আইকোনিক ফোকাস ডেস্ক: মহাপঞ্চমীতেই একসঙ্গে ৬টি বাংলা সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। তবে পুজোর সময় মুক্তি পাওয়া ছবির তালিকায় রহস্য কিংবা থ্রিলার থাকবে না তা হতে পারে না। এবার খুনের তদন্ত করতে আসছেন অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা ও বনি সেনগুপ্ত! তাঁদের ছবি ‘FIR’ মুক্তি পেল পঞ্চমীর দিন। ছবিতে বনি-অঙ্কুশ ছাড়াও রয়েছেন ঋতাভরী চক্রবর্তী, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, ফলক রশিদ রায় ও অর্নিবাণ চক্রবর্তী। এই ছবির হাত ধরেই বড় পর্দায় ডেবিউ করলেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য। এই প্রথমবার ঋতাভরীর (Ritabhari Chakraborty) সঙ্গে জুটি বাঁধলেন অঙ্কুশ (Ankush Hazra)। এছাড়াও এই ছবিতে বনি ও ফলকের নতুন জুটিকেও দর্শক দেখতে পাবেন। ছবির পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, তাঁর পাশাপাশি চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন অনিরুদ্ধ দাশগুপ্তও।
ছবির মূল প্লট হল একটি জায়গার স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকাণ্ড উপর। যেখানে একের পর এক খুন হচ্ছে তবে সেই খুনের কিনারা করতে ব্যর্থ সেখানকার পুলিশ। কারণ গোটা জায়গাটাই দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। নানা অসৎ কারবার চলছে সেখানে। ছবিতে এলাকার নাম রঘুনাথপুর। থানার SI নরেন বসাখের চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেতা বনি সেনগুপ্তকে। এই থানারই OC-র চরিত্রে রয়েছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। এই রঘুনাথপুরে একটি খুনের তদন্ত করতে পৌঁছয় লালবাজার ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার অভ্রজিৎ দত্ত। এই পুলিশ অফিসারের চরিত্রেই রয়েছেন অঙ্কুশ হাজরা। একেবার সৎ, কর্তব্যে অবিচল অফিসার, যিনি প্রথম দিন রঘুনাথপুরে পা দিয়েই সেখানকার হালহকিকত সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যান। সেখানকার বাহুবলী ভগীরথ মিশ্রের চরিত্রে দেখা যাবে শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়কে। খুব বেশি ‘স্ক্রিন টাইমিং’ না হলেও অভিনয় গুণে দর্শকের দৃষ্টি আর্কষণ করবেন শান্তিলাল।
একটি খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সেখানকার ফরেন্সিক বিভাগের ডাক্তার ইশার সঙ্গে আলাপ হয় অফিসার অভ্রজিৎ দত্তের। ইশার চরিত্রে দেখা গিয়েছে ঋতাভরীকে। রহস্যের মোড়কে শুরু হয় গল্প। যে কোনও ক্রাইম থ্রিলারের সাধারণ গল্প বলায় কায়দায় যেটি সব থেকে বিখ্যাত তা হল, ‘Who Done It?’ মেথড। সেভাবেই এগোয় এই ছবির গল্প। তবে সেই গল্প বলার ধরনের কারণে ছবির স্ক্রিনপ্লে খানিকটা হলেও অহেতুক দীর্ঘায়িত হয়েছে। ছবিটা ২ঘণ্টা ৩৫ মিনিটের না হয়ে আরও একটু ছোট করলেও মন্দ হত না। তবে অনেকগুলি চরিত্রের পর পর খুন হওয়া ও তার রহস্য সমাধান করার ধরনে বাড়তি চরিত্রের ঘনঘটা অনেক সময় দর্শককে একটু বিভ্রান্তও করতে পারে।
তবে এই ছবিতে নজর কাড়বেন পুলিশ অফিসার অভ্রজিৎ দত্ত। একেবারে মাপা অভিনয় করেছেন অঙ্কুশ হাজরা। সাধরণত দর্শক তাঁকে এভাবে আগে কখনও দেখেনি। যেটা বলতেই হয় অভিনেতা বনি সেনগুপ্তের কমিক টাইমিং। এই ছবিতে বনির চরিত্রর অনেকগুলি শেডস রয়েছে। তবে ঋতাভরী ও অঙ্কুশ জুটি হিসেবে দাগ কাটতে পারেনি। ঋতাভরী ভালো অভিনেত্রী হওয়ার সত্ত্বেও এ ছবিতে কোথাও যেন চরিত্রের গাম্ভীর্যকে ধরে রাখতে কিছুটা ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁকে ভীষণ আড়ষ্ট মনে হতে পারে কয়েকটা জায়গায়। অন্যদিকে বনির বিপরীতে ফলক রশিদ রায়কে অনেকটা স্ক্রিন টাইমিং দেওয়া সত্ত্বেও তাঁর অভিনয় একটু ‘ওভার দ্য টপ’।
যেটা এই ছবির USP অঙ্কুশ-বনি দুই মূল ধারার বাণিজ্যিক ছবির যুগলবন্দী ও তাঁদের পরিমিত অভিনয়। এই ছবির গল্পের ধাঁচে বলিউডে বেশ কয়েকটি ছবি হলেও তুলনা না টেনে একে মৌলিক গল্প বলাই ভালো ।