৌঁছয়। তার পর শুধুমাত্র সংরক্ষণের জেরে এর কিছুটা সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ২০০৮ সালে ফের এই প্রজাতিকে ‘বিপদগ্রস্ত’ তালিকাভুক্ত করা হয়।

এই মুহূর্তে মাত্র ৬৫০টি ফেরেট জীবিত রয়েছে। তাদের মধ্যে স্ত্রীর সংখ্যা আরও কম। নতুন ক্লোন প্রাণীটি যদি বংশবিস্তারে সক্ষম হয় তা হলে ক্রমহ্রাসমান প্রজাতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই চিন্তামুক্ত হবেন বিজ্ঞানীরা।

Leave a Reply

Translate »