আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃরান্নাঘরও কিন্তু ঘরের গৃহিণীর কাজের জায়গা। দিনের কতগুলো সময় সে রান্নাঘরে কাটিয়ে দেয় তার কোন হিসেব নেই। তাই এই স্থানটা যথেষ্ট পরিপাটি ও কাজ করার উপযুক্ত হতে হবে। তাই রান্নাঘর তৈরী করার আগেই কিছু জিনিস পরিকল্পনা করে নিতে হবে।
রান্নাঘরকে সাজিয়ে রাখার সহজ উপায় :
রান্নাঘরে পরিমাণমত জায়গা রাখা
একটি রান্নাঘরের জায়গার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করে। তাই রান্নাঘরের ডেকোরেশন এর ক্ষেত্রে অনেক কিছু মাথায় রাখতে হয়। বিশেষ করে রান্নাঘরের শেপ কেমন হবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রান্নাঘরের আকার কেমন; বড় না ছোট। এসব বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যেমন ধরুন আপনার রান্নাঘরের স্পেস যদি কম হয়ে থাকে তাহলে আপনার রান্নাঘের নকশা সমান্তরালে রাখা ভাল। কিংবা সোজাও রাখতে পারেন। তবে চারকোনা করতে গেলেই রান্নাঘরের স্পেস ভাগ হয়ে যাবে। আর এটি অনেক ছোট ছোট দেখাবে। আর আপনার রান্নাঘর যদি একটু বড় আকারের হয় তাহকে ইংরেজী ‘এল’ এর মত কিংবা ‘ইউ’ এর মত নকশা করে করা যায়৷ এতে করে আপনার রান্নাঘর দেখতে আকর্ষণীয় হবে। এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এরকম একটি রান্নাঘরের জুড়ি নেই।
আরও পড়ুনঃহোটেল স্টাইলে মিক্সড সবজি
পরিকল্পিত বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা রাখা
আধুনিক যুগের রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা থাকা একটি অপরিহার্য বিষয়। আপনি যদি বাড়ির নকশা করার সময়ই রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার কথা না ভেবে রাখেন পরবর্তীতে আপনাকে দারুন ঝামেলা পোহাতে হবে। পর্যাপ্ত আলো, বাতাস, এডজাস্ট ফ্যান, ওভেন, রেফ্রিজারেটর, ইনডাকশন এসব জিনিস আজকাল রান্নাঘরের নিত্য প্রয়োজনীয় সঙ্গী। তাই বুঝতেই পারছেন একটি রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা রাখার গুরুত্ব কতটুকু।
কাজের জায়গা মসৃন রাখা
রান্নাঘরে কাজ করার সময়ে অহেতুক অস্বস্তি বা ঝামেলা এড়াতে কিছু বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। রান্না করার জায়গা, কাটাকাটি করার জায়গা, এসব খুবই মসৃণ থাকতে হবে। মোট কথা রান্নাঘরটি হতে হবে কাজ করার জন্য কম্ফোর্টেবল৷ কোথাও উঁচুনিচু বা অমসৃণ থাকলে কাজ করতে অসুবিধার সৃষ্টি হয়।তাই এই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। এই জিনিসগুলো আসলে একটি বাড়ির পরিকল্পনা করার সময়েই করে নিতে হয়। নয়ত পরবর্তীতে অনেক বেশি ঝামেলার সৃষ্টি হয়৷ একবার বাড়ি তৈরী করা হয়ে গেলে এসব জিনিস পরিবর্তন করা মুশকিল হয়ে যায়। তাই বাড়ি তৈরীর সময়ে রান্নাঘরের এসব জিনিস মাথায় রাখতে হবে।
পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল ব্যবস্থা
আপনার রান্নাঘরটি যদি বদ্ধ বা স্যাতঁসেতে হয় তাহলে এটি মোটেও কাজ করার উপযুক্ত নয়। তাই রান্নাঘর তৈরীর সময়ে আলো বাতাস চলাচল করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখতে হবে। সবথেকে ভাল হয় বড় বড় জানালা রাখলে। চুলা যে স্থানে থাকবে তার সামনে ও পেছনে খোলা জায়গার দরকার আছে।
