ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কর্মরত ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে গত দুই বছরে। এর মধ্যে কনস্টেবল, সহকারী উপপরিদর্শক ও উপপরিদর্শক রয়েছেন। এছাড়া জেলার ১০০ পুলিশ সদস্যকে বিভিন্ন অপরাধে বড় ধরনের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার জন্য তাদের এই শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান এই তথ্য। পুলিশ সুপার কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘পুলিশ বিভাগে কোনো অপরাধীর জায়গা নেই। এই ঘর অবশ্যই অপরাধমুক্ত হবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিভিন্ন সেবা ডিজিটালাইজড হওয়া সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ নামে একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছে। যে কেউ তার এনআইডি দিয়ে ওই অ্যাপের মাধ্যমে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ বিভাগে কোনো অপরাধীর জায়গা নেই। আমি ২৫ জনকে চাকরিচ্যুত করেছি। ১০০ জনকে বড় ধরনের শাস্তি দিয়েছি। আমার হাত এক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য করেনি। ২৫ জনকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। এই ঘর অবশ্যই অপরাধমুক্ত হবে।’
জানা গেছে, চাকরিচ্যুতদের বাইরেও যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাদের কারো ইনক্রিমেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। অনেককে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশের ডিজিটাল সেবার কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড নামে একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছে। যে কেউ তার এনআইডি দিয়ে ওই অ্যাপের মাধ্যমে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারবেন। এর ফলে থানাগুলোতে এখন আর পুরোনো পদ্ধতিতে জিডি বইয়ের ব্যবহার করতে হয় না। এছাড়া ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা সিডিএমএসের মাধ্যমে জেলার সব পুলিশ সদস্যের তিন বেলা হাজিরা ও ডিউটি নিশ্চিত করা হচ্ছে।’
এসপি বলেন, ‘আগে হাতে লিখে মামলা রুজু করা হতো। এখন সিডিএমএসের মাধ্যমে রুজু করা হচ্ছে। এ সিস্টেমের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে বসে মামলার সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড, জব্দকৃত আলামতের তালিকা তৈরি, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র ও সূচিপত্র প্রস্তুত করা হয়- যার ফলে সংশ্লিষ্ট সার্কেল কর্মকর্তারা সিডিএমএসের মাধ্যমে মামলা তদন্তের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) আবু সাঈদ, জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিছুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (কসবা সার্কেল) নাহিদ হাসান ও ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহাম্মেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।