প্রতিটি শহর লকডাউন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে হোম কোয়ারান্টাইন এ থাকতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে। সামাজিক দূরত্ব বজায় ও ঘরে থাকার নির্দেশনা মানতে গিয়ে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ভয়াবহ এ পরিস্থিতিতে চরম দারিদ্র্যের হার আগের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেড়ে গেছে। করোনায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশের ১৪ শতাংশ মানুষেরই ঘরে কোনো খাবারই নেই।
বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক পরিচালিত জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে। গত ৩১ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে ওই জরিপটি করা হয়। ৬৪ জেলায় ২ হাজার ৬৭৫ জন নিম্নআয়ের মানুষকে এ জরিপে অংশগ্রহণ করানো হয়।
ব্র্যাকের হেড অব মিডিয়া অ্যান্ড এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স রাফে সাদনান আদেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্যগত দিকগুলো সম্পর্কে নিম্ন আয়ের মানুষের উপলব্ধি এবং এর অর্থনৈতিক সংকট সম্পর্কে ধারণা পেতে জরিপটি পরিচালিত হয়।
ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেইঞ্জ প্রোগ্রাম পরিচালিত জরিপটিতে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করেন ব্র্যাকের মাইক্রোফাইন্যান্স, আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এবং পার্টনারশিপ স্ট্রেংদেনিং ইউনিটের কর্মীরা।
জরিপে দেখা যায়, সরকারি ছুটি বা সামাজিক দূরত্বের কারণে ৭২ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছেন অথবা তাদের কাজ কমে গেছে। ৮ শতাংশ মানুষের কাজ থাকলেও এখনো বেতন পাননি। কৃষিকাজে সম্পৃক্তদের (৬৫ শতাংশ) তুলনায় অ-কৃষিখাতের দিনমজুর বেশি (৭৭ শতাংশ) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৫১ শতাংশ রিকশাচালক, ৫৮ শতাংশ কারখানা শ্রমিক, ৬২ শতাংশ দিনমজুর, ৬৬ শতাংশ হোটেল বা রেস্তোরাঁকর্মী জানান, চলতি মাসে তাদের আয় নেমে এসেছে শূন্যের কোঠায়। ১৪ শতাংশ মানুষের ঘরে কোনো খাবারই নেই। ২৯ শতাংশের ঘরে আছে ১ থেকে ৩ দিনের খাবার।
জরিপে দেখা যায়, কী কী ব্যবস্থা অবলম্বনের মাধ্যমে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব, সে বিষয়ে ৩৬ শতাংশ উত্তরদাতার স্পষ্ট ধারণা নেই। এমনকি করোনা সংক্রমণের লক্ষণ (জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট) দেখা দিলে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরাসরি চলে না আসার যে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে সে বিষয়েও ধারণা নেই অধিকাংশের।
৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, প্রতিবেশী এসব লক্ষণ দেখা দিলে তাকে শহরের হাসপাতাল বা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেবেন। মাত্র ২৯ শতাংশ হেল্পলাইনে ফোন করার কথা বলেছেন।