আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ বিনোদনজগতে বিচ্ছেদের খবর যেভাবে আলোচিত হয়, টেকসই দাম্পত্যজীবনের খবর সেভাবে হয় না। তা ছাড়া টেকসই দাম্পত্যজীবনের খবর ইদানীং তেমন শোনাও যায় না। এক–দুই দশক বা এর আগে যাঁরা বিয়ে করেছেন, তাঁদের কেউ কেউ এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হতে পেরেছেন। চলচ্চিত্র অঙ্গনে মৌসুমী-ওমর সানির সংসারটি সে রকম আদর্শ এক সংসার।
তারকা দম্পতি মৌসুমী-ওমর সানি বিয়ে করেছিলেন ১৯৯৫ সালের ৪ মার্চ। কাউকে না জানিয়েই হুট করে বিয়েটা করলেও পাঁচ মাস পর ২ আগস্ট আয়োজন করেছিলেন বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। বিয়ের ২৫ বছর পেরিয়েছে। তাঁদের দুই সন্তান ফারদিন ও ফাইজা।
ঢালিউড অভিনেত্রী মৌসুমী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সবকিছুই ম্যানেজ করা যায়, কিন্তু সম্পর্কের ছন্দপতন খুব একটা করা যায় না। সম্পর্ক বেঁচে থাকে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস আর শ্রদ্ধায়। এটাও ঠিক, শুধু দাম্পত্যে নয়, যেকোনো সম্পর্কেই বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা থাকতে হবে। বন্ধুত্বের মধ্যেও তা–ই। বন্ধুকে ভালো না বাসলে, শ্রদ্ধা না করলে বন্ধুত্ব টিকবে না। সংসারজীবনে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের স্যাক্রিফাইসের মানসিকতা থাকতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজনে ভালোবাসল বা বিশ্বাস করল কি না, তা নিয়ে পড়ে না থেকে, যে কারোরই নিজের ভালোবাসা ও বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে, এ রকম ছোটখাটো বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে।’
মৌসুমী আরো বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমার এখনো অবাস্তব মনে হয়। কীভাবে কেটে গেছে এতটা সময়, জানিই না। মনে হয়, এই তো কদিন আগে বিয়ে হয়েছে।’ তাঁদের বিয়ের খবর কেউ জানতেন না। ফারদিনের জন্মের আগমুহূর্তে সবাই জেনে যায় যে মৌসুমী-সানি বিয়ে করে ফেলেছিলেন। মৌসুমী জানান, বিয়ের আগে তাঁদের খুব একটা প্রেম করা হয়নি। তাঁরা প্রেম করেছেন বিয়ের পর। যদিও ভালোবাসার কথা সামনাসামনি বলা হয় না। এখন বলা হয়, ফেসবুকে।
স্বামী ওমর সানি প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, ‘আমার স্বামী অন্যদের মতো নয়। আজ এই মেয়ে দেখলে হাঁ করে পড়ে যায়, কাল ওই মেয়ে দেখলে মাথা ঘুরে পড়ে যায়, এ রকম নয়। শুরুতেও তেমন ছিল না, এখনো নেই। ২৫ বছর ধরে সুখে-শান্তিতে ঘর করার এটাও একটা অন্যতম কারণ। সানির সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হচ্ছে, খুব সহজে মানুষকে ভালোবাসে, বিশ্বাস করে। যত সহজে রাগে, তার চেয়ে দ্রুত রাগ কমে যায়। মানুষকে ক্ষমা করে দেয়। এটা আমার খুব পছন্দ।’
অন্যদিকে দীর্ঘ দাম্পত্যজীবনের রহস্য প্রসঙ্গে ওমর সানী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস প্রবল। একে অন্যকে ছাড় দিই এবং আমাদের ভেতর বোঝাপড়াও অনেক ভালো। আমরা দুজনই আমাদের ছেলে–মেয়ের কথা অনেক বেশি চিন্তা করি।’
ওমর সানি বলেন, ‘মৌসুমীকে ভালোবাসা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারণ, সে ভালোবাসার মতোই একজন মেয়ে। আমার সবচেয়ে ভালো লাগে, তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব।’