বিশ্বের সকল বার্সেলোনা সমর্থক উৎকণ্ঠায় ছিলেন গত কয়েক ঘন্টা। দিনের শুরুতেই জানানো হয়েছিল আজ বার্সেলোনায় থাকবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন লিওনেল মেসি। তাদের অপেক্ষা ফুরিয়েছে, কিন্তু তাতে দুশ্চিন্তাটা উল্টো কান্নায় রূপ নিয়েছে। কারণ, এবার আর ইঙ্গিতে নয়, বার্সেলোনাকে সরাসরি মেসি জানিয়ে দিয়েছেন থাকবেন না আর।
গোল ডট কম এক বিশ্লেষণে জানিয়েছে কয়েকটি কারণ রয়েছে এর পেছেন। এর আগে টিওয়াইসি স্পোর্টসের বরাত দিয়ে মেসির বার্সায় না থাকার বিষয়টি জানিয়েছে ফুটবলের বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম গোল ডটকম। এতে বলা হয়, মেসি ফ্যাক্সের মাধ্যমে বার্সা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন ক্লাব ত্যাগ করার বিষয়টি।
ঠিক কী কারণে বার্সা ছাড়তে চাচ্ছেন মেসি? গোল ডট কম জানায়, করোনা মহামারীর কারণে ক্লাব যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তা থেকে কাটিয়ে উঠতে মেসিকে ব্রিক্রি করতে চায় বার্সা। তাছাড়া বার্সার নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যানের ভবিষ্যত পরিকল্পনা মেসির মনে ধরেনি, নিজের ভবিষ্যতেরও ভালো দেখছেন না। বর্তমান দল নিয়েও তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন।
এ ছাড়া আরও একটি বড় কারণ রয়েছে যেটি হলো, বার্সা বোর্ডের সঙ্গে মেসির বনিবনা হচ্ছিল না। এর আগে মেসির কয়েকটি সাক্ষাৎকারেও বিষয়টি উঠে আসে। ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট মারিয়া বার্তোমেউ চাচ্ছেন, বুড়োদের ছেঁটে ফেলে নতুন দল তৈরি করতে, যেখানে মেসিকেও রাখছেন তিনি। বার্সার হয়ে নতুন নতুন রেকর্ড গড়েছেন মেসি। টানা ২০ বছর ধরে আছেন স্পেনের এই ক্লাবটিতে। ১৩ বছর বয়সে আর্জেন্টিনার নিউওয়েলস ওল্ড বয়েস ক্লাব থেকে বিনা ট্রান্সফার ফিতে যোগ দেন ন্যু ক্যাম্পে। ২০০২ সাল থেকে বার্সা যুবদলের হয়ে শুরু করেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।
বলা হচ্ছে, মেসির জন্য বিদায়ী মানপত্রের খসড়া তৈরি করেই রেখেছে বার্সা, যা প্রেসিডেন্ট বার্তোমেউয়ের ড্রয়ের সংরক্ষিত আছে এখন। গত কয়েকদিন স্প্যানিশ গণমাধ্যমে এমনই তথ্য উঠে আসে।
বার্সেলোনা যুবদল থেকে ২০০৩ সালে যোগ দেন অনূর্ধ্ব-১৬ দলে। এরপর একে একে বার্সা অনূর্ধ্ব-১৯, বার্সা সি দল, বার্সা বি দলের হয়ে খেলা সম্পন্ন করে ২০০৫ সালে ১ জুলাই ডাক পান বার্সার মূল দলে। এরপর থেকেই দু’পায়ের জাদুতে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন পুরো বিশ্বকে।
মেসি তার পুরো ক্যারিয়ারে বার্সার হয়ে ৫৯ হাজার ৩১৫ মিনিট মাঠে ছিলেন। তার মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৯ হাজার ১২০ মিনিট খেলেছে লা লিগায়। সর্বনিম্ন ৪২০ মিনিট খেলেছেন উয়েফা সুপার কাপে। পুরো ক্যারিয়ারে হলুদ কার্ড দেখেছেন ৭৫টি। লাল কার্ড দেখেননি একটিও।
ফুটবল বিশ্বের এই মহাতারকা সর্বোচ্চ ৬ বার ফিফার বর্ষসেরেয়া খেলোয়াড় হন। ব্যালন ডি অর জেতেন ৬ বার। চারবার জেতেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ১০ বার স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নের ট্রফি ও ৬ বার স্প্যানিশ কাপ জেতেন এই সুপারস্টার।