প্রিয় দর্শক আজ এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যে সম্পর্কে আপনাদের বিভিন্ন ধারনা হয়তো আজ থেকেই বদলে যাবে। তাহলে দেরি না করে পরম করুনাময় আল্লাহ তা‘য়ালার দোয়ায় শুরু করছি। আজকের আলোচনার বিষয় হযরত ইউনুস (আ:)এর জীবন কাহিণী সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য। কোরআনে ছয়টি সূরায় মোট ১৮ বার ইউনুস (আ:)এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সূরাগুলো হলো- আনআ’ম, ইউনুস, আস ছাফ্ফাত, আল আম্বিয়া, এবং আল ক্বলম। এর মাঝে প্রথম চারটি সূরায় তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। শেষের দু’টি সূরায় তাঁর গুণপ্রকাশক শব্দ ‘যুন্নুন’ আরবি এবং ‘সাহিবুল হূত’ উল্লেখ করা হয়েছে। আর সূরা আন-নিসা ও সূরা-আনআ’মে পয়গম্বরদের তালিকার মাঝে শুধু তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়েছে; অন্য কোন আলোচনা করা হয়নি। এছাড়া বাকী চারটি সূরায় তাঁর ঘটনার ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে। ইউনূস (আ:)এর বংশ সম্পর্কে শুধু এটুকুই জানা যায় যে, তাঁর পিতার নাম ছিল ‘মাত্তা’।বুখারী শরীফের একটি হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে এ কথা স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে। বাইবেলে ইউনূস (আ:)এর নাম ‘ইউনাহ’ এবং তাঁর পিতার নাম ‘আমতা’ বলা হয়েছে। তবে ইউনূস ইবনে মাত্তাহ এবং ইউনাহ ইবনে আমতার মাঝে ব্যক্তি হিসেবে কোন পার্থক্য নেই। এটা আরবি ও হিব্রু ভাষার উচ্চারণের পার্থক্য।
ইরাকের সুপ্রসিদ্ধ জনপদ ‘নীনাওয়া’এর অধিবাসীদের হিদায়াতের জন্য তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল। নীনাওয়া আশূরী রাজ্যের রাজধানী এবং মাওসেল এলাকার কেন্দ্রীয় শহর ছিল। কোরআনে এই শহরের জনসংখ্যা এক লক্ষাধিক বলা হয়েছে।[৪] যতদূর জানা যায় হযরত ইউনূস (আ) অল্প বয়সেই নবুয়্যত লাভ করেন এবং দ্বীনের দাওয়াতে নিজেকে নিয়োজিত করেন। ২৮ বছর বয়সে ইউনূস (আ:) নবুয়্যত লাভ করেন এবং নীনাওয়াবাসীদের দাওয়াত দিতে আদিষ্ট হন। দীর্ঘদিন দাওয়াত দেয়ার পরও নীনাওয়াবাসী ঈমান আনে না। অনেক দাওয়াতের পরও ঈমান না আনায় হযরত ইউনূস ক্রুদ্ধ হয়ে নীনাওয়াবাসীর জন্য গজবের দোয়া করেন এবং ওই শহর ত্যাগ করেন। আল্লহ্ রাব্বুল আলামিনের কাছে তার এই আচরণ ভালো লাগেনি। শহরত্যাগের উদ্দেশ্যে তিনি ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদীর তীরে পৌঁছার পর তিনি নৌকায় আরোহণ করেন। নৌকা যাত্রা শুরু করে। মাঝ নদীতে যাওয়ার পর আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের ইচ্ছায় নৌকা ঝড়ে আক্রান্ত হয়। সে যুগের কুসংস্কার অনুযায়ী নৌকার আরোহীরা মনে করল, নিশ্চয় এই নৌকায় কোন পলাতক দাস আছে। এটা শুনে ইউনূস (আ:) এর চৈতন্যদয় হলো যে, তিনি শহর ছাড়ার ব্যাপারে আল্লাহর অনুমতির অপেক্ষা করেননি। তিনি নিজের দোষ স্বীকার করলেন। নৌকার আরোহীরা তাঁর সততায় মুগ্ধ হলো এবং তাকে নৌকা থেকে ফেলে দিতে সম্মত হলো না। শেষ পর্যন্ত তারা লটারী করল এবং সেখানেও ইউনূস (আ:) এর নামই উঠল। ফলে বাধ্য হয়ে তারা ইউনুস (আ:) কে নদীতে ফেলে দিল। এসময় এক বিরাট মাছ তাকে গিলে ফেলল। কারো কারো মতে, সেটা ছিল তিমি মাছ। তিমির পেটের অন্ধকারের মাঝে তিনি আল্লাহর কাছে কাকুতি মিনতি করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ তার দোয়া কবুল করলেন। ফলে আল্লাহর আদেশে মাছটি তাকেঁ নদীর তীরে এসে উগড়ে দিল। সুপ্রিয় দর্শক হযরত ইউনূস (আ) যে দোয়া পাঠ করে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা এবং বিপদ থেকে উদ্ধারের প্রার্থনা করেছিলেন তা হলঃ “লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জালিমীন।“ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই দোয়া বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তাই মানুষ যেকোন বিপদে পড়লে উক্ত দোয়া আমল করে থাকে। কোরআনের বর্ণনা মতে, দীর্ঘদিন মাছের পেটে থাকার কারণে তিনি অসুস্থ এবং দুর্বল হয়ে পড়েন। তাই আল্লাহ আপন অনুগ্রহে সেখানে লাউগাছ উৎপন্ন করেন। সুস্থ হওয়ার পর তাকেঁ আবার নীনাওয়াবাসীদের কাছেই পাঠানো হয় এবং নীনাওয়াবাসী ইমান আনে। সুপ্রিয় দর্শক হযরত উইনূসের জীবনী হতে আমরা জানতে পারলাম যে, আমাদের জীবনে ধৈর্য ধারন কত বড় একটি ব্যাপার। ধৈর্যচ্যুতি সবসময় আমাদের বিপদ ডেকে আনতে পারে। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকে ধৈর্যশিল হওয়ার তৌফিক দান করুন।
দিন ও আখিরাত সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে যুক্ত হোন আমাদের ইসলামিক গ্রুপে: https://www.facebook.com/groups/455043089025257
এবং FOLLOW করুন আমাদের ইসলামিক ফেসবুক পেজ :
https://www.facebook.com/Dhaka-news-24-100804915516889/
YOUTUBE ইসলামিক ভিডিও দেখতে এখনই আমাদের ইসলামিক চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন: