রাত পোহালেই বড় পর্দায় মুক্তি পাবে ইতি তোমারই ঢাকা।বিশ্বের প্রায় ২৫টির বেশি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর পর শুক্রবার বাংলাদেশের ১৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে এর প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।
“ইতি তোমারই ঢাকা”অ্যান্থলজি বা অমনিবাস ফিল্ম। একসময় অ্যান্থলজি বা অমনিবাস চলচ্চিত্রের ধারণা বিশ্ব চলচ্চিত্রে সচরাচর ব্যাপার হলেও আমাদের দেশে বিরল। সহজ কথায়, একই বিষয়ের ওপর অনেক ছোট ছোট গল্পের সমন্বয়ে বানানো একটা সিনেমাকে বলা হয় অমনিবাস। এই যেমন, পাশের দেশ ভারতেরলাস্ট স্টোরিজ। শহরকেন্দ্রিক অমনিবাস ছবির ধারণাটাও নতুন নয়৷বার্লিন, আই লাভ ইউ,নিউইয়র্ক, আই লাভ ইউ, বোম্বে টকিজ—আরও কত নাম পাওয়া যাবে, কিন্তু ঢাকা শহরের জন্য “ইতি তোমারই ঢাকা”ই প্রথম কোনো চলচ্চিত্র প্রয়াস। ইতিহাসে লেখা হবে, এই ছবির মধ্য দিয়ে ১১ জন নির্মাতা একটি অমনিবাস চলচ্চিত্র নিয়ে এসেছেন বড় পর্দায়।
“ইতি তোমারই ঢাকা” ছবিটির দৈর্ঘ্য ২ ঘণ্টা ১৬ মিনিট। ১১টি ছোটগল্প মিলে এই ছবি। প্রতিটি গল্পের দৈর্ঘ্য ১০ থেকে ১২ মিনিট। নির্বাহী প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর ও ইবনে হাসান খান। ক্রিয়েটিভ প্রযোজক আবু শাহেদ ইমন।
ছবিগুলো নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশের ১১ জন তরুণ নির্মাতা—গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, নুহাশ হুমায়ূন, মাহমুদুল ইসলাম, মীর মোকাররম হোসেন, রাহাত রহমান, রবিউল আলম রবি, সালেহ সোবহান অনীম, সৈয়দ আহমেদ শাওকী, তামিন নূর ও তানভীর আহসান। আবু শাহেদ ইমনের মতে, ছবিটি ১১ তরুণের ভাবনায় ঢাকা শহরের প্রতি তাঁদের প্রেমকাব্য অথবা কেবলই উড়োচিঠি, যা লেখা হয়েছে ক্যামেরার চোখে।
এই ছবির অভিনয়শিল্পী নুশরাত ইমরোজ তিশা বলেন, এক ছবিতেই ১১ গল্প। ১১ রকমের অনুভূতি এক টিকিটেই। দর্শকদের অবশ্যই এই ছবি দেখা উচিত। এ রকম একটা নতুন ধরনের যাত্রার সঙ্গে থাকা উচিত।
নির্বাহী প্রযোজক ইবনে হাসান খানের মতে, দর্শক এই প্রথম উদ্যোগকে সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ, সব দর্শকের সব প্রিয় তারকা আছেন এই একটি ছবিতে। তাঁর মতে, অভিনয়শিল্পীদের এত বড় কোলাবরেশন আগে বাংলাদেশের অন্য কোনো ছবিতে হয়নি। ক্রিয়েটিভ প্রযোজক আবু শাহেদ ইমন বলেন, এক টিকিটে ১১ ছবি দেখার সুযোগ সচরাচর মেলে না। এই সুযোগ দর্শকের হাতছাড়া করা ঠিক হবে না।
পরিচালক কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বললেন, এই ছবিতে বিভিন্ন স্বাদের গল্প আছে, আছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের কথাও। এ ধরনের গল্প এর আগে কেউ বড় পর্দায় দেখানোর কথা ভাবেননি।
ইউটিউবের ট্রেলার ভিডিও-তে অনেকে আশার কথা বললেও আবার কয়েকজন ভ্রু কুঁচকে ‘এসব ছবি এই দেশে চলবে না’ বলেও যে রায় দেননি, তা নয়৷ তবে মোটের ওপর ছবি নিয়ে ইতিবাচকতার পারদ অনেক উঁচুতে। বিশেষ করে সংলাপ আর আবহসংগীত তো প্রত্যাশা অনেকের বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই ছবিতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা ৫৪ জন অভিনয়শিল্পী। নানা রঙের বৈচিত্র্যময় সব চরিত্র নিয়ে পর্দায় হাজির হবেন তাঁরা। দেখা যাবে ফজলুর রহমান বাবু, ইলোরা গওহর, নুসরাত ইমরোজ তিশা, অর্চিতা স্পর্শিয়া, অ্যালেন শুভ্র, ইরেশ যাকের, মোস্তফা মনোয়ার, মনোজ প্রামাণিক, ইন্তেখাব দিনার, শতাব্দী ওয়াদুদ, ইয়াশ রোহান, রওনক হাসান, শেহতাজ, গাউসুল আলম শাওন, মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, দোয়েল ম্যাশ, লুৎফর রহমান জর্জসহ আরও অনেককে।