আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ অনেকেই আছেন যারা ঘুমের মধ্যে নাক ডাকেন। আর ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগের লক্ষণ। এছাড়াও অ্যালজাইমার্স রোগের সঙ্গে স্লিপ অ্যাপনিয়ার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এই দুই রোগই মস্তিষ্কের একই রকম ক্ষতি করে। এমন কি স্মৃতিশক্তি হারানোর জন্যও এই রোগ দায়ী।
সম্প্রতি স্লিপ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে। আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাটি পরিচালনা করেন। এমন খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম নিউজ এইট্টিন।
ওই গবেষণায় বলা হয়, স্লিপ অ্যাপনিয়া রয়েছে, এমন রোগীর অ্যালজাইমার্স হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া এমন এক অসুখ, যেখানে রোগীর ঘুমের মধ্যে ঘন ঘন শ্বাস নেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। বিশ্বে প্রায় ৯৩ কোটি মানুষ এ সমস্যায় আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশের বয়স্কদের স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত।
আরো বলা হয়, এদিকে ডিমেনশিয়ার সব চেয়ে চেনা ভাগগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যালজাইমার্স। ডিমেনশিয়ার রোগীদের ৭০ শতাংশ রোগীর অ্যালজাইমার্স হয়।
মূলত ঘুমের মধ্যে নাক ডাকাই স্লিপ অ্যাপনিয়ার একটি অতি পরিচিত লক্ষণ। অনেকেই নাক ডাকাকে গভীর ঘুমের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু ঘটনা একেবারেই উল্টো। ঘুমের সময় শ্বাস নেয়ার ব্যাঘাত ঘটলে মানুষ নাক ডাকে। এদিকে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলাও একটা পরিচিত রোগ। যাকে অ্যালজাইমার্স ডিজিজ বলা হয়। এটি একটি স্নায়ুঘটিত রোগ। মানব মস্তিষ্কের কোষ মারা যেতে থাকলে এই রোগ হয়।
তবে রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা কিছুটা কম। তাই সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ২১ সেপ্টেম্বর অ্যালজাইমার্স সচেতনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ৬৫ অথবা তার বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে ৬ শতাংশই এই রোগে আক্রান্ত। এরপরও প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে দু’জনই এই রোগ সম্পর্কে জানেন না। যে কোনো সামাজিক স্তর থেকে আসা মানুষের অ্যালজাইমার্স হতে পারে।
এই গবেষক দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন স্টিফেন রবিনসন। তিনি বলেন, যদি মধ্যবয়সে কারো স্লিপ অ্যাপনিয়া হয়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অ্যালজাইমার্স হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। আর যদি অ্যালজাইমার্স থাকে, তা হলে ওই বয়সের অন্য কারো তুলনায় ওই মধ্যবয়স্ক ব্যক্তির স্লিপ অ্যাপনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তিনি আরো বলেন, অ্যালজাইমার্স রোগের আসল কারণ খুঁজে পাওয়াটা আজও চিকিৎসকদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। তবে অ্যালজাইমার্স এবং স্লিপ অ্যাপনিয়া, দুই ক্ষেত্রেই মস্তিস্কের কার্যক্ষমতার ক্ষতি হতে থাকে। যা অত্যন্ত ভয়ের কারণ।