তাই রান্নাঘর তৈরী সময়ে দুই দিকে দুটি বড় বড় জানলা দেয়া হলে বাতাস চলাচল খুবই সহজ হবে। আর রান্নাঘরটিও হবে খুবই আরামদায়ক। বদ্ধ রান্নাঘর একটি গুমোট পরিবেশ তৈরী করে। ফলে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। এজন্য রান্নাঘর অবশ্যই খোলামেলা রাখতে হবে।
আর জানালা বেশি রাখলে যেকোনো রুমই অনেক বেশি খোলামেলা হয়ে যায়। কাজ করতে কোনো রকম অস্বস্তি অনুভব হয় না। তাই রান্নাঘর খোলামেলা রাখার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
ড্রয়ার বা কেবিনেট রাখা
ড্রয়ার বা কেবিনেট একটি রান্নাঘরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। কারণ কেউ চায় না তার রান্নাঘরের জিনিসগুলো এলোমেলো হয়ে থাকুক, প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো কাজের বেলায় খুঁজে পাওয়া না যাক। একটি এলোমেলো রান্নাঘর আপনার পুরো রুচিকেই নিচে নামিয়ে দিবে এটি কিন্তু মনে রাখবেন।
রান্নাঘরের প্রতিটি জিনিস থাকতে হবে সঠিক জায়গায়। সব দিকে ছড়ানো ছিটানো নয়। কখন কোন জিনিস টা কোথায় পাওয়া যাবে এটাও ভাববার বিষয়৷ তাই ড্রয়ার বা কেবিনেট এর গুরুত্ব বলে বোঝানো সম্ভব না।মুহুর্তের মধ্যে আপনার এলোমেলো রান্নাঘরকে সাজিয়ে দিতে পারে একটি কেবিনেট৷ এতে করে আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস গুলোও সঠিক যায়গায় ও সঠিক সময়ে হাতের নাগালে পাবেন।
আরও পড়ুনঃপ্রতিদিন ঠিকঠাক পানি পান করছেন তো?
কাটাকাটির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখা
রান্না করার সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট হচ্ছে এই কাটাকাটি। এর জন্য অবশ্যই আলাদা জায়গা রাখতে হবে। আর সেই জায়গাটিও হতে হবে পরিকল্পিত। কারন এই কাজগুলো খুবই সেনসিটিভ।
এগুলো করার সময় ঝামেলা ছাড়া করার চেষ্টা করবেন। এজন্য রান্নাঘরে আলাদা করে কাটাকাটি করার জায়গা অবশ্যই রাখবেন। এক্ষেত্রে কোনো রকম কম্প্রোমাইজ না করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। একটি খোলামেলা জায়গা সিলেক্ট করবেন এই কাজ গুলো করার জন্য৷
এতে করে যে কাজ করবে তার জন্য খুবই সহজ হবে রান্নাঘরের কাজকর্ম করা। তাই নিজের কিংবা ঘরের গৃহিণীর কাজের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে আলাদা জায়গার ব্যবস্থা রাখুন। এতে করে আপনার রান্নাঘর একদিকে আরামদায়ক হবে ও অন্যদিকে দেখতেও মনোরম হবে।
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা
রান্নাঘরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা। রান্নাঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে চাইলে অবশ্যই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। একটি স্বাস্থ্যসম্মত রান্নাঘরের প্রধান শর্ত হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। আর এজন্য সিঙ্ক কিংবা বেসিনে পানি নিষ্কাশনের জন্য অবশ্যই একটি ব্যবস্থা রাখতে হবে।
নয়ত পানি জমে রান্নাঘরের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলবে। দেখতে যেমন বাজে লাগবে তেমনি পরিবেশও নষ্ট হবে। তাই আপনার রান্নাঘরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব আপনার। সঠিক ভাবে নিজের রান্নাঘরকে সাজিয়ে পরিষ্কার করে রাখুন। একটি রান্নাঘর তৈরী করার পূর্বেই পানি নিষ্কাশনের বিষয়টি মাথায় রাখুন। নয়ত পরবর্তীতে এসে ঝামেলা পোহাতে হবে।