আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ দেখতে দেখতে কেটে গেল দুই বছর। ২০১৯ সালের এই দিনে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নির্মাতা ও অভিনেতা হুমায়ূন সাধু। আজ সোমবার (২৫ অক্টোবর) তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
চট্টগ্রামের ছেলে ছিলেন হুমায়ূন সাধু। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। ৯ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সপ্তম। দৈহিক গঠনে একটু ছোট হওয়ায় তার বাবা তাকে স্কুলে পাঠাতে চাননি। বড় বোনের কাছেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন সাধু। পরে বড় বোন তাকে রঙ্গিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠান। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাকে নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। সাধুর বড় ভাই সাইফুল কবীর তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের ছাত্র। তিনি আবার হুমায়ূনকে সেই স্কুলে নিয়ে যান এবং প্রথম সাময়িক পরীক্ষা পর্যন্ত তাকে সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন। হুমায়ুন দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৩০ জন ছেলে-মেয়েকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করে উত্তীর্ণ হন। সহপাঠীরা তখন সাধুকে কাঁধে নিয়ে উল্লাস করে।
এসএসসি পাসের পর নাসিরাবাদ কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন হুমায়ূন সাধু। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ চলচ্চিত্র দেখার নেশায় এইচএসসির রেজাল্ট তেমন ভালো হয়নি। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হন তিনি।
২০১০ সালে ব্রিটিশ কাউন্সিলে ক্যাথরিন মাসুদের অধীনে একটি কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন সাধু। সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘গড ভার্সেস গড’ নামে একটি শর্টফিল্ম তৈরি করেন। ২০১২ সালে তার পরিচালিত প্রথম নাটক ‘দর্শন’ বৈশাখী টিভিতে প্রচারিত হয়। তিনি সাতটি টিভি নাটক পরিচালনা করেছেন। ‘সিজোফ্রেনিয়া’ ও ‘অ-মানুষিক’ নামে দুটি টেলিফিল্মও বানিয়েছেন। অভিনয় করেছেন সমানসংখ্যক নাটকে।
হুমায়ূন সাধুর আলোচিত নাটক ‘চিকন পিনের চার্জার’। নাটকটির লেখক ও পরিচালক তিনি নিজেই। এ নাটকে অভিনয়ও করেছেন। তার বিপরীতে ছিলেন অভিনেত্রী শাহতাজ। টেলিফিল্ম ছবিয়াল রি-ইউনিয়নের অংশ হিসেবে বানিয়েছেন এটি। জীবন থেকে নেওয়া গল্প পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন।
প্রসঙ্গত, হুমায়ূন সাধুকে সর্বশেষ অভিনেতা হিসেবে দেখা গেছে মাবরুর রশিদ বান্নাহর ‘ভিউ বাবা’ নামের একটি নাটকে। সাধুর লেখা অবলম্বনে বেশ কিছু শর্টফিল্ম ও নাটক তৈরি হয়েছে। এ ছাড়াও তার লেখা গল্পের বই ‘ননাই’ প্রকাশিত হয়েছে।